অয়ন রায় অংকন
‘দুর্গে দুর্গে দুর্গতিনাশিনী’, ‘শিশিরে শিশিরে শারদ আকাশে’, ‘বাজল তোমার আলোর বেণু’, ‘জাগো দুর্গা দশপ্রহরণধারিণী’—গানগুলো হয়তো অনেকের জানা। এ ছাড়া আছে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের ‘আশ্বিনের শারদপ্রাতে, বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জীর’। এসব শ্রুতিমধুর গান বা মন্ত্রের কথা বলার কারণ কী, সেটা সবাই এতক্ষণে বুঝে গেছেন। কারণ, বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ শুরু হয়ে গেছে। মা দুর্গা মর্ত্যলোকে এসেছেন। দেবী দুর্গার বোধন তথা সেই মহালয়া যে আজ।
কী এই মহালয়া, তা নিয়ে অবশ্য ‘নানা মুনির নানা মত’। পুরাণ ও শাস্ত্রের বেশ কিছু তথ্য এবং ব্যাসদেব রচিত মহাভারতে দিনটিকে পিতৃপক্ষের সমাপ্তি এবং দেবীপক্ষের সূচনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। শ্রীশ্রী চণ্ডীতে ‘মহালয়’ হচ্ছে পুজো বা উৎসবের আলয়। এখানে আলয় শব্দটির অর্থ আশ্রয়। চণ্ডীতে তাই মহালয়া বলতে পিতৃলোককে স্মরণের ক্ষণকেই বলা হয়েছে।
পুরাণে বলা আছে, মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করার দায়িত্ব পান। ব্রহ্মার বরপ্রাপ্ত কোনো মানুষ বা দেবতার পক্ষে মহিষাসুরকে বধ করা সম্ভব ছিল না। ফলত অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর তার ক্ষমতার দম্ভে মত্ত হয়ে ওঠে। একে একে দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়ন করে। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব তখন বাধ্য হয়ে মিলিতভাবে মহামায়ার রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন। দেবতাদের দান করা ১০টি অস্ত্রে সিংহবাহিনী দেবী দুর্গা সুসজ্জিত হয়ে ওঠেন। শুম্ভ, নিশুম্ভ, মধু, কৈটভ, রক্তবীজ—একে একে অসুর বধ করলেন। সবশেষ সেই মহিষাসুর বধ হয়েছে মা দুর্গার হাতেই। মহিষাসুর নিজে যেমন চেয়েছিল মা দুর্গার হাতে বধ হতে, তেমনি এটা তার জানাও ছিল। মহালয়া হচ্ছে সেই দিন, যেদিন দশভুজা দুর্গা দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করতে মর্ত্যলোকে এসেছেন বলে বিশ্বাস।
এ ছাড়া একাধিক পুরাণ ও অন্যান্য হিন্দুধর্মগ্রন্থেও রামের অকালবোধনের কথা বলা হয়েছে। রাম-রাবণের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে যখন একে একে লঙ্কার বড় বড় বীর ধরাশায়ী, তখন মা দুর্গার স্তব করলেন রাবণ। দুর্গা কালীরূপে রাবণকে অভয় দিলেন। মা কালীর কোলে আশ্রিত রাবণ যুদ্ধে অপরাজেয় হয়ে উঠতে লাগলেন। এই পরিস্থিতিতে দুর্গাকে তুষ্ট করতে অকালেই (বসন্তকালের বদলে শরৎকালে) তাঁর পুজো করতে মনস্থ করলেন রাম। ত্রেতা যুগে রামচন্দ্র অকালে ১০৮টি নীলপদ্ম দিয়ে দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন। রামচন্দ্র অকালে দেবী দুর্গার বোধন করে যে পূজা করেছিলেন, বর্তমানে আমরা সেটাই অনুসরণ করছি। রামচন্দ্র শরৎকালে যে দুর্গাপূজা করেন, সেটাই অকালবোধন।
এমনটিও বলা হয় যে পিতৃপক্ষ শেষে অন্ধকার অমাবস্যার সীমানা ডিঙিয়ে আমরা যখন আলোকময় দেবীপক্ষের আগমন প্রত্যক্ষ করি, তখনই সেই মহালগ্নটি আমাদের জীবনে ‘মহালয়ার’ বার্তা নিয়ে আসে। এ ক্ষেত্রে স্বয়ং দেবীই হচ্ছেন সেই মহান আশ্রয়, তাই উত্তরণের লগ্নটির নাম মহালয়া। বিশেষ পূজা আর মন্দিরে মন্দিরে শঙ্খের ধ্বনি ও চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবীকে আহ্বান করা হয়। বাঙালি হিন্দুধর্মাবলম্বীরা ভোরে উঠে শোনেন বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের সেই সুমধুর চণ্ডীপাঠ। অনেকে আবার টেলিভিশনে দেখেন মহালয়া উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান। আর মহালয়া মানে যে দুর্গাপূজার ক্ষণগণনা শুরু, সেটা তো অনেকের জানা। ঢাকে সেই কাঠি বাজার অপেক্ষা।
ছয় দিন পর শুরু মহাসপ্তমী। বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় শারদীয় দুর্গোৎসব। তারপর আবার সেই এক বছরের ক্ষণগণনা শুরু। ‘আসছে বছর আবার হবে’, ‘বলো দুর্গা মাই কি, জয়’—এই কথাগুলো প্রতিমা বিসর্জনের সময় বলতে থাকেন বাঙালি হিন্দুধর্মাবলম্বীরা। দেবী দুর্গার আগমন ও গমন সাধারণত নির্ভর করে সপ্তমী ও দশমী তিথি কবে পড়েছে, তার ওপর। শাস্ত্রমতে, এবার দুর্গা আসছেন দোলায় তথা পালকিতে। মা দুর্গা ফিরবেন গজে; মানে হাতির পিঠে চড়ে।
মহালয়ার আগেই শুরু হয়ে যায় প্রতিমা বানানোর কাজ। দুর্গাপূজার সময় যত এগিয়ে আসে, মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন প্রতিমায় তুলির শেষ আঁচড় দিতে। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে কাজের ধুম পড়ে যায়। যদিও ছোটবেলার সেই পুজোর সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা চলে না। আরও স্পষ্ট করে বললে ইন্টারনেট আসার আগের যুগ। তখন রেডিও, ক্যাসেটে বাজত ‘আয় রে ছুটে আয়, পুজোর গন্ধ এসেছে’। গানটা শুনলেই পুজো পুজো ভাব চলে আসত। শহুরে যান্ত্রিকতার প্রভাব এতই বেশি যে এখন আর শরতের কাশফুল দেখার আনন্দও তেমন একটা উদ্বেলিত করে না। তবু সব ছাপিয়ে ২০২৪ শারদীয় দুর্গোৎসব সবার ভালো কাটুক। শুভ শারদীয়।
‘দুর্গে দুর্গে দুর্গতিনাশিনী’, ‘শিশিরে শিশিরে শারদ আকাশে’, ‘বাজল তোমার আলোর বেণু’, ‘জাগো দুর্গা দশপ্রহরণধারিণী’—গানগুলো হয়তো অনেকের জানা। এ ছাড়া আছে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের ‘আশ্বিনের শারদপ্রাতে, বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জীর’। এসব শ্রুতিমধুর গান বা মন্ত্রের কথা বলার কারণ কী, সেটা সবাই এতক্ষণে বুঝে গেছেন। কারণ, বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ শুরু হয়ে গেছে। মা দুর্গা মর্ত্যলোকে এসেছেন। দেবী দুর্গার বোধন তথা সেই মহালয়া যে আজ।
কী এই মহালয়া, তা নিয়ে অবশ্য ‘নানা মুনির নানা মত’। পুরাণ ও শাস্ত্রের বেশ কিছু তথ্য এবং ব্যাসদেব রচিত মহাভারতে দিনটিকে পিতৃপক্ষের সমাপ্তি এবং দেবীপক্ষের সূচনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। শ্রীশ্রী চণ্ডীতে ‘মহালয়’ হচ্ছে পুজো বা উৎসবের আলয়। এখানে আলয় শব্দটির অর্থ আশ্রয়। চণ্ডীতে তাই মহালয়া বলতে পিতৃলোককে স্মরণের ক্ষণকেই বলা হয়েছে।
পুরাণে বলা আছে, মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করার দায়িত্ব পান। ব্রহ্মার বরপ্রাপ্ত কোনো মানুষ বা দেবতার পক্ষে মহিষাসুরকে বধ করা সম্ভব ছিল না। ফলত অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর তার ক্ষমতার দম্ভে মত্ত হয়ে ওঠে। একে একে দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়ন করে। ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব তখন বাধ্য হয়ে মিলিতভাবে মহামায়ার রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন। দেবতাদের দান করা ১০টি অস্ত্রে সিংহবাহিনী দেবী দুর্গা সুসজ্জিত হয়ে ওঠেন। শুম্ভ, নিশুম্ভ, মধু, কৈটভ, রক্তবীজ—একে একে অসুর বধ করলেন। সবশেষ সেই মহিষাসুর বধ হয়েছে মা দুর্গার হাতেই। মহিষাসুর নিজে যেমন চেয়েছিল মা দুর্গার হাতে বধ হতে, তেমনি এটা তার জানাও ছিল। মহালয়া হচ্ছে সেই দিন, যেদিন দশভুজা দুর্গা দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করতে মর্ত্যলোকে এসেছেন বলে বিশ্বাস।
এ ছাড়া একাধিক পুরাণ ও অন্যান্য হিন্দুধর্মগ্রন্থেও রামের অকালবোধনের কথা বলা হয়েছে। রাম-রাবণের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে যখন একে একে লঙ্কার বড় বড় বীর ধরাশায়ী, তখন মা দুর্গার স্তব করলেন রাবণ। দুর্গা কালীরূপে রাবণকে অভয় দিলেন। মা কালীর কোলে আশ্রিত রাবণ যুদ্ধে অপরাজেয় হয়ে উঠতে লাগলেন। এই পরিস্থিতিতে দুর্গাকে তুষ্ট করতে অকালেই (বসন্তকালের বদলে শরৎকালে) তাঁর পুজো করতে মনস্থ করলেন রাম। ত্রেতা যুগে রামচন্দ্র অকালে ১০৮টি নীলপদ্ম দিয়ে দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন। রামচন্দ্র অকালে দেবী দুর্গার বোধন করে যে পূজা করেছিলেন, বর্তমানে আমরা সেটাই অনুসরণ করছি। রামচন্দ্র শরৎকালে যে দুর্গাপূজা করেন, সেটাই অকালবোধন।
এমনটিও বলা হয় যে পিতৃপক্ষ শেষে অন্ধকার অমাবস্যার সীমানা ডিঙিয়ে আমরা যখন আলোকময় দেবীপক্ষের আগমন প্রত্যক্ষ করি, তখনই সেই মহালগ্নটি আমাদের জীবনে ‘মহালয়ার’ বার্তা নিয়ে আসে। এ ক্ষেত্রে স্বয়ং দেবীই হচ্ছেন সেই মহান আশ্রয়, তাই উত্তরণের লগ্নটির নাম মহালয়া। বিশেষ পূজা আর মন্দিরে মন্দিরে শঙ্খের ধ্বনি ও চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবীকে আহ্বান করা হয়। বাঙালি হিন্দুধর্মাবলম্বীরা ভোরে উঠে শোনেন বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের সেই সুমধুর চণ্ডীপাঠ। অনেকে আবার টেলিভিশনে দেখেন মহালয়া উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান। আর মহালয়া মানে যে দুর্গাপূজার ক্ষণগণনা শুরু, সেটা তো অনেকের জানা। ঢাকে সেই কাঠি বাজার অপেক্ষা।
ছয় দিন পর শুরু মহাসপ্তমী। বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় শারদীয় দুর্গোৎসব। তারপর আবার সেই এক বছরের ক্ষণগণনা শুরু। ‘আসছে বছর আবার হবে’, ‘বলো দুর্গা মাই কি, জয়’—এই কথাগুলো প্রতিমা বিসর্জনের সময় বলতে থাকেন বাঙালি হিন্দুধর্মাবলম্বীরা। দেবী দুর্গার আগমন ও গমন সাধারণত নির্ভর করে সপ্তমী ও দশমী তিথি কবে পড়েছে, তার ওপর। শাস্ত্রমতে, এবার দুর্গা আসছেন দোলায় তথা পালকিতে। মা দুর্গা ফিরবেন গজে; মানে হাতির পিঠে চড়ে।
মহালয়ার আগেই শুরু হয়ে যায় প্রতিমা বানানোর কাজ। দুর্গাপূজার সময় যত এগিয়ে আসে, মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন প্রতিমায় তুলির শেষ আঁচড় দিতে। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে কাজের ধুম পড়ে যায়। যদিও ছোটবেলার সেই পুজোর সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা চলে না। আরও স্পষ্ট করে বললে ইন্টারনেট আসার আগের যুগ। তখন রেডিও, ক্যাসেটে বাজত ‘আয় রে ছুটে আয়, পুজোর গন্ধ এসেছে’। গানটা শুনলেই পুজো পুজো ভাব চলে আসত। শহুরে যান্ত্রিকতার প্রভাব এতই বেশি যে এখন আর শরতের কাশফুল দেখার আনন্দও তেমন একটা উদ্বেলিত করে না। তবু সব ছাপিয়ে ২০২৪ শারদীয় দুর্গোৎসব সবার ভালো কাটুক। শুভ শারদীয়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪