মন্টি বৈষ্ণব
আজকের যুগে নারীরা প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বের হচ্ছেন। নিজের কন্যাসন্তানকে শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী বানাচ্ছেন। আজকের নারীরা পাহাড়-পর্বতে চড়ে বেড়াচ্ছেন, অধ্যয়নের জন্য দেশের বাইরেও যাচ্ছেন। এমনকি যে খেলাধুলা থেকে নারীদের একসময় দূরে রাখা হতো, সেখানেও এখন নারীরা সাফল্যের চিহ্ন রাখছেন। ফুটবল-ক্রিকেট খেলায় নারীদের সাফল্য নজর কাড়ছে।
একটা সময় আমাদের এই সমাজ এমন ছিল না। তখন সমাজব্যবস্থা ছিল কণ্টকময়। নারীরা তখন ছিলেন অবরোধবাসিনী। নারীদের সেই অন্ধকার বন্দিদশা থেকে আলোকবর্তিকার সন্ধান দেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। সেই আলোয় ঝলসে যায় রক্ষণশীল সমাজের চরিত্র। এ কারণে ইতিহাসে মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার গুরুত্ব অনন্য। সমাজ-রাষ্ট্রের অচলায়তন ভেঙে তিনি আলোর পথ দেখান।
১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া জন্মগ্রহণ করেন। এর ৫২ বছর পর ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর মারা যান তিনি। একই দিন জন্ম ও মৃত্যুর ঘটনা বিরল।
নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া তৎকালীন প্রথাগত ধারার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন, যে দ্রোহের কারণে আজ নারীরা ঘর থেকে বের হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর লড়াই করছেন। প্রথাগত মুসলিম সংস্কৃতির মধ্যে বেড়ে উঠেছিলেন রোকেয়া। কিন্তু তিনি প্রথাগত মুসলিম নারীর মতো হননি। তিনি তাঁর লেখনীতে অশিক্ষা, গোঁড়ামি ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। বেগম রোকেয়াই ছিলেন প্রথম নারী, যিনি নারীদের পশ্চাৎপদ অবস্থানের মূল কারণ শনাক্ত করেন।
বেগম রোকেয়া নারী জাতির অবনতিতে জানতে চেয়েছিলেন, ‘পাঠিকাগণ। আপনারা কি কোন দিন আপনাদের দুর্দ্দশার বিষয় চিন্তা করিয়া দেখিয়াছেন? এই বিংশ শতাব্দীর সভ্যজগতে আমরা কি দাসী? পৃথিবী হইতে দাস ব্যবসা উঠিয়া গিয়াছে শুনিতে পাই, কিন্তু আমাদের দাসত্ব গিয়াছে কি? না। আমরা দাসী কেন?’
বেগম রোকেয়া নারীর প্রথাগত কাঠামো ভেঙে নতুন কাঠামো তৈরির কথা বলেন। যে মানসিক দাসত্বের কারণে নারীরা পিছিয়ে পড়েন, বেগম রোকেয়া সেই মানসিক দাসত্ব থেকে নারীকে মুক্ত করার পথ দেখান। তিনি নারীদের স্কুল-কলেজের চৌকাঠ পেরিয়ে ঘরের বাইরে আসতে শিখিয়েছেন। তাঁর লেখা ‘মতিচুর’, ‘অবরোধবাসিনী’, ‘পদ্মরাগ’ প্রভৃতি গ্রন্থে নারীদের বন্দিদশার যে চালচিত্র আমরা দেখতে পাই, তা পুরো নারী জাতির প্রতিবাদী চিত্র। তিনি তাঁর লেখনীর মাধ্যমে কুসংস্কার প্রথা ভেঙে নারীদের অবরোধবাসিনী থেকে মুক্ত হওয়ার পথের সন্ধান দেন।
বেগম রোকেয়া ছিলেন অদম্য সাহসীদের মধ্যে একজন। এই সাহসের কারণে তিনি রক্ষণশীল সমাজের বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন। তিনি তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পরে মাত্র পাঁচজন ছাত্রী নিয়ে ভাগলপুরে একটি বালিকা বিদ্যালয়ের সূচনা করেন। কিন্তু এই বিদ্যালয় স্থাপনের প্রথম উদ্যোগ অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়। পরে কলকাতায় গিয়ে তিনি আরও একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন ১৯১১ সালে। বিদ্যালয়টির নাম ‘সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল’। ১৯১৬ সালের মধ্যে সেখানে ছাত্রীসংখ্যা ১০০ পেরিয়ে যায়।
বেগম রোকেয়া লেখক হিসেবে একাধারে গল্প-কবিতা-উপন্যাস লিখেছেন। সংগঠক হিসেবে রোকেয়া স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। নারী শিক্ষা বিস্তারে তিনি পরতে পরতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তবু তিনি পিছপা হননি। এ কথা অনস্বীকার্য যে, নারী জাগরণে অনন্য ভূমিকা রাখেন বেগম রোকেয়া।
বেগম রোকেয়া যে সমাজব্যবস্থা চেয়েছিলেন, তাঁর চিন্তা যেদিকে ধাবিত হয়েছিল, তা কি আমরা আজ অনুধাবন করছি? আমাদের প্রয়োজন রোকেয়ার জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা। বাংলাদেশ সরকার প্রতিবছর ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস উদ্যাপন করে। দিবস উদ্যাপনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া আমাদের মননে গেঁথে থাকবেন। তবু আমাদের প্রাত্যহিক জীবনেও রোকেয়ার আদর্শ স্মরণ রাখতে হবে। বেগম রোকেয়ার চিন্তা-চেতনার মূল বিষয়বস্তু ছিল নারীর পশ্চাৎপদতা। তিনি এই পশ্চাৎপদতা ভাঙতে চেয়েছিলেন। সেই জায়গা থেকে আমরা যেন নিজেদের দূরে সরিয়ে না রাখি।
আজকের যুগে নারীরা প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বের হচ্ছেন। নিজের কন্যাসন্তানকে শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী বানাচ্ছেন। আজকের নারীরা পাহাড়-পর্বতে চড়ে বেড়াচ্ছেন, অধ্যয়নের জন্য দেশের বাইরেও যাচ্ছেন। এমনকি যে খেলাধুলা থেকে নারীদের একসময় দূরে রাখা হতো, সেখানেও এখন নারীরা সাফল্যের চিহ্ন রাখছেন। ফুটবল-ক্রিকেট খেলায় নারীদের সাফল্য নজর কাড়ছে।
একটা সময় আমাদের এই সমাজ এমন ছিল না। তখন সমাজব্যবস্থা ছিল কণ্টকময়। নারীরা তখন ছিলেন অবরোধবাসিনী। নারীদের সেই অন্ধকার বন্দিদশা থেকে আলোকবর্তিকার সন্ধান দেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। সেই আলোয় ঝলসে যায় রক্ষণশীল সমাজের চরিত্র। এ কারণে ইতিহাসে মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার গুরুত্ব অনন্য। সমাজ-রাষ্ট্রের অচলায়তন ভেঙে তিনি আলোর পথ দেখান।
১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর বেগম রোকেয়া জন্মগ্রহণ করেন। এর ৫২ বছর পর ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর মারা যান তিনি। একই দিন জন্ম ও মৃত্যুর ঘটনা বিরল।
নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া তৎকালীন প্রথাগত ধারার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন, যে দ্রোহের কারণে আজ নারীরা ঘর থেকে বের হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর লড়াই করছেন। প্রথাগত মুসলিম সংস্কৃতির মধ্যে বেড়ে উঠেছিলেন রোকেয়া। কিন্তু তিনি প্রথাগত মুসলিম নারীর মতো হননি। তিনি তাঁর লেখনীতে অশিক্ষা, গোঁড়ামি ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। বেগম রোকেয়াই ছিলেন প্রথম নারী, যিনি নারীদের পশ্চাৎপদ অবস্থানের মূল কারণ শনাক্ত করেন।
বেগম রোকেয়া নারী জাতির অবনতিতে জানতে চেয়েছিলেন, ‘পাঠিকাগণ। আপনারা কি কোন দিন আপনাদের দুর্দ্দশার বিষয় চিন্তা করিয়া দেখিয়াছেন? এই বিংশ শতাব্দীর সভ্যজগতে আমরা কি দাসী? পৃথিবী হইতে দাস ব্যবসা উঠিয়া গিয়াছে শুনিতে পাই, কিন্তু আমাদের দাসত্ব গিয়াছে কি? না। আমরা দাসী কেন?’
বেগম রোকেয়া নারীর প্রথাগত কাঠামো ভেঙে নতুন কাঠামো তৈরির কথা বলেন। যে মানসিক দাসত্বের কারণে নারীরা পিছিয়ে পড়েন, বেগম রোকেয়া সেই মানসিক দাসত্ব থেকে নারীকে মুক্ত করার পথ দেখান। তিনি নারীদের স্কুল-কলেজের চৌকাঠ পেরিয়ে ঘরের বাইরে আসতে শিখিয়েছেন। তাঁর লেখা ‘মতিচুর’, ‘অবরোধবাসিনী’, ‘পদ্মরাগ’ প্রভৃতি গ্রন্থে নারীদের বন্দিদশার যে চালচিত্র আমরা দেখতে পাই, তা পুরো নারী জাতির প্রতিবাদী চিত্র। তিনি তাঁর লেখনীর মাধ্যমে কুসংস্কার প্রথা ভেঙে নারীদের অবরোধবাসিনী থেকে মুক্ত হওয়ার পথের সন্ধান দেন।
বেগম রোকেয়া ছিলেন অদম্য সাহসীদের মধ্যে একজন। এই সাহসের কারণে তিনি রক্ষণশীল সমাজের বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন। তিনি তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পরে মাত্র পাঁচজন ছাত্রী নিয়ে ভাগলপুরে একটি বালিকা বিদ্যালয়ের সূচনা করেন। কিন্তু এই বিদ্যালয় স্থাপনের প্রথম উদ্যোগ অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়। পরে কলকাতায় গিয়ে তিনি আরও একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন ১৯১১ সালে। বিদ্যালয়টির নাম ‘সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল’। ১৯১৬ সালের মধ্যে সেখানে ছাত্রীসংখ্যা ১০০ পেরিয়ে যায়।
বেগম রোকেয়া লেখক হিসেবে একাধারে গল্প-কবিতা-উপন্যাস লিখেছেন। সংগঠক হিসেবে রোকেয়া স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। নারী শিক্ষা বিস্তারে তিনি পরতে পরতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তবু তিনি পিছপা হননি। এ কথা অনস্বীকার্য যে, নারী জাগরণে অনন্য ভূমিকা রাখেন বেগম রোকেয়া।
বেগম রোকেয়া যে সমাজব্যবস্থা চেয়েছিলেন, তাঁর চিন্তা যেদিকে ধাবিত হয়েছিল, তা কি আমরা আজ অনুধাবন করছি? আমাদের প্রয়োজন রোকেয়ার জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা। বাংলাদেশ সরকার প্রতিবছর ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস উদ্যাপন করে। দিবস উদ্যাপনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া আমাদের মননে গেঁথে থাকবেন। তবু আমাদের প্রাত্যহিক জীবনেও রোকেয়ার আদর্শ স্মরণ রাখতে হবে। বেগম রোকেয়ার চিন্তা-চেতনার মূল বিষয়বস্তু ছিল নারীর পশ্চাৎপদতা। তিনি এই পশ্চাৎপদতা ভাঙতে চেয়েছিলেন। সেই জায়গা থেকে আমরা যেন নিজেদের দূরে সরিয়ে না রাখি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪