Ajker Patrika

লঞ্চে যাত্রীদের চাপ, বিশৃঙ্খলা

বরিশাল প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ মে ২০২২, ১১: ৫৭
লঞ্চে যাত্রীদের চাপ, বিশৃঙ্খলা

বরিশাল থেকে ঢাকাগামী লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপন শেষে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের ঠেসে ভরা হয় বিলাসবহুল লঞ্চে। গত দুই দিনের এমন ঘটনায় বরিশাল নৌবন্দরে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত শুক্রবার কয়েকটি লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে জরিমানা করা হয়েছে। ধারণক্ষমতার যাত্রী উঠলে আগেই লঞ্চকে ঘাট ছাড়তে বাধ্য করছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জানা গেছে, গতকাল শনিবার বরিশাল বন্দর থেকে ১৫টির মতো বিলাসবহুল নৌযান ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। আগের দিন শুক্রবার বরিশাল নৌবন্দর থেকে ১৪টি লঞ্চ রাজধানীর উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এর অধিকাংশই অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে। সন্ধ্যার মধ্যে হাজারো যাত্রীর ভিড়ে নৌবন্দরে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বারবার লঞ্চ ছেড়ে দিতে বললেও মালিকেরা গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না।

সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাস্টার মজিবর রহমান বলেন, ‘আমরা তো ওভারলোডিং চাই না। কিন্তু লঞ্চ ছাড়ার নির্দিষ্ট সময় না থাকায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।’ তিনি জানান, তাঁর লঞ্চের ধারণক্ষমতা ১ হাজার ৩৫০ জন। শুক্রবার ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ যাত্রী হয়েছিল। তবে এই ধারণক্ষমতার ওপর লঞ্চ চলাচল নির্ভর করে না। ভ্রাম্যমাণ আদালত লঞ্চ আগে ছাড়তে বাধ্য করায় অনেকেই যেতে পারেননি। কোনো কোনো যাত্রী নদীতে পড়ে গেলে আনসাররা উঠিয়েছেন। আবার কারও লাগেজ অন্যে নিয়ে গেছে। তিনি এই অবস্থার জন্য বিআইডব্লিউটিএর গাফিলতিকে দায়ী করেছেন। শনিবারও যাত্রীর চাপ থাকায় সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।

লঞ্চগুলোয় অতিরিক্ত যাত্রী বহন বন্ধে শুক্রবার বিকেল থেকেই জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তারিকুল ইসলাম ও মুশফিকুর রহমান নৌবন্দরে তদারকি করেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তারিকুল ইসলাম বলেন, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী তোলা এবং ছাদে যাত্রী ওঠায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পারাবত-১০ ও ১৮ এবং সুরভী-৯ লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

বরিশাল নৌবন্দর কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে মোট ১৪টি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে যাত্রী নিয়ে বরিশাল নৌবন্দর ছেড়ে গেছে। তবে সন্ধ্যা ৭টার পরও বিপুলসংখ্যক যাত্রী ঘাটে অপেক্ষমাণ থাকায় রাজারহাট-বি নামে আরও একটি লঞ্চ বিশেষ ট্রিপে ওই যাত্রীদের নিয়ে রাত ৮টায় বরিশাল ত্যাগ করে। গতকাল শনিবারও বন্দরে একই রকমের যাত্রীর চাপ বলে জানান মোস্তাফিজ।

তবে লঞ্চ মালিক সমিতির সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, লঞ্চ ছাড়ার সময় শুক্রবার খুব বিশৃঙ্খলা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছেন। তাঁর সুন্দরবন লঞ্চেরই ভিআইপিসহ ৫৫টি কেবিন খালি গেছে। র‍্যাব-৮ এর সিইওর সুন্দরবন ১০-এ যাওয়ার কথা ছিল। লঞ্চ আগে ছেড়ে দেওয়ায় তিনি শুক্রবার যেতে পারেননি। এমন অনেক ভিআইপি যেতে পারেননি।

রিন্টু আরও বলেন, ওভারলোডিং তেমন কিছুই না। ঢাকা থেকে তো এতটা যাত্রী নিয়েই ছেড়ে এসেছে।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল নৌযাত্রী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আ. রশিদ নিলু বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তায় তাঁরা প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছেন। কিন্তু মালিকেরা অতিলোভের কারণে ওভারলোডিং করে ঈদে যাত্রীদের ঝুঁকিতে ফেলছেন।

বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক কবির হোসেন বলেন, শনিবার মানামী, সুরভী-৮, অ্যাডভেঞ্চার-১, কীর্তনখোলা-১০, সুন্দরবন-১০, কুয়াকাটা-২, আওলাদা-১০, সুন্দরবন-১১, সুরভী-৭, পারাবত-১২, গ্রিনলাইন, অ্যাডভেঞ্চার-৬সহ প্রায় ১৫টি নৌযান ঢাকার উদ্দেশে বরিশাল ছেড়ে যায়। শনিবার যাত্রী বেশি হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর ছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত