Ajker Patrika

ডলার বেচে ৫০৪ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা ১২ ব্যাংকের

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২২, ১৩: ৫৬
ডলার বেচে ৫০৪ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা ১২ ব্যাংকের

ডলার কারসাজিতে ১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করেছে ১২টি ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর কারসাজির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো নিয়ম ভঙ্গ করে অতিরিক্ত মুনাফা করেছে। আবার কয়েকটি ব্যাংক ডলার ক্রয়-বিক্রয়ের মিথ্যা তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়েছে। অভিযুক্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে ৪টি ব্যাংক আমদানিকারকদের কাছে বেশি দামে ডলার বিক্রয় করেছে। ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ডলার কারসাজির প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার অধিকতর তদন্তে নেমেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শন দল। ঘটনার চূড়ান্ত প্রমাণ পেলে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ডলার কারসাজি রোধে জড়িত সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সূত্র জানায়, প্রাইম ব্যাংক চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাসে ৫০৪ শতাংশ বা ১২৬ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। একই সময়ে এনসিসি ব্যাংক ৫০০ শতাংশ বা ১০০ কোটি টাকা, ব্র্যাক ব্যাংক ৪১৭ শতাংশ বা ৭৫ কোটি টাকা, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক ৪০৩ শতাংশ বা ১১৭ কোটি টাকা, ঢাকা ব্যাংক ৩৫৩ শতাংশ বা ১০৬ কোটি টাকা, সিটি ব্যাংক ৩৪০ শতাংশ বা ১৩৬ কোটি টাকা, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ২৪৫ শতাংশ বা ১২০ কোটি টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ২৩৪ শতাংশ বা ৯৭ কোটি টাকা, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ২০৫ শতাংশ বা ১৩৫ কোটি টাকা, ইস্টার্ন ব্যাংক ১৫৯ শতাংশ বা ৪৩ কোটি টাকা এবং ইসলামী ব্যাংক ১৪০ শতাংশ বা ১৩৬ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, ডলার কারসাজি করে অস্বাভাবিক মুনাফা করেছে ১২টি ব্যাংক। সেগুলো হলো ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক।

জড়িত যেসব ব্যাংক: ব্র্যাক, ডাচ-বাংলা, প্রাইম, সিটি, সাউথইস্ট, ব্যাংক এশিয়া, ইসলামী, ইউসিবিএল, মার্কেন্টাইল, ঢাকা, এনসিসি, শাহজালাল, ইবিএল।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার কারসাজি করে অতি মুনাফা করার দায়ে ৬টি ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা পরিচালককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। তার আগে ওই ৬ ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানদের দায়িত্ব থেকে সরাতে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ্‌-বাংলা, প্রাইম ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। এ ছাড়া ডলারের কারসাজি রোধে খোলাবাজার ও এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ গত সোমবার ১৩টি মানি চেঞ্জার্স প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের হিসাব চেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (বিএফআইইউ)।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডলারে অতিরিক্ত মুনাফার বিষয়ে আগে ছয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আরও ডজনখানেক ব্যাংকের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব কারসাজি নিয়ে আমরা অধিকতর তদন্ত করছি। শিগগিরই চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। পরবর্তী সময়ে উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করে এসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘অতিরিক্ত মুনাফা করা কোন আইনে অপরাধ, তা বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করা উচিত। তবে ভুল তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দেওয়াটা অপরাধ। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেগুলেটরি বডি হিসেবে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে কেন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে সেটিও পরিষ্কার না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিন্দুর ঘিরে আলোচিত কে এই কর্নেল সোফিয়া কুরেশি

পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে ‘প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের’ নির্দেশ

কাশ্মীরে বিধ্বস্ত বিমানের অংশবিশেষ ফরাসি কোম্পানির তৈরি, হতে পারে রাফাল

সীমান্তে সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী

পাকিস্তানে হামলায় ‘লোইটারিং মিউনিশনস’ ব্যবহারের দাবি ভারতের, এটি কীভাবে কাজ করে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত