সৈয়দ রুহুল আমিন
সৈয়দ মুজতবা আলী বরোদা শহরে ছিলেন ১৯৩৬ সাল থেকে ১৯৪৪ পর্যন্ত। সেই শহরেরই বাসিন্দা ছিলেন ফৈয়াজ খাঁ সাহেব।
দুজনের ভেতর গভীর বন্ধুত্ব হয়েছিল।
প্রায়ই ওস্তাদজী তাঁর প্রিয় সৈয়দ সাহেবের বাসায় চলে আসতেন। কত দিন যে সন্ধ্যায় এসে ভোরে ফিরতেন, তার কোনো হিসাব ছিল না।
একবার সৈয়দ মুজতবা আলী সাহেবের বাসায় খাঁ সাহেবের গানের মেহফিল বসেছে।
ওস্তাদ সেদিন বড় মৌজে।
সেদিন বরোদায় ১১৪ ডিগ্রি গরম পড়েছিল। রাতদুপুরেও অসহ্য গরম, বর্ষা নামতে তখনো দুই মাস বাকি।
অনেক কিছু গাওয়ার পর ওস্তাদজী শুধোলেন, আদেশ করুন, কী গাইব।
শ্রোতাদের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হলো, ‘মেঘমল্লার।’
ওস্তাদজী সঙ্গে সঙ্গে গান ধরলেন।
যেন তিনি তাঁর সমস্ত সাধনা, সমস্ত ঘরানা, সমস্ত সৃজনশক্তি, বিধিদত্ত গুরুদত্ত সর্বকলাকৌশল সেই সংগীত সম্মোহন ইন্দ্রজালে ঢেলে দিলেন।
উপস্থিত মুগ্ধ শ্রোতারা নির্বাক নিস্পন্দ হয়ে যেন সর্বলোমকূপ দিয়ে সেই মাধুরী শোষণ করছিলেন।
এমন সময় বাইরে কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি।
মেহফিলে হুলুস্থুল পড়ে গেল।
তারপর শ্রোতারা যেভাবে ওস্তাদজীকে অভিনন্দন জানাতে শুরু করলেন তা খুব সহজেই অনুমেয়।
কিন্তু কোনো প্রশংসাবাক্যই যেন ওস্তাদজীকে স্পর্শ করছিল না।
অন্যদিন ওস্তাদজী শ্রোতাদের অভিনন্দন, প্রশংসাবাদ, মারহাবা যতখানি ঝুঁকে ঝুঁকে সেলাম জানিয়ে গ্রহণ করতেন, সেদিন তিনি সে রকম করলেন না। দু-একবার সেলাম জানিয়ে গালে হাত দিয়ে চুপ করে বসে রইলেন।
ওস্তাদ ফৈয়াজ খাঁ সাহেব অত্যন্ত সুদর্শন ছিলেন। চেহারা-রং সব মিলিয়ে অসাধারণ রূপবান ছিলেন। কিন্তু সেদিন সবকিছু ছাপিয়ে তাঁকে অত্যন্ত মলিন দেখাচ্ছিল।
ব্যাপারটি ওই মেহফিলের আয়োজক সৈয়দ মুজতবা আলীর নজরে পড়ল।
তিনি তাই অনুরোধ করলেন, ওস্তাদজী, বড় ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, একটু বিশ্রাম নিন।
ওস্তাদজী উত্তরে বললেন, আচ্ছা, সৈয়দ সাহেব, লোকে আমাকে এ রকম লজ্জা দেয় কেন বলুন তো? আমি কি গান গেয়ে বৃষ্টি নামাতে পারি?
সৈয়দ মুজতবা আলী অবাক হয়ে ভাবলেন একজন মানুষ মনের দিক থেকে কতটুকু বড় হলে প্রশংসাবাক্যে স্ফীত না হয়ে বরং বিব্রতবোধ করে।
বন্ধুভাগ্যে গর্বিত মুজতবা আলী তাই বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করে
বললেন, সে জানেন আল্লাহ। আমি শুধু জানি, অন্তত আজ রাত্রে তিনি আপনার সম্মান রাখতে চেয়েছিলেন।
সম্ভবত খাঁ সাহেব এরপর নীরব হয়ে গিয়েছিলেন। কারণ, নীরবতা হিরণ্ময়(Silence is Golden) আপ্ত বাক্যটি যথার্থতা পেয়েছিল।
সূত্র: সৈয়দ মুজতবা আলীর পঞ্চতন্ত্র
(২য় পর্ব)
সৈয়দ মুজতবা আলী বরোদা শহরে ছিলেন ১৯৩৬ সাল থেকে ১৯৪৪ পর্যন্ত। সেই শহরেরই বাসিন্দা ছিলেন ফৈয়াজ খাঁ সাহেব।
দুজনের ভেতর গভীর বন্ধুত্ব হয়েছিল।
প্রায়ই ওস্তাদজী তাঁর প্রিয় সৈয়দ সাহেবের বাসায় চলে আসতেন। কত দিন যে সন্ধ্যায় এসে ভোরে ফিরতেন, তার কোনো হিসাব ছিল না।
একবার সৈয়দ মুজতবা আলী সাহেবের বাসায় খাঁ সাহেবের গানের মেহফিল বসেছে।
ওস্তাদ সেদিন বড় মৌজে।
সেদিন বরোদায় ১১৪ ডিগ্রি গরম পড়েছিল। রাতদুপুরেও অসহ্য গরম, বর্ষা নামতে তখনো দুই মাস বাকি।
অনেক কিছু গাওয়ার পর ওস্তাদজী শুধোলেন, আদেশ করুন, কী গাইব।
শ্রোতাদের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হলো, ‘মেঘমল্লার।’
ওস্তাদজী সঙ্গে সঙ্গে গান ধরলেন।
যেন তিনি তাঁর সমস্ত সাধনা, সমস্ত ঘরানা, সমস্ত সৃজনশক্তি, বিধিদত্ত গুরুদত্ত সর্বকলাকৌশল সেই সংগীত সম্মোহন ইন্দ্রজালে ঢেলে দিলেন।
উপস্থিত মুগ্ধ শ্রোতারা নির্বাক নিস্পন্দ হয়ে যেন সর্বলোমকূপ দিয়ে সেই মাধুরী শোষণ করছিলেন।
এমন সময় বাইরে কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি।
মেহফিলে হুলুস্থুল পড়ে গেল।
তারপর শ্রোতারা যেভাবে ওস্তাদজীকে অভিনন্দন জানাতে শুরু করলেন তা খুব সহজেই অনুমেয়।
কিন্তু কোনো প্রশংসাবাক্যই যেন ওস্তাদজীকে স্পর্শ করছিল না।
অন্যদিন ওস্তাদজী শ্রোতাদের অভিনন্দন, প্রশংসাবাদ, মারহাবা যতখানি ঝুঁকে ঝুঁকে সেলাম জানিয়ে গ্রহণ করতেন, সেদিন তিনি সে রকম করলেন না। দু-একবার সেলাম জানিয়ে গালে হাত দিয়ে চুপ করে বসে রইলেন।
ওস্তাদ ফৈয়াজ খাঁ সাহেব অত্যন্ত সুদর্শন ছিলেন। চেহারা-রং সব মিলিয়ে অসাধারণ রূপবান ছিলেন। কিন্তু সেদিন সবকিছু ছাপিয়ে তাঁকে অত্যন্ত মলিন দেখাচ্ছিল।
ব্যাপারটি ওই মেহফিলের আয়োজক সৈয়দ মুজতবা আলীর নজরে পড়ল।
তিনি তাই অনুরোধ করলেন, ওস্তাদজী, বড় ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন, একটু বিশ্রাম নিন।
ওস্তাদজী উত্তরে বললেন, আচ্ছা, সৈয়দ সাহেব, লোকে আমাকে এ রকম লজ্জা দেয় কেন বলুন তো? আমি কি গান গেয়ে বৃষ্টি নামাতে পারি?
সৈয়দ মুজতবা আলী অবাক হয়ে ভাবলেন একজন মানুষ মনের দিক থেকে কতটুকু বড় হলে প্রশংসাবাক্যে স্ফীত না হয়ে বরং বিব্রতবোধ করে।
বন্ধুভাগ্যে গর্বিত মুজতবা আলী তাই বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করে
বললেন, সে জানেন আল্লাহ। আমি শুধু জানি, অন্তত আজ রাত্রে তিনি আপনার সম্মান রাখতে চেয়েছিলেন।
সম্ভবত খাঁ সাহেব এরপর নীরব হয়ে গিয়েছিলেন। কারণ, নীরবতা হিরণ্ময়(Silence is Golden) আপ্ত বাক্যটি যথার্থতা পেয়েছিল।
সূত্র: সৈয়দ মুজতবা আলীর পঞ্চতন্ত্র
(২য় পর্ব)
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১৩ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫