Ajker Patrika

আলুটিলা ঘিরে মহাপরিকল্পনা

সমির মল্লিক, খাগড়াছড়ি
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ২৩
আলুটিলা ঘিরে মহাপরিকল্পনা

পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে দিন দিন পর্যটক আকর্ষণ বাড়ছে। তবে সেভাবে উন্নয়ন হয়নি জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলোর। এর মধ্যে অন্যতম আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র। জেলার প্রধান পর্যটনকেন্দ্র হলেও দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল এটি। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এই পর্যটনকেন্দ্রের উন্নয়নে তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে খুশির খবর হচ্ছে, দীর্ঘদিন পর মহাপরিকল্পনার আওতায় আনা হয়েছে এ পর্যটনকেন্দ্র।

মেগা প্রকল্পের আওতায় আলুটিলায় নির্মাণ হচ্ছে ঝুলন্ত ব্রিজ, অ্যাম্ফিথিয়েটার, ফটো কর্নার, খুমপুই রেস্ট হাউস। এর মধ্যে দৃষ্টিনন্দন স্বর্ণ তোরণ (গেট) নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া কুঞ্জছায়া ভিউ পয়েন্ট পর্যটকদের দৃষ্টি কেড়েছে। সব মিলে এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার পর আলুটিলা পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

বর্তমানে মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করছে জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে নির্মিত হয়েছ ভিউ পয়েন্ট, কুঞ্জছায়া প্রবেশমুখে নির্মাণ করা হয়েছে স্বর্ণ তোরণ। কুঞ্জছায়া থেকে পাখির চোখে দেখা মিলবে নয়নাভিরাম খাগড়াছড়ি শহর, দূরের পর্বত শ্রেণি। যেখানে বর্ষায় মেঘ এসে ছুঁয়ে যায় পর্যটকদের। মাস্টার প্ল্যানের অংশ হিসেবে নির্মাণ হচ্ছে ঝুলন্ত ব্রিজ, নন্দনকানন পার্ক, অ্যাম্ফিথিয়েটার ও খুমপুই রেস্ট হাউস।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস এ বিষয়ে জানান, আলুটিলা জেলার প্রধান পর্যটন আকর্ষণ। এখানে পর্যটনের উন্নয়নে মাস্টার প্ল্যান হাতে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে কাজও এগিয়ে যাচ্ছে। কয়েক কোটির টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রায় ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। পাহাড়ের যে ধরনের স্থাপত্যশৈলী দেখা, এর সঙ্গে সংগতি রেখেই দৃষ্টিনন্দন তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আরও জানান, আলুটিলার দুটি পাহাড়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে ঝুলন্ত ব্রিজ। এতে পর্যটকেরা গুহা দেখে ঝুলন্ত ব্রিজের মাধ্যমে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যেতে পারবেন। পাহাড়গুলোতেও পর্যটকবান্ধব স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে ল্যান্ড স্কেল গার্ডেনিং করা। যেখানে বসে পর্যটক পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।

এ ছাড়া নির্মাণ হবে ভিউ পয়েন্ট বা ছবি কর্নার। পাহাড়ের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে নির্মাণ করা হচ্ছে এএমপি থিয়েটার। দর্শক গ্যালারিতে বসে ৫০০ পর্যটক একসঙ্গে পাহাড়ের সংস্কৃতি সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। অনেক পর্যটক খাগড়াছড়ি সাজেক বেড়াতে এসে শহরে রাত যাপন করেন। পর্যটকেরা যাতে আলুটিলা পাহাড়ে রাত যাপন করতে পারে সে জন্য খুমপুই রেস্ট হাউস নির্মাণ করা হচ্ছে। ২ কোটির বেশি টাকা ব্যয়ে চারতলাবিশিষ্ট এই রেস্ট হাউস নির্মাণ করা হচ্ছে।

গত শনিবার বরিশাল থেকে খাগড়াছড়ির আলুটিলায় বেড়াতে এসেছেন সাফিন, ফারুক ও মিলি। তাঁরা বলেন, এখানে বেশ কিছু স্থাপনা নির্মাণকাজ চলছে। কাজ শেষ হলে আলুটিলা আরও আকর্ষণীয় হবে।

তত্ত্বাবধায়ক চন্দ্রকিরণ ত্রিপুরা ও কোকোনাথ ত্রিপুরা বলেন, আগে এখানে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা ছিল না। এখন পার্কিংয়ের জন্য জায়গা নির্মাণ করা হয়েছে। জরাজীর্ণ গেট ভেঙে স্বর্ণ তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে আলুটিলার প্রবেশদ্বার আরও আকর্ষণীয় হয়েছে। ঝুলন্ত ব্রিজসহ চলমান প্রকল্পগুলো শেষ হলে এখানে পর্যটকদের আগমন আরও বাড়বে।

খাগড়াছড়ির আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস অন্তত বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, আলুটিলা পার্ক, থিয়েটার ও ঝুলন্ত ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব স্থাপনার নির্মাণকাজ শেষ হলে পর্যটন আকর্ষণ বাড়বে। অতিথিও বাড়বে।

জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস আরও জানান, খাগড়াছড়ির অর্থনীতির অন্যতম প্রধান খাত পর্যটন। এ খাতের সঙ্গে অনেক মানুষ সম্পৃক্ত। পর্যটনের উন্নয়নে তাই আলুটিলাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত