Ajker Patrika

বোরহানউদ্দিনে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের রস

মো. সাইফুল ইসলাম আকাশ বোরহানউদ্দিন (ভোলা)
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ২০
বোরহানউদ্দিনে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের রস

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় হারিয়ে যাচ্ছে সুস্বাদু খেজুরের রস। এখন আর দেখা মেলে না শীতের শুরুতে খেজুরের রস আহরণে গাছিদের তোড়জোড়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামীণ জনপদে শীতের উৎসব শুরু হতো খেজুরগাছের রস দিয়ে। গাছিদের খেজুরগাছ কাটার ধুম পড়ে যেত। বিশেষ কায়দায় গাছের ছাল তুলে রস সংগ্রহের উপযোগী করে তোলা হয়। পরে হাঁড়ি বসিয়ে রস সংগ্রহ করা হতো।

ওই রস থেকে গুড় তৈরি করে তা বিক্রি হতো হাট-বাজারে। কেউ কাঁচা রস কিনে নিতেন গাছিদের কাছ থেকে। খেজুরের গুড়ের গন্ধে তখন গ্রামীণ জনপদ ছিল ভরপুর। বাড়ি বাড়ি পিঠা-পায়েস খাওয়ার ধুম পড়ত। পিঠাপুলি পাঠানো হতো আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে। তবে বোরহানউদ্দিনের গ্রামাঞ্চলের সেই চিত্র এখন আর নেই। কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বিলুপ্তির পথে খেজুরগাছ ও রস। ব্যাপক হারে খেজুরগাছ কেটে ফেলায় গাছশূন্য হয়ে যাচ্ছে বোরহানউদ্দিন।

উপজেলায় ১০ বছর আগেও শত শত খেজুরগাছ থাকলেও এখন ১০ গ্রাম ঘুরে ১০টি খেজুরগাছ পাওয়া দুরূহ। সে সময় খেজুরের রস আহরণ ও গুড় উৎপাদনে ব্যস্ততা দেখা যেত এই অঞ্চলের কিষান-কিষানিদের। বাজারে খেজুরের গুড় পাওয়া গেলেও সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে।

কুতবা ইউনিয়নের সিরাজ মিয়া জানান, ১২ বছর আগেও তাঁদের বাড়ির আঙিনায় ও মাঠে ২৫টি খেজুরগাছ ছিল। এখন তা আর নেই।

একই গ্রামের তৈয়ব সিকদার বলেন, ‘মাঠে ৫০টি খেজুরগাছ ছিল। গাছ থেকে সংগ্রহ করা হতো রস। সেই রস থেকে গুড়-পাটালি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করা হতো।’

পক্ষিয়া ইউনিয়নের মানিক হাওলাদার বলেন, ‘সাত-আট বছর আগেও ১০টি গাছ থেকে দৈনিক রস সংগ্রহ হতো ৪০-৪৫ কেজি। আর এ বছর রস সংগ্রহের ইচ্ছা থাকলেও গাছ নেই।’

এদিকে কাচিয়া, পক্ষিয়া, সাচরাসহ বেশ কিছু এলাকা ঘুরে একই অবস্থা দেখা গেছে। শীতের মৌসুম চলছে, কিন্তু দেখা মিলছে না গাছিদের। তাঁরা জানান, একসময় খেজুরের রস বিক্রি হতো প্রতি কেজি ৮-১০ টাকা। বর্তমানে তা ৮০-৯০ টাকা। অনেক জায়গায় ১০০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।

এলাকাবাসী জানান, উপজেলার মাটি খেজুরগাছ চাষের উপযোগী। তাই সরকারি ও বেসরকারিভাবে খেজুরগাছ চাষে সহায়তা করা হলে আবারও দেখা মিলবে খেজুরের রস ও গুড়ের। একাধিক চাষিরা জানান, ‘রস-গুড় উৎপাদন করে লাভবান হতে না পেরে সরে যাচ্ছেন গাছিরা। বর্তমানে বিভিন্ন গ্রামে অনেকে পেঁপে, কলা, বেগুন, বরই ও আমবাগান গড়ে তুলেছেন। তবে বোরহানউদ্দিনবাসীর দাবি, খেজুরের রস-গুড় বিদেশে রপ্তানির ব্যবস্থা করা গেলে আবার ফিরে আসবে অতীত ঐতিহ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

আইপিএলে চাহালের রেকর্ড হ্যাটট্রিকের রাতে রহস্যময় পোস্ট এই নারীর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত