Ajker Patrika

উপবৃত্তি পাওয়া নিয়ে শঙ্কা

প্রতিনিধি, মতলব উত্তর (চাঁদপুর)
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১: ৩৯
উপবৃত্তি পাওয়া নিয়ে শঙ্কা

চাঁদপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কাটছে না অভিভাবকদের। ইতিমধ্যে ছয় মাসের টাকা পেলেও পরবর্তী তিন মাসের টাকা পাওয়া নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের চলতি বছর থেকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা দিয়ে আসছে। তার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের এই উপবৃত্তির টাকা একটি চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে এক হাজার ১৫৬ টি। প্রাক-প্রাথমিক ছাড়া জেলায় প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই লাখ ১৯ হাজার ৪০২ জন।

যারা প্রত্যেকেই উপবৃত্তি পেয়ে আসছে। মাসিক ১৫০ টাকা করে উপবৃত্তি পেয়ে আসছে তারা। গেল বছর পর্যন্ত রুপালী ব্যাংকের ‘শিওর ক্যাশ’ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শিক্ষার্থীদের অর্থ দিয়ে আসছিল। হঠাৎ মোবাইল ব্যাংকিং-এ টাকা দেওয়ায় মোবাইল সিম থেকে টাকা হ্যাকিং হওয়ার অভিযোগ করতে থাকেন অভিভাবকেরা।

ভুক্তভোগী অভিভাবকেরা জানায়, ওই মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা দিলে মোবাইলে কোনো এসএমএস আসে না। যার কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা জানতেই পারেন না তাদের সিমে টাকা আসছে। যখন জানে টাকা আসছে তখন এজেন্টের কাছে টাকা তোলার জন্য গেলে দেখা যায় অ্যাকাউন্টের বিপরীতে পিন কোড পরিবর্তন হয়ে গেছে। নতুন পিন কোডের জন্য হটলাইন কিংবা কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করলে নতুন পিন দেওয়া হলেও অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স শূন্য দেখায়। এ নিয়েই শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। এমনকি অনেক অভিভাবক গালমন্দসহ স্কুলশিক্ষকদের সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন।

চাঁদপুরে কর্মরত বেশ কয়েকজন শিক্ষক জানান, অনেক অভিভাবক উপবৃত্তির টাকা না পেলে বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকদের দোষারোপ করেন,-শিক্ষকেরা টাকা মেরে দিয়েছেন। তাদের কোনোভাবেই বোঝানো সম্ভব হচ্ছে না যে, এই টাকা সংঘবদ্ধ কোনো চক্র তুলে নিয়ে গেছে।

এ নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়ন সৃষ্টি হচ্ছে। এর ওপর রয়েছে অভিভাবকের ফোন নম্বর সমস্যা। অনেক ফোন নম্বরধারী আগের দেওয়া নম্বর হয় ব্যবহার করছেন না কিংবা ওই নম্বরধারী কর্মসূত্রে এলাকার বাইরে আছেন।

এদিকে টাকা খোয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার কোনো প্রতিকারও নেই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিসের কাছে। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘ বিরতির পর বিদ্যালয় খুলে দেওয়ায় এখন অভিভাবকেরা তাদের টাকার জন্য বিদ্যালয়গুলোতে ভিড় করছেন। সঙ্গে তারা আরও দাবি করছেন, জুলাই-সেপ্টেম্বর এই তিন মাসের টাকা যেন কোনোভাবেই নয়-ছয় না হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং যা ইতিপূর্বে ছিল ‘থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস’-এর। কয়েক দিন আগে এই মোবাইল সেবা ডাক বিভাগের বলে জানিয়েছেন ডাক বিভাগের মহাপরিচালক।

চাঁদপুরে কর্মরত শিক্ষকেরা সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা দেওয়ার আগে স্ব-স্ব মোবাইল নম্বরে আগাম এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দিলে তা হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসবে। পাশাপাশি শিক্ষা কার্যালয়ের নিজস্ব কাস্টমার কেয়ারের মাধ্যমে দ্রুত সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিলে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাহাব উদ্দিন চাঁদপুর জেলায় হ্যাকিং করে টাকা নিয়ে গেছে এ রকম কোনো লিখিত অভিযোগ তিনি পাননি বলে জানান। টেকনিক্যাল কারণে দুই-একটা সমস্যা হয়তো হতে পারে বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত