Ajker Patrika

কাতার থেকে আনা ১০ হাজার খেজুরবীজে স্বাবলম্বী জসিম

পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জুন ২০২২, ০৯: ০৮
কাতার থেকে আনা ১০ হাজার খেজুরবীজে স্বাবলম্বী জসিম

আট বছর আগে কাতারে পাড়ি জমান কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের লালজান পাড়ার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন (৩৮)। সেখানে ছয় বছর কৃষি শ্রমিকের কাজ করে সুদিনের দেখা পাচ্ছিলেন না। তাই দুই বছর আগে ফিরে আসেন দেশে।

শুরু করেন লবণ চাষ। তাতেও সাফল্য পাচ্ছিলেন না। তাই ভিন্ন কিছু করার আগ্রহে কাতারে পরিচিতজনদের মাধ্যমে সংগ্রহ করে দেশে আনেন ১০ হাজার খেজুরবীজ। পরিচর্যায় সেসব বীজ থেকে পাঁচ হাজারেরও বেশি চারা গজিয়েছে।

জসিম উদ্দিন বলেন, পরিবেশগত বৈচিত্র্যের কারণে বীজের অঙ্কুরদ্গম নিয়ে প্রথমে কিছুটা শঙ্কা ছিল। নিজের সংগৃহীত বীজের প্রায় অর্ধেক এখন চারায় পরিণত হয়েছে। আজওয়া, মরিয়ম, আনবারাহ, বেরহি ও সামরান জাতের প্রতিটি চারা ২০০ থেকে ৩ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ টাকার চারা বিক্রি হয়েছে।

এই নার্সারিতে বিক্রি উপযোগী আরও অন্তত চার হাজার খেজুরের চারা আছে। উপকূলীয় এ এলাকায় আরবের খেজুর ছড়িয়ে দিতে চান। কারণ এই আবহাওয়া ও পরিবেশে এর ভালো ফলন হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, জসিম উদ্দিনের বাড়ির আঙিনায় টবে ও উঠানে সারিবদ্ধভাবে রোপিত খেজুর গাছের চারা। এসব চারার পরিচর্যা করছেন তিনি। প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন তাঁর বাড়িতে। মরুভূমির গাছকে উপকূলীয় আবহাওয়ায় লাগিয়ে তিনি সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। অনেকেই সেখান থেকে দরদাম করে বিভিন্ন প্রজাতির খেজুর চারা কিনে নিচ্ছেন।

পেকুয়া উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের উপসহকারী কর্মকর্তা বাবলী রানী সুশীল বলেন, বাড়ির আঙিনায় খেজুর চারার নার্সারি গড়ে তুলেছেন কৃষক জসিম উদ্দিন। উপকূলীয় এই পরিবেশে মরুভূমির খেজুরের চারা উৎপাদন কিছুটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। কিন্তু জসিম উদ্দিন তা করে দেখিয়েছেন। চারা গজানোর পর ফলন পেতে ৪ থেকে ৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়।

তত দিনে চারা পরিপক্ব গাছে পরিণত হয়। এসব খেজুর গাছের আয়ুষ্কাল প্রায় ১০০ বছর। তবে পরাগায়নের জন্য প্রতি ২০ টির মধ্যে অন্তত দু-একটা পুরুষ গাছ রোপণ করতে হবে। যদিও পুরুষ গাছে ফলন হবে না। কিন্তু তাকে ছাড়া অন্য গাছে পরাগায়ন হবে না।

পেকুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তপন কুমার রায় বলেন, বাংলাদেশের আবহাওয়া এখন আগের চেয়ে অনেক উষ্ণ হয়ে উঠেছে। অর্থাৎ গরমের সময়কালটা বেশি। এতে সৌদি আরবের আবহাওয়াসহিষ্ণু ফল এখানে সহজে চাষ করা সম্ভব হচ্ছে। তা ছাড়া বাংলাদেশের মাটিতে এখন আগের চেয়ে লবণাক্ততার পরিমাণও অনেক বেড়েছে।

যে কারণে এ ফলের ফলন ভালো হচ্ছে। যদিও বেলে ও বেলে-দোআঁশ মাটিতে সহজে চাষ করা যায় এই খেজুর। কেবল নিশ্চিত করতে হবে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা। মূলত সে কারণেই দেশের কৃষি উদ্যোক্তাদের মধ্যে সৌদি খেজুর চাষ দ্রুত খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরা জসিম উদ্দিনের খেজুরের চারা প্রান্তিক চাষীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। এতে এ অঞ্চলে আরবের খেজুর উৎপাদন বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত