Ajker Patrika

নিজেকে নতুন করে চেনানো রনি

লাইছ ত্বোহা, ঢাকা
নিজেকে নতুন করে চেনানো রনি

রনি তালুকদার বাংলাদেশের হয়ে যে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন, সেটি আপনার স্মৃতি থেকে মুছে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এক ম্যাচের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার মনে রাখার মতো কোনো বিষয়ও না। তবে সদ্য শেষ হওয়া বিপিএলে রনি বার্তা দিয়েছেন, ক্যারিয়ারটা তিনি আরও সমৃদ্ধ করতে চান।  

১৩ ইনিংসে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪২৫ রান করে বিপিএল শেষ করেছেন ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত মুখ রনি। তাঁর দল রংপুর রাইডার্স কোয়ালিফায়ারে হেরে বিদায় নিলেও গড় (৩৫.৪১) আর স্ট্রাইক রেট (১২৯.১৭) যথেষ্ট উজ্জ্বল ছিল নিজেকে নতুন করে চেনানো রনি।

২০১৪-১৫ মৌসুম ছিল রনির কাছে সোনায় মোড়ানো। ঘরোয়া ক্রিকেটে ৫০ ওভার ও লাল বলে রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে তখন জাতীয় দলে চলে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু জাতীয় দলে জায়গাটা পোক্ত হয়নি, ঘরোয়া ক্রিকেটেও পারফরম্যান্সের গ্রাফ ওঠা-নামা করেছে। তবে এবার বিপিএলে ২০১৫ সালের রনিকেই যেন দেখা গেল। টুর্নামেন্টে ধারাবাহিক ভালো খেলার গল্প আজকের পত্রিকাকে রনি শোনালেন এভাবে, ‘মানসিকতা বদলেছি। আগে প্রচুর স্ট্রোক খেলতাম, এয়ারে শট বেশি খেলতাম। এবার নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করেছি। না, উইকেটে থাকলে রান করা যায়। ভেবেছি, যখন বাউন্ডারি মারতে পারি, তখন উইকেটে থাকলে রান আসবেই।’

ঘরোয়া লিগে ভালো খেলে ২০১৫ সালের জুলাইয়ে মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তাঁর। তখন বাংলাদেশ দলের কোচ ছিলেন দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশে ফেরা চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ঘরোয়া ক্রিকেটের ৫০ ওভার আর ৪ দিনের ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে তাঁর আন্তর্জাতিক অভিষেক ২০ ওভারের ক্রিকেট দিয়ে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সে ম্যাচে ব্যাটিং বিপর্যয়ে সাতে নেমে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেছিলেন। এরপর বাদ পড়েন আর তাঁকে বাংলাদেশ দলে দেখা যায়নি। আট বছর আগে বাংলাদেশ দলে সুযোগ পাওয়া আর বাদ পড়া নিয়ে গতকাল রনি বললেন, ‘এটা ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনা ছিল। একজন খেলোয়াড় হিসেবে শুধু এটুকুই বলব, আমি টপ অর্ডার ব্যাটার, সবসময়ই টপ অর্ডারে ব্যাটিং করতে চাই।’

তবে তিনি মনে করেন, তখন ২০ ওভারের জায়গায় ৫০ কিংবা লাল বলে সুযোগ পেলে ক্যারিয়ারটা ভিন্নও হতে পারত। ৩২ বছর বয়সী এ টপঅর্ডার ব্যাটার বলেন, ‘টেস্ট-ওয়ানডেতে সুযোগ দিলে অবশ্যই ভালো হতো। তখন খেলাটা খুব জরুরি ছিল। একজন খেলোয়াড় যদি নিজের সেরা সময়ে খেলতে পারে, তখন সেরাটা দিতে পারে।’

পরে জাতীয় দলে আর জায়গা না পাওয়ার পেছনে নিজেকেই দুষছেন রনি, ‘আমারই ব্যর্থতা ছিল। বেশি রান করা উচিত ছিল, আরও ভালো করা উচিত ছিল। জাতীয় দলে যারা খেলছে তাদের চেয়ে ভালো পারফর্ম করলেই তো আমাকে নেবে।’

এসব নিয়ে অবশ্য হতাশ নন রনি। জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন বোনেন এখনো। যে কোচের অধীনে অভিষেক, সেই হাথুরু আবার এসেছেন বাংলাদেশে। আগামী মাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। বিপিএলে দারুণ পারফর্ম করা রনিকে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলে দেখলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর মনেও জ্বলছে আশার আলো, ‘আমার হাতে কিছু নেই, আমার কাজ শুধু পারফর্ম করা। তবে (জাতীয় দলে) খেলার ইচ্ছা তো অবশ্যই আছে।’    

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত