Ajker Patrika

গ্যাস-সংকটে জ্বলছে না চুলা, লাইন বাড়ছে ফিলিং স্টেশনে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১০: ২৯
গ্যাস-সংকটে জ্বলছে না চুলা, লাইন বাড়ছে ফিলিং স্টেশনে

রাজধানীতে তীব্র গ্যাস-সংকট দেখা দিয়েছে। দিনের বেলা বেশির ভাগ এলাকার চুলা জ্বলছে না। সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোও চাহিদা অনুসারে গ্যাস পাচ্ছে না। এতে ফিলিং স্টেশনের সামনে গ্যাসের জন্য অপেক্ষমাণ গাড়ির সারি লম্বা হচ্ছে। এই সংকটের কারণ হিসেবে সরবরাহ ঘাটতিকে দুষছে কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, এখন ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল দুটোই কাজ করছে। পাশাপাশি গ্যাসের কার্গো এসেছে। কাজেই ১৭ অক্টোবরের পর পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

পেট্রোবাংলার তথ্য অনুসারে, সব মিলিয়ে ঢাকা শহরে গ্যাসের চাহিদা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের মতো। কিন্তু সরবরাহ হচ্ছে গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। ফলে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে প্রায় এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকার বাসিন্দা মো. মানিক বলেন, ‘গ্যাস না থাকায় সকালের নাশতা কিন্যা খাওয়া লাগে। দুপুরের খাবার রেডি হয় আসরের পরে (শেষ বিকেলে)। প্রতিবছর শীতকালে গ্যাসের সমস্যা হইলেও এবার শীতের আগেই সমস্যা দেখা দিছে।’ সায়েদাবাদের স্বামীবাগ এলাকার গৃহিণী হামিদা বেগম বলেন, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। দিনের খাবার আগের রাতেই রান্না করে রাখতে হয়।

একই রকম অভিযোগ বনশ্রীর গৃহিণী নূরজাহান বেগম ও কচুক্ষেত ঝিলপাড় এলাকার মোসাম্মৎ রোকেয়ারও। রোকেয়া বলেন, ‘গ্যাস না থাকায় বিদ্যুতের চুলা কিনেছি। তাও লোডশেডিংয়ের কারণে অনেক সময় ব্যবহার করতে পারি না। তখন বাইর থেকে খাবার কিনে আনতে হয়।’

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের মেট্রো ঢাকা বিপণন ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. তওহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্যাসের সাপ্লাই কম, তাই দিনে শহরের বড় অংশে চুলায় আগুন জ্বলে না। কয়েক দিনের মধ্যে গ্যাসের সাপ্লাই বাড়বে, তখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’

রাজধানীর সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোও পড়েছে গ্যাস-সংকটে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে কারওয়ান বাজার এলাকার কানাডা-বাংলা সিএনজি ফিলিং স্টেশনে কথা হয় কয়েকজন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের সঙ্গে। নজরুল ইসলাম নামের একজন বললেন, ‘গ্যাসের চাপ থাকলে ৩০০ টাকার নিই। চাপ কম থাকলে ৮০ টাকারও গ্যাস ঢোকে। সিরিয়াল ধরে গ্যাস নিতে নিতে দিনের বড় অংশ চলে যায়।’ দু-তিন মাস ধরে এমন সংকট বলে জানালেন ফিলিং স্টেশনটির কর্মী সাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, ‘গ্যাসের চাপ না থাকায় গাড়িচালকেরাও কষ্ট করেন, আমাদেরও বেশি গ্যাস বিক্রি হয় না।’

জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অস্বীকার করার সুযোগ নেই, এলএনজির সাপ্লাই কম থাকায় গ্যাস-সংকট দেখা দিচ্ছে। আমাদের দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের একটা কয়েক মাস নষ্ট ছিল। বর্তমানে দুটোই ঠিক হয়েছে। কিন্তু গ্যাসের কার্গো এল মাত্র। এখন এলএনজি সাপ্লাই হচ্ছে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো। ১৭ অক্টোবরের পর ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের মতো হবে, তখন সংকট কমবে। তা ছাড়া গ্যাসের অবৈধ সংযোগ লাইনের কারণে চ্যালেঞ্জ রয়েছে।’

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) উপদেষ্টা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, চাহিদা মোতাবেক গ্যাসের সরবরাহ নেই, তাই ঘাটতি মেটাতে গিয়ে রেশনিং করা হচ্ছে। তারিখ বেঁধে দিয়ে গ্যাসের সংকট সমাধান করা যাবে না। টেকসই সমাধানের একটাই উপায়, সরবরাহ বাড়াতে হবে। বাসা-বাড়িতে অন্তত দুই বেলা গ্যাস সরবরাহ ঠিক রাখতে হবে, না হলে নগরের জনজীবন বিপর্যস্ত হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত