Ajker Patrika

ডোপ টেস্টে ভোগান্তি সেবাপ্রার্থীদের

ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬: ০৬
ডোপ টেস্টে ভোগান্তি সেবাপ্রার্থীদের

ময়মনসিংহে ডোপ টেস্টে হয়রানিসহ মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সেবাপ্রার্থীরা। তবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে ডোপ টেস্ট চালু হলে সেবাপ্রার্থীরা যথাযথ সুবিধা পাবেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সরকারি চাকরিতে যোগদান, মোটরযানচালকদের নতুন লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়নের জন্য ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক। এর মাধ্যমে মাদকমুক্ত সনদ দাখিল করতে হয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে এ সনদ নিয়ে ময়মনসিংহে সেবাপ্রার্থীদের হয়রানির পাশাপাশি গুনতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা।

ময়মনসিংহ জেলা হালকা মোটরযান পরিবহন শাখা কমিটির সহসভাপতি আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার সংগঠনে প্রায় এক হাজার সদস্য রয়েছে। নতুন লাইসেন্স কিংবা নবায়ন করতে গেলে আমাদের হয়রানির পাশাপাশি অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়। এর মধ্যে যোগ হয়েছে ডোপ টেস্ট। কর্তৃপক্ষের পছন্দ অনুযায়ী প্রাইভেট হাসপাতালে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। টাকাও লাগছে আড়াই থেকে তিন হাজার।’ এ সময় হয়রানি বন্ধের পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালে ডোপ টেস্ট চালুর দাবি জানান তিনি।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারা দেশে সরকারি হাসপাতালে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক হলেও উল্টো চিত্র ময়মনসিংহে। মমেক হাসপাতালে ভালো মানের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হলেও নেই ডোপ টেস্টের সুবিধা। এ অবস্থায় সেবাপ্রার্থীদের নগরীর চারটি ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতালে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছেন জেলার সিভিল সার্জন ও বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ময়মনসিংহ সার্কেলের কর্মকর্তারা।

প্রান্ত ও ইউনিয়ন স্পেশালাইজড হাসপাতাল, পপুলার ও মেমোরিয়াল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই টেস্ট করাতে হচ্ছে। সেবাপ্রার্থীরা জানিয়েছেন, ওই নির্দিষ্ট হাসপাতালগুলোয় ডোপ টেস্টের জন্য খরচ দিতে হচ্ছে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। এটি সরকারি হাসপাতালে খরচের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি বলে জানা গেছে।

নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন লাইসেন্স করতে গিয়ে ডোপ টেস্টে ভোগান্তির শিকার হয়েছি। সরকারি হাসপাতালে এ টেস্ট করতে ৯০০ টাকা খরচ হলেও নির্দিষ্ট হাসপাতালে তিন গুণ বেশি টাকা দিতে হয়েছে।’

পরিবহনচালক ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমাদের ডোপ টেস্ট করানোর জন্য নির্দিষ্ট হাসপাতাল বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এখানে মনে হচ্ছে অনেকে কমিশন পাচ্ছে। আমি টাকা দিয়ে টেস্ট করাব, যেখানে মন চায় সেখানে করাব। কিন্তু বাধ্যতামূলক করে দেওয়াটা ঠিক হয়নি।’

এ বিষয়ে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার নূর ইসলাম বলেন, ‘ডোপ টেস্ট করাতে হলে পাঁচটি পরীক্ষা করতে হয়। প্রতিটি পরীক্ষার জন্য ৫০০ করে টাকা নেওয়া হয়। মাঝেমধ্যে কিছু ছাড়ও দেওয়া হয়। তবে পরীক্ষা করানোর জন্য কারও সঙ্গে কোনো চুক্তি হয়নি।’

ময়মনসিংহ বিআরটিএর সহকারী পরিচালক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘যে চার হাসপাতালের নাম দেওয়া আছে, তা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকেই নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে আমার কিছু করার নেই।’

ময়মনসিংহে সরকারি হাসপাতালে ডোপ টেস্টের সুবিধা নেই জানিয়ে সিভিল সার্জন মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, ডোপ টেস্ট সেবাটি চালুর জন্য মমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখানে চালু হলে সেবাপ্রার্থীরা সহজে ডোপ টেস্ট করাতে পারবেন।

চারটি ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতালে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে যোগদানকারীদের জন্য আগে থেকেই এ হাসপাতালগুলো নির্ধারণ করা ছিল। সম্প্রতি বিআরটিএ থেকে এ বিষয়ে আমার কাছে মতামত চাইলে ওই হাসপাতালগুলোর কথা বলেছি। এখানে আমার কোনো স্বার্থ নেই।’

এদিকে ডোপ টেস্ট চালুর বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে জানিয়ে মমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ফজলুল করিম বলেন, মমেক হাসপাতালে ডোপ টেস্ট চালুর বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন। তবে অচিরেই চালু হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিৎকার শুনে ছুটে আসা স্থানীয়রা ধর্ষণের শিকার নারীকেই মারধর করে

বিমানবন্দরের প্রকল্পে ‘অসম’ চুক্তি, স্বার্থের সংঘাতে জড়িয়েছেন ঢাকায় ইউএই রাষ্ট্রদূত

মন্ত্রীর আত্মীয়তাই ‘যোগ্যতা’

আদানিকে আরও ৩৮৪ মিলিয়ন ডলার দিল বাংলাদেশ, মোট পরিশোধ ১.৫ বিলিয়ন

অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে দুই বন্ধুর ধর্ষণ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত