Ajker Patrika

চাল কিনতে ভোরেই সারিতে

নড়িয়া (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২২, ১১: ২৯
চাল কিনতে ভোরেই সারিতে

কয়েক দিন ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়তি। এতে সাধারণ মানুষ চাল, ডাল, আট, সবজি ও তেল কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাই নিম্ন আয়ের মানুষ স্বল্প আয়ে সংসার চালাতে চাল ও আটা কেনার জন্য খাদ্য অধিদপ্তরের পরিচালিত ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) ভরসা। শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় অনেকে ওএমএসের বিক্রীত পণ্য পেতে ভোর ছয়টা থেকে দোকানের সামনে এসে অপেক্ষা করছেন। দীর্ঘ সময় সারিতে দাঁড়িয়েও ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে।

ডিলারদের দাবি, ওএমএসের বিক্রীত পণ্যের চাহিদা বাড়তি। কিন্তু সরকারের বরাদ্দ কমা থাকায় চাল, আটা ছাড়াই অনেকে ফিরে যেতে হচ্ছে।

গতকাল রোববার নড়িয়া পৌরসভার বাংলাবাজার, গোডাউন মোড় ও বাড়ৈইপাড়া—তিনটি বিক্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে কেন্দ্রগুলোর সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সারিতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। বাড়ৈইপাড়ায় ওএমএসের চাল কিনতে আসা তোতা মিয়ার বলেন, ‘বাজারে চালের দাম অনেক বাড়তি। যা রোজগার করি, তা দিয়ে বাজার থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। তাই স্বল্পমূল্যে চাল, আটা কিনতে কিছু টাকা সাশ্রয় করতে ভুমখারা ইউনিয়ন থেকে ৭ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে সকাল ৬টা থেকে বিক্রয়কেন্দ্রের সামনে সারিতে দাঁড়িয়েছি। ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করে ৫ কেজি চাল কিনতে পেরেছি। এতে ১২৫ টাকা সাশ্রয় হয়েছে।’

সুফিয়া বেগম নামের একজন বয়স্ক নারী বলেন, ‘ছেলেরা পরের জমিতে কাজ করে যে টাকা আয় করে, তা দিয়ে তাঁদের সংসার চালে কোনো মতে। তাই যখন যে ছেলের সংসারে খাই, তখন সেই ছেলের জন্য স্বল্প দামে চাল, আটা কিনতে আসি। এখান থেকে চাল, আটা কিনতে পারলে সংসারের জন্য ভালো। এটা আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য অনেক।’

ওএমএসের চাল তিনি প্রতি সপ্তাহে বিক্রয়কেন্দ্র আসেন। তবে বরাদ্দ কম থাকায় দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়েও চাল না কিনতে পেরে হতাশ হয়েই ফিরতে হয় বলে জানান তিনি।

এদিকে ক্রেতার চাপ বেশি থাকায় চাল-আটার চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন ডিলাররা।

ওএমএসের ডিলার বাদল খলিফা বলেন, ‘আগে মানুষ এসব পণ্য এত বেশি কিনতেন না। কিন্তু করোনা শুরুর পর থেকে বিক্রি ব্যাপক হারে বেড়েছে। বিক্রির তুলনায় বরাদ্দ না কম থাকায় ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে সমস্যা হচ্ছে। অনেকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। বরাদ্দ না পাওয়ায় প্রতিদিন পণ্য বিক্রি করতে পারছেন না অনেক ডিলার।’

ডিলারদের দাবি, বর্তমানে একজন ডিলার দিনে সর্বোচ্চ এক মেট্রিক টন চাল ও এক মেট্রিক টন আটা বরাদ্দ পান। যা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ফলে দুপুরের মধ্যে শেষ হয়ে যায় বিক্রি। অথচ আগে বিকেল পর্যন্ত বিক্রি করতে হতো।

জেলা খাদ্য কর্মকর্তা নুরুল হক (নড়িয়া উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্বে) বলেন, ‘ওএমএসের চাল ও আটার অনেক চাহিদা রয়েছে। আঞ্চলিক খাদ্য অফিসে বরাদ্দ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনেকবার বলা হয়েছে। তবে এখনো বাড়তি বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। পেলে বরাদ্দ বাড়িয়ে দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত