Ajker Patrika

পাখির ছানা দেখানোর নামে ছাদে নিয়ে হত্যা

বুড়িচং প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২২, ১২: ০৪
পাখির ছানা দেখানোর নামে ছাদে নিয়ে হত্যা

বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের শরিফপুরে শিশু ফাহিম হোসেন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এক আসামি মো. সুমন (২৮) আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল সোমবার কুমিল্লার আদালতে নেওয়া হলে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। পরে আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। জবানবন্দিতে সুমন জানিয়েছেন, পাখির ছানা দেখানোর কথা বলে ছাদে নিয়ে শিশুটিকে হত্যা করা হয়।

পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরও একজনের নাম প্রকাশসহ স্বীকারোক্তি দেন। পরবর্তী সময়ে গতকাল দুপুরে কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হলে তিনি বিচারকের সামনে হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

আদালতে সুমন জানান, তিনি ও গ্রেপ্তার হওয়া আরেক আসামি শরীফ ভালো বন্ধু ছিলেন। ঘটনার কয়েক দিন আগে শরীফ শিশুটির চাচা আবদুল মতিনের একটি রেকর্ডিং শোনান। সেখানে মতিন শিশু ফাহিমকে হত্যার বিষয় নিয়ে আলাপ করেন।

এর কয়েক দিন পর শরীফ সুমনকে ফোন করে ঘটনাস্থলে আসতে বলেন। সুমন সন্ধ্যার পর এলে শরীফ শিশু ফাহিমকে নিয়ে আসেন। পরে কাঁঠালগাছে পাখির ছানা আছে বলে শিশু ফাহিমকে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে নেওয়া হয়। এ সময় মূল ফটক তালাবন্ধ থাকায় শরীফ শিশুটিকে কাঁধে নিয়ে কাঁঠালগাছে চড়ে ছাদে ওঠেন। ছাদে ওঠার পর ফাহিমের নাক-মুখ চেপে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন। পরে শিশুটিকে ভবনের একটি কক্ষে রেখে চলে যান।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বুড়িচং থানার দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী হাসান উদ্দিন জানান, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টায় বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের শরিফপুর গ্রামের আবদুল মতিনের নির্মাণাধীন তালাবদ্ধ ঘরের একটি কক্ষ থেকে ফাহিম হোসেন নামের পঞ্চম শ্রেণির এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় নিহত ফাহিমের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনে কাজ করতে থাকে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও জানান, ঘটনার পর তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, সন্দেহভাজন একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদসহ বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে গত রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে একই গ্রামের মো. সুমনকে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও জানান, ১০ মার্চ শরীফকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছিল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার মূল রহস্য উদ্‌ঘাটন হবে বলে মনে করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত