Ajker Patrika

নওগাঁয় প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস

নওগাঁ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ২৬
নওগাঁয় প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস

সকাল থেকেই ঠা ঠা রোদে শুরু হচ্ছে দিন। চারপাশে সূর্য উত্তাপ ছড়াচ্ছে। কাজের কারণে সারা দিনের জন্য যাঁদের বাইরে থাকতে হচ্ছে, তাঁদের অবস্থা নাজেহাল। ১৫ দিন ধরে নওগাঁর চিত্র এমনটাই। তবে এর মধ্যে হঠাৎ এক দিনের বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও আবারও তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রখর রোদ আর ভ্যাপসা গরমে স্বস্তি মিলছে না।

আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘ কয়েক বছরের মধ্যে এবারই তাঁরা এমন আবহাওয়া দেখছেন। আরও কয়েক দিন এমন আবহাওয়া অব্যাহত থাকার পর বৃষ্টি নামতে পারে বলে ধারণা তাঁদের। সকালের দিকে তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে।

জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকালের দিকে মানুষ কিছুটা স্বস্তিতে থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রখর রোদে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছে। একটু প্রশান্তির আশায় মানুষ গাছের ছায়ায় কিংবা শীতল কোনো স্থানে বসে আছেন। গরমের কারণে ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যে আবার মাঝেমধ্যেই বেশ কিছু এলাকায় বন্ধ হচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। ফলে অস্থির হয়ে উঠছে মানুষ। আর রোদের কারণে রাস্তায় বের হলে গায়ে লাগছে আগুনের তাপ। তারপরও কষ্ট করে ঈদের কেনাকাটাসহ প্রয়োজনীয় কাজ করতে বাইরে বের হচ্ছে মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, কয়েক দিন ধরে সারা দিন রোদের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। দিনভর রোদের প্রভাবে রাতেও বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। বৃষ্টির জন্য হাহাকার করছে মানুষ। ভ্যাপসা গরমে স্বস্তি মিলছে না কোথাও। খেটে খাওয়া মানুষ বিপাকে পড়েছেন।

শহরের রিকশাচালক রেজাউল করিম বলেন, রোজা রেখে এত গরমে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয় তাঁর। মাঝেমধ্যে গাছের নিচে একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার গাড়ি চালাতে হয় তাঁকে। সামনে ঈদ আর অনেক খরচ, তাই বসেও থাকতে পারেন না তিনি।

উকিলপাড়া এলাকার চা-দোকানি মানিক হোসেন বলেন, এই কয়েক দিনের গরমে অবস্থা খুব খারাপ। একে তো রোজার মাস, তার ওপর আবার গরম। তাই দিনে বেচাকেনা খুব কম। সন্ধ্যার দিকে একটু বেচাকেনা হয়।

উকিল পাড়ার বাসিন্দা শহিদ হোসেন বলেন, রোজার মধ্যে এই গরমে খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না অনেকে। রিকশাচালক, দিনমজুর, শ্রমিক ও কৃষকদের কাজ করতে হচ্ছে তীব্র খরতাপের মধ্যেই।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলেও এটিকে মৃদু দাবদাহ বলা হয়। আর ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ভেতর থাকলে তাকে মাঝারি দাবদাহ ধরা হয়। এ ছাড়া ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে ধরা হয় তীব্র দাবদাহ। সে অনুযায়ী চলতি বছরে নওগাঁয় ২৫ এপ্রিল সর্বোচ্চ মৃদু দাবদাহ রেকর্ড করা হয়। এরপর থেকে তাপমাত্রা ওঠানামার মধ্যেই। তবে গরম কমেনি।

বদলগাছী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় গতকাল বুধবার ভোর ৬টার দিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৪ দশমিক ৫, সোমবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেটি এ বছরের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এ ছাড়া গত রোববার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৫ এবং শনিবার সর্বোচ্চ ছিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এ বিষয়ে বদলগাছী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মো. হামিদুল হক বলেন, বৃষ্টির পর দুই দিন তাপমাত্রা কিছুটা কম ছিল। তারপর আবারও তাপমাত্রা বেড়েছে। তিন-চার দিনের মধ্যে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমার লক্ষণ নেই। তিনি আরও বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছরের এপ্রিল মাসে গরমের প্রভাব কিছুটা বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত