Ajker Patrika

শুঁড়ে টাকা না দিলেই জোরে ডেকে ওঠে হাতি

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২২, ১০: ৫৭
শুঁড়ে টাকা না দিলেই  জোরে ডেকে ওঠে হাতি

ঝালকাঠি শহরের বিভিন্ন সড়কে, অলিতে-গলিতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে পোষা হাতি দিয়ে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। ভয়ে চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানান ব্যবসায়ী ও আশপাশের মানুষ।

গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের সড়কে হাতি দিয়ে চাঁদাবাজি করতে দেখা গেছে। হাতির মাহুত সেলামির নামে শহরের বিভিন্ন সড়কে, অলিতে গলিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়িতে, বিভিন্ন হাটবাজার ও সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন আটকে চাঁদা তুলছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মাহুত রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘চাঁদা তো না, সালাম দিয়ে সাহায্য নিচ্ছি। সার্কাস বন্ধ থাকায় হাতি নিয়ে বিপাকে পড়েছি। হাতিকে খাওয়ানোর জন্য সাহায্য চাইতে চাইতে পিরোজপুর থেকে ঝালকাঠি শহর পর্যন্ত এসেছি।’

শহরের বিভিন্ন সড়কে, অলি-গলির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ি, হাটবাজারে হাতির মাহুতকে সেলামির নামে চাঁদা তুলতে দেখা গেছে। চাঁদা দিলে হাতি শুঁড় দিয়ে গ্রহণ করে মাহুতকে দেয়। আর চাঁদা না পেলে উচ্চ স্বরে ডাক দেয়। ভয়ে ব্যবসায়ী ও পথচারী বাধ্য হয়ে চাঁদা দিচ্ছেন। দুপুরেই জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অল্প বয়সের একটি এবং ফায়ার সার্ভিস মোড় এলাকায় প্রাপ্ত বয়স্ক একটিসহ মোট দুটি হাতির মাধ্যমে চাঁদা তুলতে দেখা যায়।

বাজারের ব্যবসায়ী সিকেন্দার আলী বলেন, ‘চাঁদা না দিলে নানাভাবে হাতি দিয়ে বিরক্ত করছে। তাই ভয়ে চাঁদা দিচ্ছি। দুই হাতিকে চাঁদা দিয়েছি।’

ওই বাজারের মুদি দোকানি আফজাল হোসেন বলেন, ‘সকালে কেবল দোকান খুলে বসছি। ঠিক তখনই হাতি এসে দোকানের সামনে হাজির। টাকা নেই বলার পরও হাতি যাচ্ছে না। শুঁড় দিয়ে আমার গায়ে পানি দিচ্ছে। দোকানের মালামাল উল্টাপাল্টা করছে। তাই বাধ্য হয়ে প্রথমে ২০ টাকা চাঁদা দিয়েছি। না মানায় পরে ৫০ টাকা দিয়েছি।’

গত বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকেই বাজারে কথা হয় পানের দোকানি লুৎফর রহমানের সঙ্গে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘করোনা তো আমারও কোমর ভেঙে দিছে। এই দোকান দিয়েই আমাদের সংসার চলছে। কিন্তু হাতির জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠছি। দুই হাতিকে চাঁদা দিয়েছি। চাঁদা দিবো তাতেও দুঃখ নেই। এই হাতি যদি একবার ভুল করি শুঁড় দিয়া দাকানোত ঠেলা মারে, তাইলে সব শেষ হয়া যাইবে।’

বালাবাড়ি বাজারের চাল ব্যবসায়ী আজমত হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে মুই দোকান খুলি এক টাকাও বিক্রি করতে পারি নাই। কিন্তুক হাতি এসে হাজির। চাঁদার জন্য ভয় দেখাইছে। বাধ্য হয়ে মাইনসেরটে ধার নিয়া ৫০ টাকা দিছি।’

বিকনা গ্রামের মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নতুন কলেজ রোড এলাকায় একটি হাতি পথ রোধ করে। ভয়ে আমার সন্তান চিৎকার শুরু করে। তড়িঘড়ি করে ২০ টাকা দিলে হাতি নেয় না। পরে ৪০ টাকা দিলে রাস্তা ছেড়ে দেয়।’

আরেক হাতির মাহুত শাকিল হোসেন বলেন, ‘আমরা তো চুরি করছি না। পিরোজপুর থেকে মহাসড়ক দিয়ে বরিশালের উদ্দেশে রওনা হয়েছি। হাটবাজার, রাস্তাঘাটে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মানুষকে হাতি দেখিয়ে খুশি করে হাতির খাবারের জন্য টাকা নিচ্ছি। এতে দোষের কী?’

ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান বলেন, ‘হাতি দিয়ে চাঁদা আদায়ের কোনো সুযোগ নেই। এ রকম ঘটনা আমাকে কেউ জানাননি। এখন জানলাম। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে আরেকটি প্রক্সি ওয়ারে জড়াতে চায়: ফরহাদ মজহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত