Ajker Patrika

বন কার্যালয়ের ১০০ গজেই ১৩ সেগুনগাছ সাবাড়

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ৫৬
বন কার্যালয়ের ১০০ গজেই ১৩ সেগুনগাছ সাবাড়

কক্সবাজারের চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী বনবিট কার্যালয়ের সামনেই সেগুনের বাগান। এই বাগানের ভেতরের অধিকাংশ গাছ আগেই চুরি হয়ে গেছে। বাকি ছিল রাস্তার পাশেরগুলো। সপ্তাহ দেড়েকের মধ্যে এ কার্যালয়ের ১০০ গজের মধ্যেই অন্তত ১৩টি সেগুনগাছ কাটা পড়ল।

অভিযোগ রয়েছে, বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশেই গাছগুলো কেটে পাচার করেছে দুর্বৃত্তরা। শুধু তা-ই নয়, সম্প্রতি বিট অফিসের ঘেরায় মজুত করা (জব্দকৃত) গাছও চুরি হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফ সিদ্দিকী খোকন (৩৭), মোহাম্মদ সেলিমসহ (৫০) অনেকেই বলেন, কয়েকজন চিহ্নিত ব্যক্তি বনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গেই রাত-দিন বন পাহারার নামে গাছ চুরিতে জড়িত। তাঁরা বনের ভেতর থেকে গাছ কেটে পাচার করেন। তাঁরা এতই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন যে, এখন অফিসের ৫০-১০০ গজের মধ্যের মূল্যবান সেগুনগাছ কেটে পাচার করছেন। ভেতরের অবস্থা তো আরও খারাপ।’

গাছ পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে ফাঁসিয়াখালী বিট কর্মকর্তা আবুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চোর নিয়ে চোর ঠেকাতে হয়। বনের আশপাশের অনেকেই গাছ চুরির সঙ্গে জড়িত। আমি যোগদানের পর দেড় বছরে গাছ চোরদের বিরুদ্ধে ২৫-২৬টি মামলা দিয়েছি।’ বন মামলার আসামি সঙ্গে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

গত রোববার সরেজমিন দেখা গেছে, চকরিয়া-আলীকদম সড়কের উত্তর পাশে সেগুনবাগান। আর দক্ষিণ পাশে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের ফাঁসিয়াখালী বনবিট। পুরোনো এ বাগানের সদ্য কাটা কয়েকটি সেগুনগাছের গুঁড়ি (মোথা) পুড়িয়ে আলামত নষ্টের চেষ্টা করা হয়েছে। ৮-১০টি মোথার মাথায় কাদা-মাটি দিয়ে ঘষামাজা করে পুরোনো কাটা গাছ দেখানোর চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা।

একই দিন সন্ধ্যায় গাছ কাটার খবর পেয়ে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এপিসএফ) ড. প্রাণতোষ চন্দ্র রায় ও ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।

রেঞ্জ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘জনবলের সংকট রয়েছে। এর সুযোগ নিয়ে দুর্বৃত্তরা গাছ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।’ বন রক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টি ও স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কিছু প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় এ বনের গাছ উজাড় করা হচ্ছে। মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘আমি সবে দায়িত্ব নিয়েছি। গাছ উজাড় ও পাচার বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

জানতে চাইলে সহকারী বন সংরক্ষক ড. প্রাণতোষ চন্দ্র রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, বনবিটের আশপাশে গাছ চুরির বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না। এ ব্যাপারে তদন্ত করে দায়ীদের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আনোয়ার হোসেন সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বনবিট কার্যালয়ের সামনে থেকে গাছ কাটার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ব্যাংকের চাকরি যায় জাল সনদে, একই নথি দিয়ে বাগালেন স্কুল সভাপতির পদ

৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ডেলটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ফারুকসহ ১৫ জনের নামে মামলা

১ লাখ ৮২২ শিক্ষক নিয়োগ: যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা চলতি সপ্তাহে

‘মুসলিম ফ্রন্টগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করুন, ইন্টেরিম ভেঙে দিন’

‘বউ আমাকে মিথ্যা ভালোবাসত, টাকা না থাকলে ছেড়ে যাবে, তাই মরে গেলাম’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত