Ajker Patrika

শিশুর কিডনির রোগ

ডা. অদিতি সরকার
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২২, ১১: ১৩
শিশুর কিডনির রোগ

কিডনি একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা দেহের ক্ষতিকর দূষিত পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের জনসংখ্যার ১০ শতাংশ মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত। শিশুরাও কিডনি সমস্যায় ভোগে। শিশুদের কিডনি রোগের চিকিৎসা প্রাপ্তবয়স্কদের চেয়ে একেবারেই আলাদা। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, আমাদের দেশে হাসপাতালে আসা শিশুদের প্রতি ২০ জনের মধ্যে ১ জন কিডনি রোগে আক্রান্ত। 

লক্ষণ
জন্মগত কিডনি রোগ
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জন্মগত কিডনি রোগ শিশু মায়ের গর্ভে থাকাকালীন আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষার মাধ্য়মে নির্ণয় করা যায়। জন্মগত কিডনি রোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে আছ—

  • কিডনি বা প্রস্রাবের নালি ফুলে যাওয়া
  • একটি বা উভয় কিডনিতে এক বা একাধিক সিস্ট থাকা। 
  • মায়ের গর্ভে পানি কম বা বেশি হওয়া। 
  • নবজাতক ও শিশুদের ঘন ঘন প্রস্রাব করা এবং ফোঁটায় ফোঁটায় প্রস্রাব করা। 
  • ছেলেদের প্রস্রাব দূরে না যাওয়া। প্রস্রাব করা শেষ হওয়ার পরও ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব হওয়া। 
  • পেটের নিচের অংশে ফোলা বা কোনো চাকা অনুভূত হওয়া এবং ঘন ঘন 
    জ্বর হওয়া। 

জন্ম-পরবর্তী কিডনি রোগ

  • প্রস্রাব করার সময় ব্যথা হওয়া, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া বা ফেনা ফেনা প্রস্রাব হওয়া। 
  • সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মুখ ফুলে যাওয়া, পা ফুলে যাওয়া, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া বা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লাল চাকা চাকা দাগ হওয়া। 
  • কিছু ওষুধ আছে, যেগুলো খেলে পরবর্তীকালে কিডনির সমস্যা হতে পারে। 
  • হিমোলাইটিক ইউরেমিক সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুরা কিডনি রোগে আক্রান্ত হতে পারে। 
  • শিশুদের ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি কিডনি ফেইলিউরের কারণ
  • বারবার মূত্রনালির সংক্রমণ বা দীর্ঘদিন মূত্রনালিতে বাধার ফলে প্রস্রাব পরিষ্কার না হলে। 
  • প্রস্রাবে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি প্রোটিন থাকলে। 
  • আগে অ্যাকিউট কিডনি ফেইলিউর হলে এবং তা সঠিক নিয়মে ফলোআপ না করালে। 
  •  জিনগত কিডনি রোগ থাকলে।
     
    রোগ নির্ণয়
    শিশুদের কিডনি রোগ শনাক্ত এবং যথাযথ চিকিৎসার জন্য একজন দক্ষ শিশু কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ বা পেডিয়াট্রিক নেফ্রোলজিস্টের নির্দেশনা অনুযায়ী রক্ত, প্রস্রাব এবং আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষার মাধ্য়মে কিডনি রোগ নির্ণয় করা সম্ভব।
    চিকিৎসা
    কিডনি রোগের চিকিৎসা নির্ভর করে তা কোন পর্যায়ে আছে বা কোন কারণে হয়েছে। জন্মগত কিডনি রোগের চিকিৎসায় কিছু ক্ষেত্রে অপারেশন প্রয়োজন হয়। তবে এদের মধ্য়ে বেশির ভাগ শিশুই বারবার প্রস্রাবের সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকে। তাই তাদের ক্ষেত্রে লম্বা সময় ধরে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেতে হয়। ক্রনিক কিডনি ফেইলিউর প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে ওষুধের সাহায্য়ে এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন করে বেশ উপকার পাওয়া যায়। তবে শেষ পর্যায়ে ধরা পড়লে ডায়ালাইসিস ও কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের প্রয়োজন হয়। 

   প্রতিকার

  • শিশুকে পরিমিত পানি খাওয়ান। বিশেষ করে জ্বর বা ডায়রিয়া হলে। 
  • শিশুর নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস তৈরি করুন। 
  • শিশুর যদি কোনো কিডনি রোগ থাকে বা বংশে কারও কিডনি রোগ থাকলে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। 
  • শিশুর খাদ্যতালিকায় প্যাকেটজাত খাবার ও পানীয় নিয়ন্ত্রণ করুন। 

লেখক: রেসিডেন্ট চিকিৎসক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

পিরোজপুরে ২০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও সমিতির পরিচালক, সদস্যদের বিক্ষোভ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত