Ajker Patrika

মান্না দে

সম্পাদকীয়
মান্না দে

যদি কাগজে লেখো নাম কাগজ ছিঁড়ে যাবে, কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই, আবার হবে তো দেখা, শাওন রাতে যদি—এমন অসংখ্য প্রেম-বিরহের গান বাঙালির হৃদয়তন্ত্রীতে বাজবে বহুদিন। এসব গানের অমর স্রষ্টা হলেন কিংবদন্তি শিল্পী মান্না দে।

পিতা পূর্ণচন্দ্র তাঁর নাম রেখেছিলেন প্রবোধ চন্দ্র দে। কাকা কৃষ্ণচন্দ্র দে তাঁকে ডাকতেন মান্না বলে। সংগীতভুবনে এ নামেই তিনি খ্যাতিমান হয়ে ওঠেন। একাধারে শিল্পী, সুরকার, সংগীত পরিচালক ছিলেন।

তাঁর বিপুল গানের সম্ভার আজীবন তাঁকে জীবন্ত করে রাখবে। গান আর স্কুলের পাঠ শুরু হয়েছিল প্রায় একসঙ্গেই। কাকা সংগীতাচার্য কৃষ্ণচন্দ্র দে একাধারে ছিলেন তাঁর সংগীত গুরু ও প্রেরণার উৎস।

মাত্র ২৩ বছর বয়সে কাকার হাত ধরে মুম্বাইয়ে আসেন তিনি। সেই বছরই কাকার সংগীত পরিচালনায় ‘তামান্না’ ছবিতে গান একটি দ্বৈত সংগীত—আমরা যেটাকে ‘ডুয়েট গান’ বলে থাকি। সেটাই ছিল বলিউডে তাঁর প্রথম গান গাওয়া। তিনি সারা ভারতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন ১৯৫৩ সালে ‘দো বিঘা জমি’ মুক্তির পর। সলিল চৌধুরীর কম্পোজিশনে এই ছবিতে গান গেয়েছিলেন তিনি।

সংগীতের অন্তত ২০-২৫টা ধারা তাঁর নখদর্পণে ছিল। খেয়ালের সঙ্গে সঙ্গে অসামান্য কাওয়ালিও গাইতে পারতেন তিনি। ‘বরসাত কি রাত’ ছবিতে তাঁর গাওয়া কাওয়ালির কোনো তুলনা হয় না। ইতিহাস হয়ে রয়েছে সে গান। হিন্দি, গুজরাটি, মারাঠি, ভোজপুরি, পাঞ্জাবি, কোঙ্কনি, অসমিয়া ও বাংলা ভাষার গানের পাশাপাশি রবীন্দ্র ও নজরুলসংগীতেও তিনি তাঁর অনন্য সংগীত প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন।

আট দশকের দীর্ঘ সংগীতজীবনে চার হাজারের বেশি গান গেয়েছেন তিনি।১৯৫৩ সালে কেরালার মেয়ে মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী সুলোচনা কুমারনের সঙ্গে প্রেম থেকে পরিণয় হয়েছিল। কাশ্মীরি টুপি ছিল তাঁর স্টাইল।

২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর জীবনখাতার পাতায় সব হিসাব-নিকাশ চুকিয়ে জীবনের জলসাঘর থেকে বিদায় নেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত