Ajker Patrika

বেলাল চৌধুরী

সম্পাদকীয়
বেলাল চৌধুরী

বেলাল চৌধুরী। কবি হিসেবে বেশি পরিচিত হলেও গদ্যে তাঁর হাত ছিল পাকা। অনুবাদেও ছিলেন সিদ্ধহস্ত। আসলে বেলাল চৌধুরী ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী একজন মানুষ। জন্ম ১৯৩৮ সালের ১২ নভেম্বর। প্রায় ৮০ বছর বেঁচেছিলেন। তিনি মৃত্যুবরণ করেন ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল।

এক জীবনে অনেকের পক্ষেই বহু কাজ করা সম্ভব হয় না। ফেনীর সন্তান বেলাল চৌধুরী এক জীবনে বহু কাজ করেছেন। কী না করেছেন তিনি! বামপন্থী রাজনীতিতে জড়িয়েছেন। ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। জেল খেটেছেন। পাকিস্তানি শাসকদের রক্তচক্ষু ফাঁকি দিয়ে কলকাতা গিয়ে উদ্বাস্তু জীবন কাটিয়েছেন। অসংখ্য কবিতা ও প্রবন্ধ লিখেছেন। বিদেশি সাহিত্য থেকে অনুবাদ করেছেন। কৃত্তিবাস, সচিত্র সন্ধানী, ভারত বিচিত্রা সম্পাদনার দায়িত্বও পালন করেছেন।

সব থেকে যা বেশি করেছেন, সেটা হলো চুটিয়ে আড্ডা দেওয়া। কেউ কেউ বলেন, তিনি যদি একটু কম আড্ডা দিতেন, সময়টাকে যদি এত কম মূল্যবান ভেবে ওভাবে খরচ না করতেন, তাহলে বাংলা সাহিত্য তাঁর কাছ থেকে আরও বেশি সোনালি ফসল পেতে পারত।

বেলাল চৌধুরী বলতেন অন্য কথা। তিনি বলতেন, তিনি ততটুকুই করেন, যতটুকু তাঁর করার কথা। সময়ের সঙ্গে তাঁর কোনো প্রতিযোগিতা ছিল না।

কলকাতায় গিয়ে প্রথম দিকে খুবই কষ্টের জীবন কাটিয়েছেন। থাকা-খাওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। প্রতিটি মুহূর্ত ছিল অনিশ্চয়তায় ভরা। পরে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়সহ কলকাতার কবি-সাহিত্যিকদের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় এবং সখ্য গড়ে ওঠার মধ্য দিয়ে একধরনের স্থিতি এসেছিল তাঁর জীবনে।

১৯৭৪ সালে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং বলা যায় নতুন করে শুরু হয় তাঁর যাত্রা। সময়ের সঙ্গে এবং সহযোগীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি বেলাল চৌধুরীকে। তিনি এমন একজন মানুষ ছিলেন, যাঁর সান্নিধ্যে এলে মুহূর্তেই তাঁকে আপন করে না নিয়ে উপায় ছিল না। তাই ঢাকায় জীবন গুছিয়ে নিতে, বন্ধুবান্ধব জুটিয়ে নিতে তাঁর খুব সময় লাগেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত