Ajker Patrika

জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসন

সম্পাদকীয়
আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯: ৩৬
জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসন

জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসন ছিলেন ইউরোপীয় ভারততত্ত্ববিদ। তিনি ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজে ভর্তি হয়ে সংস্কৃত ও হিন্দুস্থানি ভাষা শেখেন। তিনি ২৩ বছর বয়সে ভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে ১৮৭৪ সালে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অধীনে সিভিল সার্ভেন্ট পদে যোগ দেন। এই পদে নিযুক্ত হয়েই তিনি ভারতবর্ষের ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন। বিভিন্ন অঞ্চলে চাকরি করার সুবাদে সেই অঞ্চলের ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে তিনি রচনা করেন মূল্যবান সব লেখা। ১৮৭৭ সালে কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক লোককথার সংগ্রহ ও রংপুরের আঞ্চলিক ভাষার গতি-প্রকৃতিবিষয়ক গবেষণা। এরপর ওই পত্রিকায় তাঁর সংগৃহীত মানিকচন্দ্রের গান এবং গোপীচাঁদের গীত ইংরেজি অনুবাদসহ দেবনাগরী লিপিতে প্রকাশিত হয়।

১৮৮১ সালে প্রকাশিত তাঁর মৈথিলী ভাষার ব্যাকরণের নাম, ‘অ্যান ইন্ট্রোডাকশন অব দ্য মাইথিলি ল্যাঙ্গুয়েজ অব নর্থ ইন্ডিয়া’। বিহারে থাকাকালে গ্রিয়ারসন সেখানকার কৃষকদের সঙ্গে মিশে তাঁদের ভাষা ও জীবন সম্পর্কে অবহিত হন।

১৯০৩ সালে গ্রিয়ারসন সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে ইংল্যান্ডে যান এবং সংগৃহীত ভারতীয় ভাষা-সম্পর্কিত তথ্য ও উপাদানের ভিত্তিতে গবেষণা শুরু করেন। এই গবেষণার ফলই তাঁর জীবনের অমর কীর্তি ‘ল্যাঙ্গুয়েস্টিক সার্ভে অব ইন্ডিয়া’ ২০ খণ্ডে এই মহাগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। তাঁর এ অসামান্য গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ সরকার তাঁকে মর্যাদাপূর্ণ ‘অর্ডার অব মেরিট’ উপাধিতে ভূষিত করে। বিশ্বের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।

তাঁর রচিত অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—কাশ্মীরী ভাষা সংক্রান্ত অভিধান, ব্যাকরণ ও প্রবন্ধসংগ্রহ, যেগুলো ১৯১৬-৩২ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া ভারতের বিখ্যাত জার্নাল এবং ইউরোপের বিখ্যাত পত্রিকায় ভারতীয় সাহিত্য, সংস্কৃতি, অশোক লিপি, রাজগৃহের বুদ্ধমূর্তি ও লিপিমালা বিষয়ে প্রচুর গবেষণা-প্রবন্ধ প্রকাশিত হয় তাঁর।

ভারততত্ত্ববিদ এ মানুষটি ১৮৫১ সালের ৭ জানুয়ারি আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে জন্মগ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত