ফারুক মেহেদী, ঢাকা
ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে বিশ্ববাজার আর দেশের বাজারে উল্টো খেলা চলছে। বিশ্ববাজারে যখন এর দাম সহনীয় হয়ে আসছে; তখন দেশের বাজারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের আবেদনে সায় দিয়ে আয়োজন করে দাম বাড়ায়। গত এক বছরে দফায় দফায় উত্থান-পতনের পর বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম এখন যে স্তরে এসে ঠেকেছে, তা মাত্র ১৫ শতাংশ বেশি। অথচ একই সময়ে দেশের বাজারে এর দাম এখনো ৩৬ শতাংশ বেশি। আর পাম তেলের দাম বিশ্ববাজারে এক বছরের চেয়ে বরং প্রায় পৌনে ২ শতাংশ কম আছে। কিন্তু দেশের বাজারে এর দাম এখনো ২৪ শতাংশ বেশি।
বিদেশে দাম কমছে। ভাবলাম, আমাদের দেশেও কমবে। এখন শুনছি, দাম কমা দূরের কথা, এখানে লিটারে ৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
তানভীর হাসান, চাকরিজীবী, রাজধানীর শ্যামলীর বাসিন্দা
যে ডলারের দামের অজুহাত দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা, এখন সেই ডলারও পাওয়া যাচ্ছে সহনীয় দামে। প্রায় আড়াই শ কোটি টাকার শুল্ক-কর রেয়াতের সুবিধা ভোক্তাকে না দিয়ে, ব্যবসায়ীরা উল্টো সয়াবিন তেল লিটারে আরও ৭ টাকা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। অথচ সরকার নিজে বেসরকারি রিফাইনারি থেকে নতুন ধার্য করা দামের চেয়ে লিটারে ১৮ থেকে ২১ টাকা পর্যন্ত কম দামে সয়াবিন তেল কিনছে। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ব্যবসায়ীরা নানান অজুহাতে দাম বাড়ান। রাজস্ব ছাড়ের সুবিধাও তাঁরাই পান। এর সুফল ভোক্তারা পান না।
এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘সয়াবিনের দাম বাড়ানোর ঘোষণাটি সরকারের পক্ষ থেকে না এসে রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছ থেকে আসাটা শোভন হয়নি। এতে আমার কাছে মনে হচ্ছে–সরকার কি তাহলে ব্যবসায়ীদের হয়েই কাজ করছে? এ নীতিটা আমার ভালো লাগেনি।’
ভোজ্যতেল মিলমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাম বাড়ানোর কথা জানায়।
একই সঙ্গে গতকাল থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী, বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৯২ টাকা, পাঁচ লিটার ৯৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি লিটার পাম তেলের দাম ১৪৫ টাকা করা হয়েছে।
এদিকে, গত সপ্তাহে সরকারের ক্রয় কমিটি দেশের বেসরকারি ভোজ্যতেল আমদানি ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান সুপার অয়েল রিফাইনারি বা টিকে গ্রুপ থেকে সরাসরি ৪০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। এ জন্য প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম পড়বে ১৭৩ দশমিক ৯৫ টাকা। এ ছাড়া, এডিবল অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের কাছ থেকে ২০ লাখ লিটার, বসুন্ধরা মাল্টিফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড থেকে ৩৫ লাখ লিটার এবং সিনো এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে ৩০ লাখ লিটারসহ মোট ৮৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। এসব সয়াবিন তেল প্রতি লিটার কেনা হবে ১৭১ টাকা করে।
অথচ ওই সব প্রতিষ্ঠান বাজারে একই তেল বিক্রি করবে ১৯২ টাকা লিটার। তারা সরকারের কাছে যদি ১৭১ টাকা ও ১৭৪ টাকা লিটার বিক্রি করতে পারে, তাহলে সাধারণ ভোক্তা থেকে কেন তারা লিটারে বাড়তি ২১ ও ১৮ টাকা বেশি নেবে–এখন এ প্রশ্ন উঠেছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে টিকে গ্রুপের পরিচালক ও বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মোস্তফা হায়দারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। একইভাবে সংগঠনের বর্তমান সভাপতি নুরুল ইসলাম মোল্লাকে ফোন দিয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, উত্তপ্ত বিশ্ববাজারে সয়াবিনের দাম কিছুদিন আগে কমতে শুরু করলে দেশের বাজারে লিটারে ১৪ টাকা কমিয়ে ১৮৫ টাকা করা হয়। এ দাম কমানোর জন্য ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ে মাত্র ৫ শতাংশ ভ্যাট বহাল রেখে আমদানি, পরিশোধন ও ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রির ওপর থাকা সব ধরনের ভ্যাট তুলে নিয়েছিল সরকার। এতে সরকার প্রায় ২৫০ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি মেনে নিয়েও ব্যবসায়ীদের দাবিতে সায় দিয়েছিল, তাতেও যদি ভোক্তাদের লাভ হয়। ওই সময় ভোজ্যতেলের ওপর তিন স্তরে ৩৫ শতাংশ ভ্যাট ধার্য ছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ বিভিন্ন বিশ্লেষণ বলছে, যে হারে শুল্ক-কর কমানো হয়েছে, তাতে ওই সময়ে প্রতি লিটার ভোজ্যতেলের দাম অন্তত ২২ টাকা কমানো উচিত ছিল। অথচ তখন কমানো হয় মাত্র ১৪ টাকা। সম্প্রতি ডলারের দাম বাড়ছে বলে বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁরা লিটারে ২০ টাকা বাড়ানোর দাবি করেছিলেন। অথচ খোলাবাজারে ১২০ টাকায় ওঠা ডলারের দাম এখন কমে ১০৪-১০৫ টাকার কাছাকাছি। মানে, বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমে প্রায় আগের অবস্থায় চলে এসেছে। ডলারের দাম কমছে। শুল্ক-করও বলতে গেলে নেই; তারপরও সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৭ টাকা বাড়ানোয় সবাই বিস্মিত।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী তানভীর হাসান বাস করেন রাজধানীর শ্যামলীতে। তিনি ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর খবরে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘শুনলাম ইউক্রেন থেকে ভোজ্যতেল বিশ্বে রপ্তানি শুরু হয়েছে। বিদেশে এর দামও কমছে। ভাবলাম, আমাদের দেশেও কমবে। এখন শুনছি, দাম কমা দূরের কথা, এখানে লিটারে ৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এ খবর আমাদের কাছে “মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা”-এর মতো।’
বিশ্বখ্যাত নিত্যপণ্য গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকস বলছে, এক বছর আগে সয়াবিন তেলের যে দাম ছিল, বর্তমানের দাম তার থেকে মাত্র ১৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি। আর পাম তেলের দাম এক বছর আগে যা ছিল, বর্তমান দাম তার থেকেও ১ দশমিক ৭২ শতাংশ কম। অথচ সরকারি সংস্থা টিসিবির হিসাব বলছে, গত এক বছরে বিশ্ববাজার থেকে দেশের বাজারে সয়াবিনের দাম এখনো ৩৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেশি রয়েছে। আর পাম তেলের দামও বিশ্ববাজার থেকে দেশের বাজারে এখনো ২৩ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমলেও তা আমলে না নিয়ে, বেশি দামে ডলার কিনে ঋণপত্র খোলায় দাম বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি দিয়ে দাম বাড়িয়ে নেন। অথচ গত এক বছরে ডলারের দাম ৮৪ টাকা থেকে বেড়ে ৯৫ টাকা (কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেট) হয়েছে। আর খোলাবাজারে বেশি বাড়লেও, বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযান, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সপ্রবাহে ইতিবাচক ধারার কারণে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। তাই দামও সহনীয় পর্যায়ে নেমে এসেছে। সামনে আরও কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সয়াবিনের দাম বরং কমানো উচিত ছিল বলে মনে করেন ভোক্তা ও বিশ্লেষকেরা।
এনবিআরের ভ্যাট শাখার সাবেক সদস্য ও শুল্ক বিশেষজ্ঞ আবদুল মান্নান পাটোয়ারি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের কাছে যুক্তির অভাব নেই। তাঁরা দাম বাড়ানোর পক্ষে নানান যুক্তি দেখান। সরকারকে বোঝান।’ তিনি মনে করেন, ব্যবসায়ীদের দাম সহনীয় রাখার নামে শুল্ক-কর ছাড় দিয়ে তেমন লাভ হয় না। এর সুফল ভোক্তারা পায় না। এটা অতীতেও দেখা গেছে। তবে সরকার নিরুপায় হয়ে, তার একটি উপায় হিসেবে এটি ব্যবহার করে বলে তিনি জানান।
ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে বিশ্ববাজার আর দেশের বাজারে উল্টো খেলা চলছে। বিশ্ববাজারে যখন এর দাম সহনীয় হয়ে আসছে; তখন দেশের বাজারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের আবেদনে সায় দিয়ে আয়োজন করে দাম বাড়ায়। গত এক বছরে দফায় দফায় উত্থান-পতনের পর বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম এখন যে স্তরে এসে ঠেকেছে, তা মাত্র ১৫ শতাংশ বেশি। অথচ একই সময়ে দেশের বাজারে এর দাম এখনো ৩৬ শতাংশ বেশি। আর পাম তেলের দাম বিশ্ববাজারে এক বছরের চেয়ে বরং প্রায় পৌনে ২ শতাংশ কম আছে। কিন্তু দেশের বাজারে এর দাম এখনো ২৪ শতাংশ বেশি।
বিদেশে দাম কমছে। ভাবলাম, আমাদের দেশেও কমবে। এখন শুনছি, দাম কমা দূরের কথা, এখানে লিটারে ৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
তানভীর হাসান, চাকরিজীবী, রাজধানীর শ্যামলীর বাসিন্দা
যে ডলারের দামের অজুহাত দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা, এখন সেই ডলারও পাওয়া যাচ্ছে সহনীয় দামে। প্রায় আড়াই শ কোটি টাকার শুল্ক-কর রেয়াতের সুবিধা ভোক্তাকে না দিয়ে, ব্যবসায়ীরা উল্টো সয়াবিন তেল লিটারে আরও ৭ টাকা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। অথচ সরকার নিজে বেসরকারি রিফাইনারি থেকে নতুন ধার্য করা দামের চেয়ে লিটারে ১৮ থেকে ২১ টাকা পর্যন্ত কম দামে সয়াবিন তেল কিনছে। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ব্যবসায়ীরা নানান অজুহাতে দাম বাড়ান। রাজস্ব ছাড়ের সুবিধাও তাঁরাই পান। এর সুফল ভোক্তারা পান না।
এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘সয়াবিনের দাম বাড়ানোর ঘোষণাটি সরকারের পক্ষ থেকে না এসে রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছ থেকে আসাটা শোভন হয়নি। এতে আমার কাছে মনে হচ্ছে–সরকার কি তাহলে ব্যবসায়ীদের হয়েই কাজ করছে? এ নীতিটা আমার ভালো লাগেনি।’
ভোজ্যতেল মিলমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাম বাড়ানোর কথা জানায়।
একই সঙ্গে গতকাল থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী, বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৯২ টাকা, পাঁচ লিটার ৯৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি লিটার পাম তেলের দাম ১৪৫ টাকা করা হয়েছে।
এদিকে, গত সপ্তাহে সরকারের ক্রয় কমিটি দেশের বেসরকারি ভোজ্যতেল আমদানি ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান সুপার অয়েল রিফাইনারি বা টিকে গ্রুপ থেকে সরাসরি ৪০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। এ জন্য প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম পড়বে ১৭৩ দশমিক ৯৫ টাকা। এ ছাড়া, এডিবল অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের কাছ থেকে ২০ লাখ লিটার, বসুন্ধরা মাল্টিফুড প্রোডাক্ট লিমিটেড থেকে ৩৫ লাখ লিটার এবং সিনো এডিবল অয়েল লিমিটেড থেকে ৩০ লাখ লিটারসহ মোট ৮৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। এসব সয়াবিন তেল প্রতি লিটার কেনা হবে ১৭১ টাকা করে।
অথচ ওই সব প্রতিষ্ঠান বাজারে একই তেল বিক্রি করবে ১৯২ টাকা লিটার। তারা সরকারের কাছে যদি ১৭১ টাকা ও ১৭৪ টাকা লিটার বিক্রি করতে পারে, তাহলে সাধারণ ভোক্তা থেকে কেন তারা লিটারে বাড়তি ২১ ও ১৮ টাকা বেশি নেবে–এখন এ প্রশ্ন উঠেছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে টিকে গ্রুপের পরিচালক ও বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মোস্তফা হায়দারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। একইভাবে সংগঠনের বর্তমান সভাপতি নুরুল ইসলাম মোল্লাকে ফোন দিয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, উত্তপ্ত বিশ্ববাজারে সয়াবিনের দাম কিছুদিন আগে কমতে শুরু করলে দেশের বাজারে লিটারে ১৪ টাকা কমিয়ে ১৮৫ টাকা করা হয়। এ দাম কমানোর জন্য ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ে মাত্র ৫ শতাংশ ভ্যাট বহাল রেখে আমদানি, পরিশোধন ও ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রির ওপর থাকা সব ধরনের ভ্যাট তুলে নিয়েছিল সরকার। এতে সরকার প্রায় ২৫০ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি মেনে নিয়েও ব্যবসায়ীদের দাবিতে সায় দিয়েছিল, তাতেও যদি ভোক্তাদের লাভ হয়। ওই সময় ভোজ্যতেলের ওপর তিন স্তরে ৩৫ শতাংশ ভ্যাট ধার্য ছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ বিভিন্ন বিশ্লেষণ বলছে, যে হারে শুল্ক-কর কমানো হয়েছে, তাতে ওই সময়ে প্রতি লিটার ভোজ্যতেলের দাম অন্তত ২২ টাকা কমানো উচিত ছিল। অথচ তখন কমানো হয় মাত্র ১৪ টাকা। সম্প্রতি ডলারের দাম বাড়ছে বলে বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁরা লিটারে ২০ টাকা বাড়ানোর দাবি করেছিলেন। অথচ খোলাবাজারে ১২০ টাকায় ওঠা ডলারের দাম এখন কমে ১০৪-১০৫ টাকার কাছাকাছি। মানে, বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমে প্রায় আগের অবস্থায় চলে এসেছে। ডলারের দাম কমছে। শুল্ক-করও বলতে গেলে নেই; তারপরও সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৭ টাকা বাড়ানোয় সবাই বিস্মিত।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী তানভীর হাসান বাস করেন রাজধানীর শ্যামলীতে। তিনি ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর খবরে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘শুনলাম ইউক্রেন থেকে ভোজ্যতেল বিশ্বে রপ্তানি শুরু হয়েছে। বিদেশে এর দামও কমছে। ভাবলাম, আমাদের দেশেও কমবে। এখন শুনছি, দাম কমা দূরের কথা, এখানে লিটারে ৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এ খবর আমাদের কাছে “মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা”-এর মতো।’
বিশ্বখ্যাত নিত্যপণ্য গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকস বলছে, এক বছর আগে সয়াবিন তেলের যে দাম ছিল, বর্তমানের দাম তার থেকে মাত্র ১৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ বেশি। আর পাম তেলের দাম এক বছর আগে যা ছিল, বর্তমান দাম তার থেকেও ১ দশমিক ৭২ শতাংশ কম। অথচ সরকারি সংস্থা টিসিবির হিসাব বলছে, গত এক বছরে বিশ্ববাজার থেকে দেশের বাজারে সয়াবিনের দাম এখনো ৩৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেশি রয়েছে। আর পাম তেলের দামও বিশ্ববাজার থেকে দেশের বাজারে এখনো ২৩ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমলেও তা আমলে না নিয়ে, বেশি দামে ডলার কিনে ঋণপত্র খোলায় দাম বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি দিয়ে দাম বাড়িয়ে নেন। অথচ গত এক বছরে ডলারের দাম ৮৪ টাকা থেকে বেড়ে ৯৫ টাকা (কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেট) হয়েছে। আর খোলাবাজারে বেশি বাড়লেও, বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযান, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সপ্রবাহে ইতিবাচক ধারার কারণে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। তাই দামও সহনীয় পর্যায়ে নেমে এসেছে। সামনে আরও কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সয়াবিনের দাম বরং কমানো উচিত ছিল বলে মনে করেন ভোক্তা ও বিশ্লেষকেরা।
এনবিআরের ভ্যাট শাখার সাবেক সদস্য ও শুল্ক বিশেষজ্ঞ আবদুল মান্নান পাটোয়ারি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের কাছে যুক্তির অভাব নেই। তাঁরা দাম বাড়ানোর পক্ষে নানান যুক্তি দেখান। সরকারকে বোঝান।’ তিনি মনে করেন, ব্যবসায়ীদের দাম সহনীয় রাখার নামে শুল্ক-কর ছাড় দিয়ে তেমন লাভ হয় না। এর সুফল ভোক্তারা পায় না। এটা অতীতেও দেখা গেছে। তবে সরকার নিরুপায় হয়ে, তার একটি উপায় হিসেবে এটি ব্যবহার করে বলে তিনি জানান।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৫ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
৫ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
৫ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫