Ajker Patrika

বেতন দিতে চান মালিক ‘বাধা’ জনপ্রতিনিধির

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২২, ০৯: ২২
বেতন দিতে চান মালিক ‘বাধা’ জনপ্রতিনিধির

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানা এলাকার একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন প্রায় দেড় মাস আটকে আছে। বেতন পরিশোধ না করেই কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কারখানার যন্ত্রপাতিসহ সব মালপত্র বিক্রি করে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নেয় মালিকপক্ষ। তবে বেতন না দিতে মালিকপক্ষকে প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মোন্তাজের বিরুদ্ধে।

এদিকে বেতনের আশায় গত রোববার থেকে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়েছেন শ্রমিকেরা। এই অবস্থা চলছে আশুলিয়ার মোজারমিল এলাকার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত চন্দ্রপুরী অ্যাপারেলস লিমিটেড নামক পোশাক কারখানায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাঁচ-ছয় মাস আগে এই এলাকায় স্থানীয় তাহেরের কাছ থেকে একটি টিনশেড ফ্লোর ভাড়া নেন মিজানসহ আরও তিনজন। পরে সেখানে তাঁরা ৬০ জনের মতো শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে কারখানা চালু করেন। তবে হুট করে শ্রমিকদের বেতন না দিয়েই কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। ১ এপ্রিল থেকে কারখানার জন্য ভাড়া নেওয়া ফ্লোরটিও ছেড়ে দিয়েছে তারা।

পরে গত রোববার বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার অন্যতম মালিক মিজানকে অবরুদ্ধ করেন শ্রমিকেরা। পরে তিনি কারখানার যন্ত্রপাতিসহ সব জিনিস বিক্রি করে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দেন। এ সময় যন্ত্রপাতির ক্রেতারাও উপস্থিত ছিলেন। এরই মধ্যে রোববার কারখানা ঘুরে যান কাউন্সিলর মো. মোন্তাজ। রোববার রাতে যন্ত্রপাতির ক্রেতারা টাকা গুছিয়ে না উঠতে পারায় সিদ্ধান্ত হয় সোমবার সকাল ১০টায় বেতন পরিশোধ করা হবে।

বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি অরবিন্দু ব্যাপারী বিন্দু বলেন, ‘সোমবার সকালে বেতন দেওয়ার কথা মেনে নিয়ে শ্রমিকেরা বাসায় ফিরে যান। কিন্তু ওইদিন সকালে মালিক মিজান উপস্থিত না হওয়ায় শ্রমিকেরা হতাশ হয়ে পড়েন। পরে আমরা জানতে পারি, মোন্তাজ কাউন্সিলর মালিক মিজানকে মেশিন বিক্রিতে নিরুৎসাহিত করছেন। জমির মালিক তাহের নিজেও মিজানকে আনার চেষ্টা করে কাউন্সিলরের কাছ থেকে আনতে পারেননি।’

রোববার দুপুরে মালিক মিজান বলেন, ‘আমি শ্রমিকদের সব পাওনা পরিশোধ করতে চাই। এ জন্য যদি সব মেশিন বা মালামাল বিক্রি করতে হয়, প্রয়োজনে তা-ও করব।’ এ সময় শ্রমিকদের উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘তোমরা সব বেইচা দাও। আমারেও বেইচা দাও। বেইচা তোমাদের পাওনা তোমরা বুইঝা নাও।’

তবে সোমবার সকাল থেকে কারখানার আশপাশে তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। দুপুরের পর থেকে তাঁর মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে কাউন্সিলর মোন্তাজ বলেন, ‘মিজানকে আটকায় রেখে আমার লাভ কী? আমি তাঁদের (শ্রমিক) বলছি তো টাকা দেওয়া হবে। তাঁরা এত পাগল ক্যা? অন্যান্য ফ্যাক্টরি তো দুই মাস পরে বেতন দেয়, তাতে কী হইছে? মালিক একটু দুর্বল দেইখা ওর সমস্যা, নাকি?’

এ বিষয়ে কারখানাটির জমির মালিক তাহের বলেন, ‘গত মাসে গার্মেন্টসের লোকজন ফ্লোর ছেড়ে দিছে। ১ তারিখ চলে যাওয়ার কথা। আমি নতুন পার্টিকে ফ্লোর ভাড়া দিয়েছি। তারা এখানে ফ্রিজের গোডাউন করবে। আজকে মাসের ১১ তারিখ হলেও এখনো তারা যেতে পারেনি। এদিকে আমার নতুন পার্টি তাদের মালামাল নিয়ে হাজির হয়েছে।’

এ বিষয়ে শিল্প পুলিশ-১-এর (আশুলিয়া) পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে সেখানে পুলিশ ফোর্স রাখা আছে। তবে কোনো পক্ষই আমার কাছে আসেনি বা অভিযোগ করেনি। তারা চাইলে আইনি পথেও এগোতে পারে, চাইলে মীমাংসায়ও বসতে পারে। আমার কাছে সমাধান চাইলে আমি অবশ্যই সহায়তা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রশ্নে যে প্রতিক্রিয়া জানাল যুক্তরাষ্ট্র

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত