Ajker Patrika

গৃহবধূ হত্যায় শ্বশুর শাশুড়ির মৃত্যুদণ্ড

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ০৭
গৃহবধূ হত্যায় শ্বশুর শাশুড়ির মৃত্যুদণ্ড

মানিকগঞ্জে সুপ্রিয়া সাহা নামের এক গৃহবধূ হত্যা মামলায় তাঁর শ্বশুর ও শাশুড়িসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। একই সঙ্গে অপর তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করেছেন আদালত।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জয়শ্রী সমদ্দার এ আদেশ দেন। এ সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন সুপ্রিয়া সাহার শ্বশুর দিলীপ সরকার (৬০), শাশুড়ি গীতা সরকার (৪৫) ও মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার পূর্ব দাশড়া গ্রামের মহাদেব রায় (২৭)। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন পূর্ব দাশড়া গ্রামের রঞ্জিত সাহা (২৬), একই গ্রামের বিষ্ণু পাল (২৬) এবং রঞ্জিত ঘোষ (২৭)।

এ মামলা থেকে সুপ্রিয়ার স্বামী দিপাঞ্জন সরকারকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। তবে এ খালাসের বিরুদ্ধে বাদী উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। দিপাঞ্জনসহ তাঁর মা-বাবা পালিয়ে ভারতে চলে গেছেন বলে জানা গেছে।

রায়ের পর সুপ্রিয়ার বাবা সুকুমার সাহা মামলা থেকে মূল আসামি দিপাঞ্জনকে খালাস দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মূল আসামিসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সুপ্রিয়ার শ্বশুর-শাশুড়ি ভারতে পলাতক আছেন। তাদের সেখান থেকে ফেরত এনে সাজা কার্যকর করতে সরকারের কাছে দাবি করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন জেলা দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুস সালাম ও এপিপি মথুর নাথ সরকার। তাঁরা আদালতের এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

তবে আসামিপক্ষে আইনজীবী আবদুর রহমান, নজরুল ইসলাম বাদশা এবং এ কে এম কায়সার বলেন, আদালতের রায়ে তাঁরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। উচ্চ আদালতে গেলে আসামিরা খালাস পাবেন বলে আশা তাঁদের। খুব শিগগির তাঁরা উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।

মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে মানিকগঞ্জ পূর্ব দাশড়া কাটাখালী ব্রিজ এলাকার সুকুমার সাহার মেয়ে সুপ্রিয়া সাহার সঙ্গে একই এলাকার দিপাঞ্জন সরকারের বিয়ে হয়। তার আগে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সুপ্রিয়া মানিকগঞ্জের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

ওই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে পারিবারিক কলহের জেরে ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে সুপ্রিয়াকে হত্যা করা হয়। হত্যার দিন সুপ্রিয়ার স্বামী ঢাকায় অবস্থান করায় তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ি বিষয়টি ডাকাতি বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরদিন ২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিয়ার বাবা সুকুমার সাহা দিপাঞ্জন সরকার, শ্বশুর দিলীপ সরকার ও শাশুড়ি গীতা সরকারসহ কয়েকজনকে জ্ঞাত আসামি করে মানিকগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।

মানিকগঞ্জ থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ মুন্সি মামলাটি তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে এই মামলায় আটজনকে আসামি করা হয়। ২০১৬ সালের ২৯ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাসুদ মুন্সি সুপ্রিয়া হত্যা মামলায় সাতজন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। অবশেষে গতকাল দেওয়া হয় এ মামলার রায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারা বড় হলে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে লজ্জিত হবে: সেনাপ্রধান

যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকারকে বহিষ্কারের কারণ জানাল এনসিপি

‘আমি যে মাপের লোক, আমারে সে মাপের অস্ত্র দিয়া ফাঁসাইতি’

আবাসন কোম্পানির অনিয়ম অনুসন্ধানে গড়িমসি, দুদকের উপপরিচালক বরখাস্ত

বিপুল বকেয়া সত্ত্বেও ব্যবসা হারানোর ভয়ে বাংলাদেশ-নেপালে সম্প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় চ্যানেলগুলো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত