Ajker Patrika

উন্নয়নে পাল্টে গেছে পটুয়াখালী

মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২২, ১৬: ২২
উন্নয়নে পাল্টে গেছে পটুয়াখালী

আজ শনিবার খ্রিষ্টীয় ইংরেজি বছরের প্রথম দিন। গেল বছর পটুয়াখালীতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি উন্নয়ন সবার নজর কেড়েছে। একটি হলো পটুয়াখালীবাসীর লেবুখালীর পায়রা নদীর ওপর নির্মিত পায়রা সেতু। এ ছাড়া বিদ্যুতায়ন হয়েছে দীর্ঘ বছর অন্ধকারে থাকা পটুয়াখালীর একমাত্র উপজেলা দুর্গম রাঙ্গাবালী। মূল স্রোত থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন থাকা ৫৫ রাখাইন পরিবার পেয়েছে নিজস্ব নকশার ৫৫টি মুজিব শতবর্ষের ঘর। ২০২১ সালে পাল্টে গেছে সাধারণ মানুষের জীবনমান। পাল্টে যাচ্ছে পটুয়াখালী।

লেবুখালী পায়রা সেতু: পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কে নির্মিত পায়রা নদীর ওপর লেবুখালী সেতু। গেল বছরের ২৪ অক্টোবর এ সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটির উদ্বোধন করেন।

বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের পায়রা নদীর ওপর ২০১৬ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে সেতু নির্মাণকাজ শুরু হয়। গেল বছরের সেপ্টেম্বরে মূল সেতুর শতভাগ নির্মাণকাজ শেষ হয়। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘লনজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজকনস্ট্রাকশন’ নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে। ১ হাজার ৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৯ দশমিক ৭৬ মিটার প্রস্থের এই সেতুটি ক্যাব্‌ল দিয়ে দুই পাশে সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে নদীর মাঝখানে একটিমাত্র পিলার ব্যবহার করা হয়েছে। আর পিলারের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হয়েছে। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট, ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ বিনিয়োগে সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সেতুটি যান চলাচলে খুলে দেওয়ার ফলে বরিশাল থেকে সাগরকন্যা কুয়াকাটা পর্যন্ত ফেরি বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পেয়েছেন পর্যটকেরা। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যেও নতুন গতি যোগ হয়েছে। পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পটুয়াখালীর মানুষ যে অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়েছিল, পায়রা সেতু যান চলাচলে উন্মুক্ত হওয়ায় বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ঘটবে।’

দুর্গম রাঙ্গাবালীতে বিদ্যুৎ: ২০২১ সালেই বিদ্যুতায়ন হয়েছে দীর্ঘ বছর অন্ধকারে থাকা পটুয়াখালীর একমাত্র রাঙ্গাবালী উপজেলা। সাগর-তীরবর্তী এবং নদীবেষ্টিত হওয়ায় দুর্গম এই উপজেলা ছিল অন্ধকারে। গত ২ সেপ্টেম্বর সাবমেরিন ক্যাব্‌লের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় উপজেলায়। উপজেলার ১৮ হাজার পরিবারকে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এর আগে জেনারেটর কিংবা সোলার প্যানেল থেকে রাঙ্গাবালী উপজেলার মানুষ রাতের অন্ধকারে আলো জ্বালিয়ে আসছিল।

রাঙ্গাবালী উপজেলার চর মোন্তাজ ইউনিয়নের ব্যবসায়ী আইয়ুব খান বলেন, ‘বিদ্যুৎ–সংযোগ পাওয়ায় এখন মানুষ আয়রন, টিভি, ফ্রিজসহ ইলেকট্রিক পণ্যসামগ্রী কিনছেন। সাম্প্রতিক সময় এসব পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রত্যন্ত এই চরেও বেশ কয়েকটি ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ব্যবসাবাণিজ্যে নতুন গতি ফিরেছে রাঙ্গাবালীতে।’

স্বল্প সময়ের ব্যবধানে পুরো উপজেলার প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানো হবে বলে জানান পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার শাহ্ মো. রাজ্জাকুর রহমান।

কুয়াকাটায় রাখাইন নৃগোষ্ঠীর ৫৫টি ঘর: জীবনমানের বিচারে মূল স্রোত থেকে অনেকটাই পিছিয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন। পিছিয়ে থাকা রাখাইন নৃগোষ্ঠীর ৫৫ পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিব শতবর্ষের বিশেষ উদ্যোগের মাধ্যমে অক্টোবরের শেষের দিকে বসতঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন। পটুয়াখালীর কুয়াকাটা রাখাইন পল্লিতে উৎসব হয়েছে। প্রতিটি ঘরই রাখাইন সম্প্রদায়ের নিজস্ব নকশায় নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের নিজস্ব নকশা অনুসরণ করে ৫০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৫টি ঘরের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। এ ঘরগুলো একদিকে রাখাইনদের আবাসনের ব্যবস্থা, অপর দিকে পর্যটকদের আকর্ষণীয় কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ছাত্রদল নেতার পোস্ট, শোকজ পেয়ে নিলেন অব্যাহতি

আলাস্কা বৈঠকে পুতিনের দেহরক্ষীর হাতে ‘মলমূত্রবাহী স্যুটকেস’ কেন

সিলেটের ডিসি হলেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে শাস্তি পাওয়া সারওয়ার আলম

অপারেশন সিঁদুরে নিহত প্রায় দেড় শ সেনার তালিকা প্রকাশ করে মুছে ফেলল পাকিস্তানি টিভি

আমরা দখল করি লঞ্চঘাট-বাসস্ট্যান্ড, জামায়াত করে বিশ্ববিদ্যালয়: আলতাফ হোসেন চৌধুরী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত