Ajker Patrika

কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড

আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ৩৪
কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড

কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড গড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩১ লাখ ৬৯ হাজার টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবহন বিভাগের পরিচালক এনামুল করিম।

আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিন লয়েড’স লিস্টে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমানে অবস্থান ৬৭তম। ১৮৮৮ সালের ২৫ এপ্রিল প্রথম অপারেশনে যায় বন্দর। ১৩৪ বছর পর এবারই সর্বোচ্চ কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে রেকর্ড গড়েছে বন্দরটি।

বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান তিনটি কাজ হলো কার্গো হ্যান্ডলিং, কনটেইনার হ্যান্ডলিং ও জাহাজ হ্যান্ডলিং। তিনটি কাজই এ বছর সুন্দর ও সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা টার্মিনাল, বে-টার্মিনাল ও মহেশখালী গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজ এ বছরই দৃশ্যমান হয়েছে।

বন্দর সচিব ওমর ফারুক জানান, করোনায় বিশ্বব্যাপী আমদানি-রপ্তানিতে বিপর্যয় ঘটে। সিঙ্গাপুর, কলম্বো, পোর্ট কেলাংসহ ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরগুলোতে সীমাহীন কনটেইনার ও জাহাজজট তৈরি হয়। সে তুলনায় চট্টগ্রাম বন্দরে জট হয়নি। বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছার এক-দুই দিনের মধ্যে জেটিতে বার্থিং পেয়েছে জাহাজগুলো।

দেশের মোট আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ৯২ ভাগ সম্পন্ন হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। বন্দরে মোট ১৮টি জেটি রয়েছে। মূল জেটির বাইরে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত ১৯টি বেসরকারি ডিপোতে ৩৭ ধরনের পণ্য খালাস ও বোঝাই হয়। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল ও ঢাকার মতিঝিল কমলাপুর ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোতেও কনটেইনার হ্যান্ডলিং করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম আজকের পত্রিকা বলেন, ‘এটি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য ইতিবাচক। তবে চট্টগ্রাম বন্দরের ৩১-৩২ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে সন্তুষ্ট হলে চলবে না। এর সক্ষমতা বাড়াতে হবে। কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ ৬০ লাখে পৌঁছাতে হবে। আমদানি-রপ্তানি বাড়াতে আরও নতুন জেটি বানাতে হবে। দ্রুত বে-টার্মিনাল বাস্তবায়ন করা দরকার।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ছৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ জানান, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এফসিএল, এলসিএল পণ্যবাহী কনটেইনারগুলো আরও বেসরকারি ডিপোর মাধ্যমে খালাস করতে পারলে আমদানি-রপ্তানিতে চট্টগ্রামের সক্ষমতা বেড়ে যাবে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ড থেকে অকশনের কনটেইনারগুলো দ্রুত অপসারণ করা হলে অপারেশন সহজ হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, ২০১১ সালে ১৩ লাখ ৯০ হাজার কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়। ২০১৫ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২০ লাখ ২০ হাজার কনটেইনারে। ২০২০ সালে হ্যান্ডলিং করা হয় ২৮ লাখ কনটেইনার। চলতি বছরের ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩১ লাখ ৬৯ হাজার কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

এদিকে বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সক্ষমতাও বেড়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানির জন্য চলতি ২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ২ লাখ ৫৯ হাজার ৭৯৭ বিল অব এন্ট্রি দাখিল করা হয়। এসব বিল অব এন্ট্রির বিপরীতে ৫২ কোটি ১৪ লাখ ৫ হাজার ৫১ মেট্রিক টন পণ্য খালাস করা হয়। যার মূল্য ২ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৪ দশমিক ২৩ কোটি টাকা। তবে ২০২০ সালের ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিল অব এন্ট্রির বিপরীতে ৫০ কোটি ১৯ লাখ ৫ হাজার ৮১২ মেট্রিক টন পণ্য খালাস করা হয়।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের চলতি বছরের ২৩ ডিসেম্বরের রাজস্ব বিবরণী পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ডিসেম্বর মাসে টার্গেট ছিল ৪ হাজার ৩৪৮ দশমিক ৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত আদায় হয়েছে ৩ হাজার ৫৩৭ দশমিক ৪৮ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫০৩ দশমিক ৬০ কোটি টাকা।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম জানান, চলতি বছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অনেক অর্জন। এর মধ্যে ইউজার আইডি পাসওয়ার্ড জালিয়াতি রোধে ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) চালু, শতভাগ ই-পেমেন্ট ও ইজিএম চালু করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত