Ajker Patrika

‘নিত্যপণ্যের দাম নাগালের বাইরে, তেল ধরা যায় না’

ইমতিয়াজ আহমেদ, শিবচর (মাদারীপুর)
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২২, ১১: ৪১
‘নিত্যপণ্যের দাম নাগালের বাইরে, তেল ধরা যায় না’

‘নিত্যপণ্যের দাম দিন দিন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। তেল তো ধরাই যায় না। প্রতিদিন যা কামাই করি তা দিয়েই বাজার-সদাই করে খাই। কোনো সঞ্চয় থাকে না।’ ক্ষোভের সঙ্গে এসব কথা বলছিলেন ভ্যানচালক আলমাস মিয়া।

এমন অবস্থা শুধু আলমাস মিয়ার নয়, নিম্ন থেকে মধ্যবিত্ত সবার।

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজ গত সপ্তাহে ৪০ টাকা বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকা পিচ, একটি আঁটি পালংশাক ১৫ থেকে বেড়ে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শসা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা; যা গত সপ্তাহে ৪০ টাকা ছিল। দোকানিরা জানিয়েছেন, শীতের মৌসুম প্রায় শেষ। তাই সব সবজির দাম গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা। চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি, ফার্মের মুরগি ১৬০ টাকায়। এদিকে গরুর মাংস গত সপ্তাহে ছিল ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা। যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬২০ টাকা কেজি।

তবে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ায় বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে লিটার প্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা। ৫ লিটারের একটি বোতল গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৭৯৫ টাকায়। চলতি সপ্তাহে বাজার ভেদে ৮৭০ থেকে ৯০০ টাকা দামেও বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া স্থানীয় বাজারের দোকানগুলোতে সয়াবিন তেলের সংকটও দেখা দিয়েছে। প্রায় দোকানেই বোতলজাত তেলে পর্যাপ্ত নেই বলে জানা গেছে।

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কর্মচারী গিয়াসউদ্দীন মীর বলেন, ‘দ্রব্যের দাম বাড়লেও বেতন বাড়েনি। তিন দিন বাজার করলেই এক হাজার টাকা শেষ। সবজির বাজারও চড়া। এই অবস্থায় সংসার চালানো দায়।’

চায়ের দোকানি মো. বাবু বলেন, ‘এক কেজি পাঙাশ মাছের দাম ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। চাল, ডাল থেকে শুরু করে সবকিছুরই তো দাম বাড়ছে। অথচ ১ কাপ চা ৫ টাকাই বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম বৃদ্ধি পাওয়া রোজগারে আগাচ্ছে না।’

দোকানিরা বলছেন, এক সপ্তাহ ধরে সরবরাহ কোম্পানি থেকে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। বোতলজাত তেলের মজুত শেষের দিকে। কোম্পানি থেকে তেল না পাওয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। তবে খোলা তেল রয়েছে। খোলা তেল ১৮৫ টাকা লিটার বিক্রি করতে হচ্ছে।

শিবচরের উৎরাইল নয়াবাজারের ব্যবসায়ী শের আলম ফকির বলেন, ‘দোকানে বোতলের তেল কমে এসেছে। এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন কোম্পানির লোক (বিক্রয় প্রতিনিধি) আসছেন না।’

তেল, সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। শিঙাড়া বিক্রেতা জাফর হোসেন বলেন, ‘তেলের দাম বেড়েছে। বেড়েছে আটা-ময়দার দামও। আলু-পেঁয়াজ বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। কিন্তু শিঙাড়ার দাম তো বাড়াতে পারছি না। পাঁচ টাকা করে যে শিঙাড়া বিক্রি করতাম, তা এখনো সেই দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এখন লাভ তো দূরে কথা, ব্যবসা টিকিয়ে রাখা দায়।’

শিঙাড়ার দাম বাড়ালে মানুষ খেতে চাইবে না। তাই আকারে ছোট করা ছাড়া কোনো উপায় নেই বলে জানান তিনি।

স্থানীয় বাজারের হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, পরোটা ভাজতে এখন তেল ব্যবহার করছেন না। সবকিছুর যেভাবে দাম বাড়ছে, তেমন তো আয় বাড়ছে না। গরিব মানুষ খুব কষ্টে রয়েছে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায়।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালত উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে তদারকি করছেন। কোনো ব্যবসায়ী যাতে পণ্য মজুত করে অতিরিক্ত দামে বিক্রি না করতে পারেন তা সার্বক্ষণিক নজরে রাখা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোবাইদার নিরাপত্তার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করার নির্দেশ তারেক রহমানের

হেফাজতসহ ধর্ম ব্যবসায়ীরা নারীবিদ্বেষী প্রচারণা চালাচ্ছে: ৬৮ মানবাধিকার সংগঠন

মানিকগঞ্জে সালিসে বিএনপি নেতার নির্দেশে পাঁচ ভাইকে জুতাপেটা

রাখাইনে মানবিক করিডর: জান্তার আপত্তিতে সরকারে দ্বিধা

ভারতের ব্ল্যাকআউট মহড়া, সীমান্তে আটার মজুত বাড়াচ্ছে পাকিস্তান, যুদ্ধ কি লেগে যাচ্ছে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত