Ajker Patrika

আ.লীগ নেতাসহ ২৬ জন আসামি, তিনজন গ্রেপ্তার

কক্সবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ১৭
আ.লীগ নেতাসহ ২৬ জন আসামি, তিনজন গ্রেপ্তার

কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীতে একটি সেচ প্রকল্পের বিরোধ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার মোর্শেদ আলী (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে মামলা হয়েছে। মোর্শেদের ভাই জাহেদ আলী বাদী হয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা আলালসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। এতে আরও অজ্ঞাত ১০ জনকে আসামি করা হয়।

এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন স্থানীয় চেরাংঘর বাজার কমিটির সভাপতি দিদারুল ইসলাম, মামলার অন্যতম অভিযুক্ত মাহমুদুল হকের দুই ভাগনে জাহেদুল ইসলাম ও মো. ইয়াছিন। গত শুক্রবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে পিএমখালীর চেরাংঘর বাজারে ইফতার কিনতে যান মোর্শেদ আলী। এ সময় অভিযুক্তরা মোর্শেদকে রাস্তায় ফেলে লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে পেটায় এবং একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। তাকে প্রকাশ্যে হত্যার করার সময় আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল মোস্তফা উপস্থিত লোকজনদের উদ্দেশ্য বলেন, তাকে মেরে ফেলার জন্য ওপরের নির্দেশ রয়েছে। কেউ কাছে আসবে না।

মোর্শেদকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিওতে শতাধিক মানুষের জটলা দেখা যায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতার এ ঘোষণায় কেউ মোর্শেদ আলীকে রক্ষায় এগিয়ে আসেননি। মোর্শেদ আলী পিএমখালী ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার মৃত ওমর আলীর ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী আমিন উল্লাহ বলেন, মোর্শেদ হামলাকারীদের অনুরোধ করেন তাকে যেন ইফতারের পরে মারা হয়। কিন্তু তারা নির্দয়ভাবে পিটিয়ে তাকে মেরে ফেলে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সেচ প্রকল্পের বিরোধেই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।’

মামলায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মালেককে প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়া ২ নম্বর আসামি মাহমুদুল হক, ৩ নম্বর চেরাংঘর বাজার কমিটির সভাপতি দিদারুল ইসলাম, ৬ নম্বর পিএমখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা। ২৬ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও মামলায় ৮-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল মোস্তফা, আবদুল মালেক, মাহমুদুল হকসস আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।

মামলার বাদী জাহেদ আলী বলেন, সেচ প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণের জন্য আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাঁর ভাইকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছেন।

জাহেদ আলী আরও বলেন, ইফতার কিনতে মোর্শেদ আলী চেরাংঘর বাজারে যান। রোজায় ক্লান্ত মোর্শেদের উপর যখন হামলা শুরু হয়, তখন হামলাকারীদের উদ্দেশে মোর্শেদ বারবার বলছিলেন, সারা দিন রোজায় তিনি খুব ক্লান্ত, মারলে যেন ইফতারের পরে মারেন। কিন্তু তাতেও তাঁদের মন গলেনি। ইফতারের আগমুহূর্তে বর্বরভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় জড়িত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কেউ রক্ষা পাবে না। তাঁদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজদের জায়গা আওয়ামী লীগে নেই।

মুজিবুর বলেন, মোর্শেদের পরিবারও আ.লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অভিযুক্ত দল থেকে বহিষ্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রীকে বিদেশ যেতে বাধা

‘মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে’, চিরকুট লিখে ঠিকাদারের ‘আত্মহত্যা’

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত