Ajker Patrika

পচছে জব্দ চাল, নেই ব্যবস্থা

মনিরামপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ০৯
পচছে জব্দ চাল, নেই ব্যবস্থা

করোনাকালে দুস্থদের মাঝে বিতরণ না করে মনিরামপুরের খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) গুদামে পচানো সেই ৫৫ বস্তা চালের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে তা জানে না উপজেলা প্রশাসন।

পচা চাল বিতরণের সময় জব্দ করে পরিষদের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখার এক মাস পার হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হকের বিরুদ্ধে। এমনকি এখানে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় তাঁর বিদায়ও হয়ে গেছে।

ফলে বিপুল পরিমাণ এই নষ্ট চালের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। পরিষদের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান আব্দুল হককে কি সমপরিমাণ চাল কিনে দিতে হবে না সরকারি সম্পদ নষ্টের দায়ে তাঁকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে সেটাও নিশ্চিত নয়।

যদিও গণমাধ্যমে প্রকাশিত নিউজের পর গেল ৩১ অক্টোবর চালগুলো জব্দ করে পরিষদেরই একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রেখে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান। জব্দের এক মাস পার হলেও বিপুল পরিমাণ এ চালের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। পরিষদের সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান আব্দুল হককে কি সমপরিমাণ চাল কিনে দিতে হবে না সরকারি সম্পদ নষ্টের দায়ে তাঁকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে সেটাও নিশ্চিত নয়।

এ বিষয়ে মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, ‘এখানে আমার সিদ্ধান্ত দেওয়ার কিছু নাই।’

এ চালের ভবিষ্যৎ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ঠিক এ ব্যাপারে বলতে পারব না।’

এদিকে খেদাপাড়া ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম জিন্নাহ বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হওয়ার পর পরিষদের পচে যাওয়া চালের ব্যাপারে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলেছি। ১৬ ডিসেম্বরের পর তিনি একটা সিদ্ধান্ত দিতে চেয়েছেন।’

গেল জুলাই মাসে করোনাকালীন দুস্থদের মাঝে বিতরণের জন্য উপজেলার চেয়ারম্যানদের চাল বরাদ্দ দেয় সরকার। গত আগস্ট মাসের প্রথম ও শেষ সপ্তাহে দুই ধাপে ৫৫ বস্তা চাল তোলেন খেদাপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল হক। যেখানে ২ দশমিক ৭৩ টন চাল রয়েছে। পরে সেই চাল বিতরণ না করে পরিষদের গুদামে রেখে দেন চেয়ারম্যান। ওই পরিষদের সচিব মৃনালকান্তিও চাল বিতরণে উদ্যোগী হননি। ফলে খোলা বাতাসে চালে পচন ধরে।

এ নিয়ে গত ৩১ অক্টোবর আজকের পত্রিকায় ‘চাল পচছে গুদামে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই খবর দেখে তড়িঘড়ি করে সেই পচা চাল বিতরণের চেষ্টা করেন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হক ও সচিব মৃনালকান্তি। তাঁরা পূর্বে কোনো তালিকা না করে ওই দিনই ৩০০-৪০০ নারী–পুরুষকে পরিষদে জড়ো করে পচা চাল বিতরণের চেষ্টা করেন তাঁরা।

খবর পেয়ে ইউএনও সৈয়দ জাকির হাসান পরিষদে হাজির হয়ে পচা চাল জব্দ করেন।

সে সময় এক রাজু নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছিলেন, চাল নষ্ট করায় পরিষদের সচিবকে তিরস্কার করেন ইউএনও। তিনি (সচিব) চাল বিতরণ না হওয়ার খবর কেন ইউএনওকে জানাননি সেজন্য তাঁকে বদলির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছিলেন ইউএনও।

একই সঙ্গে চেয়ারম্যানকে সমপরিমাণ চাল কিনে দুস্থদের মাঝে বিতরণের জন্য প্রস্তুতি নিতেও বলেছিলেন ইউএনও।

তখন বিষয়টি জেলা প্রশাসককে লিখিত আকারে জানানো হয়েছিল বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিষয়টি ওই পর্যন্ত থেমে আছে বলে জানায় সূত্রটি। সেই জব্দের পর থেকে চালগুলো পরিষদে তালাবদ্ধ পড়ে আছে। কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি জড়িতদের বিরুদ্ধে।

এ দিকে একাধিক সূত্র বলছে, শুধু দুস্থদের চাল নয় করোনায় আক্রান্ত হয়ে লকডাউনে থাকা ব্যক্তিদের সাহায্যে উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া অন্তত ২০০ কেজি চাল পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে ওই পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষের পাশের কক্ষে।

এ ছাড়া সচিবের কক্ষের পেছনের কক্ষে বিতরণ না করে শিশুখাদ্য (দুধ) ফেলে রাখা হয়েছে বলেও জানা গেছে। তদন্ত সাপেক্ষ এসব বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রদল নেতার পোস্ট, শোকজ পেয়ে নিলেন অব্যাহতি

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

অপারেশন সিঁদুরে নিহত প্রায় দেড় শ সেনার তালিকা প্রকাশ করে মুছে ফেলল পাকিস্তানি টিভি

আমরা দখল করি লঞ্চঘাট-বাসস্ট্যান্ড, জামায়াত করে বিশ্ববিদ্যালয়: আলতাফ হোসেন চৌধুরী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত