Ajker Patrika

আইনজীবী সমিতির পাঁচ ভবন অপসারণের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৪২
আইনজীবী সমিতির পাঁচ ভবন অপসারণের নির্দেশ

চট্টগ্রামের কোর্ট হিলে ৪০ বছরে পাঁচটি ভবন তুলেছে জেলা আইনজীবী সমিতি। আরও দুটি ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে তারা। এ নিয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব দেখা দেয় জেলা প্রশাসনের। এরপরই ২৫টি সরকারি দপ্তর থেকে কোর্ট হিলের (পরীর পাহাড়) অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে চিঠি দেওয়া হয়। এবার আইনজীবী সমিতির পাঁচটি ভবন অপসারণের নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি)। পুলিশের এই বিশেষ শাখা থেকে ভবনগুলো অপসারণ করে খাস জমি অধিগ্রহণেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের কাছে পাঠানো স্পেশাল ব্রাঞ্চের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহিদ হোসেন ভূঞার সই করা এক চিঠিতে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, ২০০৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ব্যাংককে ১ক শ্রেণির গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (কি পয়েন্ট ইন্সটেলশন-কেপিআই) হিসেবে ঘোষণা করে। কেপিআই সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু চট্টগ্রাম জেলার আইনজীবী সমিতি প্রচলিত বিল্ডিং কোড না মেনে, সিডিএ এবং কেপিআইডিসির ছাড়পত্র না নিয়ে কেপিআই প্রতিষ্ঠানের দেয়াল ঘেঁষে অবৈধভাবে সরকারি খাস জমিতে ৫টি বহুতল ঝুঁকিপূর্ণ নির্মাণ করেছে।

এ বিষয়ে গত বছরের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আইনজীবী সমিতির ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা অপসারণে কেপিআই নিরাপত্তা অনুসারে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিবকে চিঠি দেন। এরপর সুরক্ষা বিভাগ থেকে আইনজীবীদের নির্মাণ করা ৫টি ভবন অপসারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মহাপুলিশ পরিদর্শক বরাবর চিঠি দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ আইনজীবী সমিতির ভবনগুলো পর্যালোচনা করে। এরপরই জেলা প্রশাসককে এই চিঠি দেওয়া হয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা ও প্রেক্ষাপটে কেপিআই নিরাপত্তা নীতিমালা ২০১৩ এর ১০.২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি কর্তৃক ১ক শ্রেণির কেপিআই চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়াল ঘেঁষে সরকারি খাস জমিতে অবৈধভাবে নির্মাণ করা ৫টি ভবন কেপিআই নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। যে কারণে তা অপসারণ ও খাস জমি অধিগ্রহণ করার জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয় এতে।

চিঠি পাওয়ায় বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে চিঠি পেয়েছি। শিগগির কেপিআই ডিফেন্স কমিটি কোর্ট হিল এলাকা পরিদর্শন করবে। এরপর কোন কোন জমি অধিগ্রহণ করতে হবে, তা জানাবে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ শুরু করবে।’

এদিকে ভবন অপসারণে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি অবগত নন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ এই বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে পারে। কিন্তু অপসারণের বিষয়ে জেলা প্রশাসককে বলার এখতিয়ার তাদের নেই। আর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অনুমোদন নিয়ে আমরা ভবন নির্মাণ করেছি। এখন কীভাবে অন্যরা ভবনগুলো অপসারণ করবে?’

১৯৭৭ সালের ৩০ ডিসেম্বরের ইজারা দলিলের ভিত্তিতে কোর্ট হিলে আইনজীবী সমিতিকে ১২ দশমিক ৯০ শতক জমি ইজারা দেওয়া হয়। শুরুতে সেখানে ‘আইনজীবী সমিতি ভবন’ নির্মাণ করা হয়। এরপর গত ৪০ বছরে আরও চারটি ভবন নির্মাণের পর কয়েক হাজার আইনজীবীকে চেম্বার বরাদ্দ দেয় আইনজীবী সমিতি। আইনজীবীদের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে গত বছরের সেপ্টেম্বরে আরও দুটি নতুন ভবন নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হয়। তখন আইনজীবী সমিতি সঙ্গে জেলা প্রশাসনের দ্বন্দ্বের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআইপ্রধান

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত