Ajker Patrika

সাঈদ আহমদ

সম্পাদকীয়
সাঈদ আহমদ

নানামুখী প্রতিভার অধিকারী হলেও সাঈদ আহমদ মূলত নাট্যকার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন দেশে-বিদেশে। ষাটের দশকে তিনি আমাদের দেশের নাট্যচর্চায় আধুনিকতার সংযোজন করেছিলেন ইউরোপীয় ধারার ‘অ্যাবসার্ড’ নাটক রচনার মধ্য দিয়ে।

তিনি একই সঙ্গে সংগীতকার ও চিত্রকলার সমালোচক হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে ১৯৫৪ সালে স্নাতকোত্তর এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস থেকে ১৯৫৬ সালে পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি লাভ করেন।পেশাগত জীবনে ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা।

প্রকৃতির শক্তির বিরুদ্ধে মানুষ কীভাবে লড়াই করে টিকে থাকে, তাঁর নাটকে তা তীব্রভাবে উঠে এসেছে। কালবেলা, মাইলপোস্ট, এক দিন প্রতিদিন, শেষ নবাব ইত্যাদি তাঁর প্রসিদ্ধ নাটক। তাঁর নাটক অনূদিত হয়েছে ফরাসি, জার্মান, ইতালি, উর্দু ও পাঞ্জাবি ভাষায়। নাট্যকার ও চিত্র-সমালোচক হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বক্তৃতা দিয়েছেন এবং সেমিনার পেপার পড়েছেন।

আইএমএফে কাজ করার সময় তিনি জর্জটাউন, আমেরিকান ও ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটির ‘গেস্ট লেকচারার’ ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত ও নাট্যকলা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করেছেন।

বাংলাদেশের নাটককে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি দানে তাঁর উজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। নাটকে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ১৯৭৫ সালে ওয়াশিংটন এরিনা মঞ্চের নাট্যশালার দর্শক আসনের একটি সারি তাঁর নামে অঙ্কিত করা হয়েছে, যা আর কোনো বাঙালি নাট্যকারকে নিয়ে হয়নি। ১৯৯৩ সালে ফরাসি সরকারের পক্ষ থেকে সম্মাননা ‘লিজন দ্য অনার’ পেয়েছেন।

তিনি বিশ্ব পাঠকের কাছে বাংলাদেশের জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, এস এম সুলতানের মতো সৃজনশীল ব্যক্তিদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার ব্যাকুলতায় ইংরেজিতে লেখা শুরু করেছিলেন। কিন্তু একসময় তাঁরই লেখা নাটক বিদেশি ভাষায় অনূদিত হওয়ার কারণে তিনি হয়ে উঠলেন বিশ্ব নাট্যকার।

বহু বিচিত্র কর্মসম্পাদনের মধ্য দিয়ে জীবনকে অর্থবহ করেছেন তিনি। আমৃত্যু থিয়েটার ও বাংলা নাটকের উন্নয়নে কাজ করা এ মানুষটি ২০১০ সালের ২১ জানুয়ারি প্রয়াত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত