Ajker Patrika

ফ্রান্সিস বেকন

সম্পাদকীয়
ফ্রান্সিস বেকন

ইংরেজ দার্শনিক, আইনজ্ঞ, রাজনীতিবিদ এবং পরীক্ষামূলক বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার পথপ্রদর্শক ছিলেন ফ্রান্সিস বেকন। তিনি ইংল্যান্ডের রানি এলিজাবেথ এবং সম্রাট প্রথম জেমসের উপদেষ্টা ছিলেন।

১৫৭৩ সালে তিনি কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে ভর্তি হন। আইন নিয়ে পড়াশোনা করলেও তাঁর আগ্রহের বিষয় ছিল দর্শন ও বিজ্ঞান। কেমব্রিজে পড়াকালে রানি প্রথম এলিজাবেথের সঙ্গে দেখা হলে রানি তাঁকে লর্ড উপাধির যোগ্য বলে মন্তব্য করেন।

ফ্রান্সিস বেকন দার্শনিক চিন্তাধারায় মৌলিক কিছু তত্ত্ব প্রবর্তন করেন, যা বেকনিয়ান মেথড নামে পরিচিত। তিনি পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের ওপর জোর দেন। কোনো বিষয়, ঘটনার উৎস সন্ধানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির বিষয়টি তিনি প্রথম সামনে নিয়ে আসেন। আইনের ক্ষেত্রে তিনি বড় ধরনের সংস্কারের চেষ্টা করেন। আইনজীবী হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করলেও তিনি বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের প্রবক্তা এবং ধর্মান্ধতা ও গোঁড়ামিবিরোধী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।

তাঁর জ্ঞান ও গবেষণার উৎসাহ কোনো একটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ ছিল না। তাঁকে তাই সব বিষয়ে পারদর্শী বলা হয়ে থাকে। কেবল জ্ঞানের তত্ত্বগত আলোচনায় নয়, ব্যক্তিগত জীবনে ক্ষমতা লাভের প্রচেষ্টায় তিনি তা অর্জন করেছিলেন। ইংরেজ সম্রাট প্রথম জেমসের রাজত্বকালে ‘লর্ড-চ্যান্সেলর’ হিসেবে নিযুক্ত হয়ে তিনি সম্রাটের শাসনব্যবস্থার সর্বোচ্চ পদমর্যাদার অধিকারী হয়েছিলেন। এত বড় দার্শনিক পদমর্যাদার হয়েও তিনি ব্যক্তিগত জীবনে আত্মস্বার্থসাধনে ছিলেন বিবেকহীন।

নোভাম অর্গানাম, দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব লারনিং, সিলভা সিলভারাম, নিউ অ্যাটলান্টিস প্রভৃ তাঁর আলোচিত গ্রন্থ। বেকন রাজতন্ত্রের সমর্থনকারী ছিলেন। তিনি সামন্ততন্ত্রের বিরোধিতা করে এককেন্দ্রিক শক্তিশালী রাজতন্ত্রের কথা প্রচার করতেন। ‘নিউ অ্যাটলান্টিস’ গ্রন্থে তিনি এক কল্পরাজ্যের বর্ণনা করেছেন। বিজ্ঞানের ভিত্তিতে সেই রাষ্ট্রের রাজকার্য সাধিত হয়।

শোষক ও শোষিতের অস্তিত্ব সত্ত্বেও বৈজ্ঞানিক উপায়ের ব্যবহারে একটা রাষ্ট্র কী বিস্ময়কর অর্থনৈতিক উন্নতি লাভ করতে পারে, তার চিত্র তিনি এই গ্রন্থে তুলে ধরেছেন।

বিতর্কিত দার্শনিক এই মানুষটি ১৫৬১ সালের ২২ জানুয়ারি লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত