Ajker Patrika

৭০০ বিঘার ধান যমুনার পানির নিচে

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ৪০
৭০০ বিঘার ধান যমুনার পানির নিচে

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (গত শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) যমুনা নদীর পানি ৫২ সেন্টিমিটার বেড়েছে। এ কারণে যমুনা নদীর তীরবর্তী অঞ্চল এনায়েতপুর ও চৌহালীতে ভাঙন বেড়েই চলছে। চলতি মাসে এনায়েতপুর ও চৌহালীতে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি যমুনা নদীতে বিলীন হয়েছে। অনেকেই ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। এদিকে ভাঙন রোধে ফেলা হচ্ছে বালুভর্তি বস্তা।

এদিকে পানি বাড়ায় তলিয়ে যাচ্ছে তীরবর্তী নিচু জমির ফসল। কয়েক দিন ধরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনাসহ করতোয়া, বড়াল ও হুড়াসাগর নদ-নদীর পানি বাড়ছে। ফলে নদ-নদীর তীরবর্তী প্রায় সাড়ে ৭০০ বিঘা নিচু জমির বোরো ধান ডুবে গেছে।

হঠাৎ যমুনায় পানি বাড়ায় জেলার নদীবেষ্টিত কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার প্রায় সাড়ে ৭০০ বিঘা বোরো ধান ডুবে গেছে। এতে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সে হিসাব জানা যায়নি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আ জ ম আহসান শহিদ সরকার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুড়ী ইউনিয়নের হাটপাচিল পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার নদীতীর সংরক্ষণকাজের জন্য সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কাজও শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সিরাজগঞ্জ জেলা যমুনা নদীবেষ্টিত। জেলার কাজীপুর, সদর, শাহজাদপুর, বেলকুচি, চৌহালী উপজেলা যমুনার তীরে অবস্থিত। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এই ৫টি উপজেলায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। ভাঙন রোধে সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্ট ও চারটি ক্রস বাঁধ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এরপরও ভাঙন থেকে রক্ষা পাচ্ছে না সিরাজগঞ্জের মানুষ।

এনায়েতপুর থানার জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ বলেন, এনায়েতপুরকে ভাঙন থেকে রক্ষা করতে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি পয়েন্টে কাজ শুরু হয়েছে। বর্ষা শুরুর আগেই এই দুটি পয়েন্টে কাজ শুরু করতে না পারলে ভাঙনে নিঃস্ব হবে এলাকার মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল জামান কামরুল বলেন, পানি বৃদ্ধির ফলে এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রাম, আরকান্দি ও জালালপুরে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। ভাঙনে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুর স্পার বাঁধ থেকে উজানের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুড়ী ইউনিয়নের পাচিল পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। বালুর বস্তা দিয়ে নদীতীর ঢেকে দেওয়া হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্ট এলাকায় বিপৎসীমা ধরা হয় ১৩ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার। গত শুক্রবার সকাল ৬টায় পানি ছিল ৯ দশমিক ৭৮ সেন্টিমিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে গতকাল শনিবার সকাল ৬টায় ১০ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার পানি রেকর্ড করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত