Ajker Patrika

জীবনানন্দ দাশ

সম্পাদকীয়
জীবনানন্দ দাশ

জীবনানন্দ দাশ ছিলেন বিংশ শতাব্দীর প্রধান আধুনিক বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক। ত্রিশের দশকের পঞ্চপাণ্ডবের মধ্যে অন্যতম।

তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ঝরাপালক’ প্রকাশিত হয় ১৯২৭ সালে। প্রথম গ্রন্থেই কবির পদবির ‘দাশগুপ্ত’র ‘গুপ্ত’ লুপ্ত হয়ে যায়।

তিনি ১৮৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। বরিশালের ব্রজমোহন স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, বি এম কলেজ থেকে আইএ এবং কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বিএ ও এমএ পাস করেন।

মানুষ হিসেবে তিনি ছিলেন খুবই লাজুক এবং আত্মভোলা ধরনের। অসম্ভব পড়ুয়া। ভালোবাসতেন একাকিত্ব ও নিঃসঙ্গতা। কলকাতায় পড়ন্ত দুপুরে যখন বাড়ি থেকে বেরোতেন, রাস্তা থাকত জনবিরল। প্রখর রোদে এলোমেলো একা একা ঘুরে বেড়াতেন। বড্ড ঘরকুনো, অসামাজিক লোক ছিলেন তিনি।

তাঁর প্রথম কাব্যে নজরুল ইসলামের প্রভাব থাকলেও দ্বিতীয় কাব্য থেকেই তিনি হয়ে ওঠেন মৌলিক ও ভিন্ন পথের অনুসন্ধানী। বুদ্ধদেব বসু তাঁকে ‘নির্জনতম কবি’ এবং অন্নদাশঙ্কর রায় ‘শুদ্ধতম কবি’ অভিধায় আখ্যায়িত করেছেন। তিনি ছিলেন একজন কালসচেতন ও ইতিহাসচেতন কবি।

তিনি কলকাতা সিটি কলেজে ১৯২২ সালে ইংরেজি সাহিত্যে অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৯২৯ সালে সদ্য প্রতিষ্ঠিত বাগেরহাট প্রফুল্লচন্দ্র কলেজে যোগ দেন। কিন্তু কিছুদিন পর চাকরি ছেড়ে কলকাতায় চলে যান। ওই বছরই তিনি দিল্লির রামযশ কলেজে যোগ দেন এবং ১৯৩০ সালে আবার দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। পরে কিছুকাল বেকার থেকে জীবনানন্দ ১৯৩৫ সালে বরিশালের বি এম কলেজে যোগদান করেন। এভাবে তাঁর কর্মজীবন বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনায় এবং মাঝে মাঝে অন্য পেশায় অতিবাহিত হয়। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের কিছু আগে তিনি সপরিবারে কলকাতায় চলে যান।

ঔপন্যাসিক ও গল্পকার হিসেবে তাঁর স্বতন্ত্র প্রতিভা এবং নিভৃত সাধনার উন্মোচন ঘটে মৃত্যুর পরে। উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে মাল্যবান, সুতীর্থ, জলপাইহাটি, জীবনপ্রণালী, বাসমতীর উপাখ্যান ইত্যাদি। তাঁর রচিত গল্পের সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক। তিনি প্রবন্ধও লিখেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত