Ajker Patrika

চলনবিলে শামুক নিধন নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২১, ১৯: ০২
চলনবিলে শামুক নিধন নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য

চলনবিলের পানি কমতে শুরু করেছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিলের তলদেশ থেকে জাল দিয়ে ছেঁকে তোলা হচ্ছে শামুক। শামুকের সঙ্গে উঠে আসছে জলজ উদ্ভিদ ও লতাগুল্ম। এতে করে নষ্ট হচ্ছে চলনবিলের জীববৈচিত্র্য। কিন্তু শামুক নিধন বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

শামুক আহরণের সঙ্গে জড়িতরা জানান, চলনবিল থেকে আহরণ করা শামুক খামারের হাঁস ও মাছের খাদ্য ছাড়াও চুন তৈরিতে ব্যবহার হয়ে থাকে। স্থানীয় খামারিদের চাহিদা মেটানোর পরও দিনে ১৫ থেকে ২০ ট্রাক করে শামুক ছড়িয়ে পড়ছে দেশের কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, বরিশাল, বাগেরহাট, যশোরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে।

গুরুদাসপুর উপজেলা মৎস্য দপ্তরের তথ্যমতে, শামুক হচ্ছে প্রকৃতির ফিল্টার। বিলের তলদেশে বিচরণ করা এসব শামুক পানি পরিষ্কার করে থাকে। মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী শামুক, জলজ উদ্ভিদ ও লতাগুল্ম খেয়ে বেঁচে থাকে। অতিরিক্ত মাত্রায় শামুক নিধন করা হলে খাদ্যাভাবে মাছ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তা ছাড়া শামুক ও জলজ উদ্ভিদ নিধন হলে মাটির ক্যালসিয়াম কমে গিয়ে ফসলের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার রুহাই, বিলশা, পিপলা, সিংড়া ও তাড়াশ উপজেলার চলনবিল থেকে জাল দিয়ে বিলের তলদেশ ছেঁকে তোলা হয় শামুক। সংগ্রহ করা এসব শামুক সড়ক সংলগ্ন জায়গায় এনে বস্তায় ভরে তোলা হয় ট্রাকে।

কয়েকজন শামুক সংগ্রহকারী জানান, মই জাল দিয়ে রাতভর তাঁরা শামুক ধরে নৌকায় রাখেন। সকালে বিক্রির জন্য বিলের ঘাটে নিয়ে আসেন। এভাবে দিনে একজন ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন। শামুক বিক্রির জন্য গুরুদাসপুরের পিপলা হামকুড়িয়া, নাদোসৈয়দপুরসহ বিল এলাকার কমপক্ষে ১০টি জায়গায় গড়ে উঠেছে পাইকারি মোকাম। তাঁদের ভাষ্যমতে, শীতে হাঁসের ডিম বৃদ্ধি ও মাছের বৃদ্ধি (ওজন) বাড়াতে শামুকের চাহিদা অনেক বেশি। বাড়তি উপার্জনের পথ হিসেবে শামুক ধরার পেশাটি বেছে নিয়েছেন তাঁরা।

হাসেম মৃধা নামে বরিশালের এক হাঁসের খামারি জানান, ১০০ থেকে ১১০ টাকায় এক বস্তা শামুক কিনছেন তাঁরা। যেখানে এক বস্তা হাঁসের খাবার কিনতে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত গুনতে হয়। কিন্তু শামুকে সাশ্রয় বেশি। তা ছাড়া খাদ্য হিসেবে শামুক পেলে বেশি ডিম দিয়ে থাকে হাঁস। মাংস বৃদ্ধি পায়। এ কারণে চলনবিলের শামুক ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন জেলায়। ট্রাক ভাড়া বাদ দিয়ে লাভও থাকে ভালো।

গুরুদাসপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলমগীর কবির বলেন, কিছু অসচেতন মানুষ না বুঝে শামুক নিধন, বিক্রি ও শামুক ভেঙে জীবিকার পথ বেছে নেন। শামুক কমে যাওয়ার পেছনে প্রজনন মৌসুমে শামুক ধরা ও বিক্রিসহ নানা কারণকে দায়ী করেন তিনি। শামুক রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত