Ajker Patrika

বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো

সম্পাদকীয়
বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো

মানুষের নানা রকম শখ থাকে। সবার সব শখ পূরণ হয় না। তবে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের একটি গ্রামের ১২ বছর বয়সী এক শিশুর শখ হয়েছিল উড়োজাহাজে চড়ার। শিশুটি তার শখ পূরণে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে আমাদের শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে।

কোনো পাসপোর্ট-ভিসা বা বোর্ডিং পাস সঙ্গে না থাকা সত্ত্বেও শিশুটি কীভাবে ৯ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা ডিঙিয়ে উড়োজাহাজে গিয়ে উঠে বসল, সেটাই হলো বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। 

বিমানবন্দরের লাউঞ্জে ঢোকা খুব সহজ কাজ নয়। নানা ধরনের তল্লাশি করেই ঢুকতে দেওয়া হয়। অথচ গ্রাম থেকে আসা মাদ্রাসাপড়ুয়া একটি শিশু নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কুয়েতগামী একটি বিমানে উঠে বসে প্রমাণ করে দিয়েছে, আমাদের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা কতটা অযত্ন-অবহেলায় আছে।  

বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত ‘শিশুর শখে ঠুনকো হলো ৯ স্তরের নিরাপত্তা’ শীর্ষক খবর থেকে জানা যায়, শিশুটি একটি দাখিল মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। তবে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও কাউকে না জানিয়ে সে বাড়ি থেকে পালিয়েছে বেশ কয়েকবার। এক সপ্তাহ আগে মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। ইজিবাইকে যায় মুকসুদপুরে। সেখান থেকে মাদ্রাসায় না গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে কয়েক দিন কাটিয়ে দেয়। এরপর গোপালগঞ্জ থেকে বাসে সোমবার রাতে ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে নামে। সায়েদাবাদ থেকে আরেক বাসে চড়ে যায় বিমানবন্দরে। এরপর তার শখ হয় উড়োজাহাজে চড়ার। ঢুকে পড়ে বিমানবন্দরে। পরনে হলুদ রঙের টি-শার্ট ও সাদা পায়জামা। পায়ে কালো কেডস, হাতে লাল ছোট একটি ব্যাগ নিয়ে গ্রাম থেকে আসা শিশুটি বিমানবন্দরের মতো জায়গায় একে একে ৯টি নিরাপত্তা স্তর টপকে উঠে যায় উড়োজাহাজে। 

পুরো ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক বলছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। বুধবার বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় যাঁদের গাফিলতি ছিল, তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে চিহ্নিত করে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁরা ইমিগ্রেশন পুলিশ, এভসেক, কুয়েত এয়ারওয়েজ ও গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।  

আমরা আশা করব, এ ঘটনাকে হালকাভাবে না নিয়ে বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থার দুর্বলতা দূর করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। সিভিল এভিয়েশন, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সংস্থার সংশ্লিষ্ট সবাইকে জবাবদিহির আওতায় না আনলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। 

আমাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচ্ছন্নতা ও আধুনিক সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। ফেসবুকেও কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, মূল ফটক থেকে বিমানের সিট পর্যন্ত সব জায়গায় অপেশাদারত্বের ছাপ। কোনো অভিভাবক আছে বলে মনে হয় না। দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রতি এমন উদাসীনতা রীতিমতো পীড়াদায়ক। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা কি সব সময় চোখ বন্ধ করে থাকেন?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রদল নেতার পোস্ট, শোকজ পেয়ে নিলেন অব্যাহতি

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

অপারেশন সিঁদুরে নিহত প্রায় দেড় শ সেনার তালিকা প্রকাশ করে মুছে ফেলল পাকিস্তানি টিভি

মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন আনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত