Ajker Patrika

হারিয়ে যাওয়া গান

হারিয়ে যাওয়া গান

১৯৭১ সালের মার্চ মাসে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তাতে বিক্ষুব্ধ শিল্পী সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়েছিল। ২৫ মার্চে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালিত হওয়ার পর যে ধ্বংসযজ্ঞ চলেছিল, তাতে সেই পরিষদের কর্মকাণ্ডও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অনেকেই সীমান্ত পাড়ি দিয়েছিলেন। কিছুদিন পর চলে যাওয়া শিল্পীদের কারও কারও কণ্ঠ শোনা যেতে লাগল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে। 

সৈয়দ আব্দুল হাদী বিশাল পরিবারের কথা চিন্তা করে দেশত্যাগের কথা ভাবতে পারেননি। যুদ্ধের সময় একদিন সৈয়দ আব্দুল হাদীর দেখা হলো আলতাফ মাহমুদের সঙ্গে। আব্দুল হাদীকে দেখেই আলতাফ মাহমুদ বললেন, ‘হাদী, স্বাধীন বাংলা বেতারের জন্য কিছু গান করতে হবে।’ 

সৈয়দ আব্দুল হাদী বললেন, ‘কিন্তু সেই গান তো স্টুডিওতে করা ঠিক হবে না। জানাজানি হয়ে যেতে পারে। তাতে সমূহ বিপদ ডেকে আনা হবে।’ 

আলতাফ মাহমুদ চিন্তিত হয়ে বললেন, ‘তাহলে কী করা যায়? করতে তো হবেই।’ 

আব্দুল হাদী একটু চিন্তা করে বললেন, ‘আমার একটি অত্যন্ত ভালো আকাই টেপরেকর্ডার আছে। অনেক রাতে দরজা-জানালা বন্ধ করে বাসায়ই করা যেতে পারে।’ 

সেটাই ঠিক হলো। নির্ধারিত দিনে আলতাফ মাহমুদ তাঁর ছোট ভাই ও সহকারী হাফিজকে নিয়ে চলে এলেন সৈয়দ আব্দুল হাদীর বাড়িতে। সবাই ঘুমিয়ে পড়লে শুরু হলো রেকর্ডিং। আলতাফ মাহমুদের একটা তানপুরা ছিল আব্দুল হাদীর বাড়িতে। শুধু সেই তানপুরা আর হারমোনিয়াম দিয়ে গানগুলো করা হলো। অন্য কোনো যন্ত্রানুষঙ্গ পাওয়া গেল না। সেই টেপ করা গানগুলো ছিল সৈয়দ আব্দুল হাদীর কাছেই। একদিন আলতাফ মাহমুদ এসে নিয়ে গেলেন সেগুলো। কিন্তু সেই গানগুলো স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে পৌঁছেছিল কি না, সেটা কেউ বলতে পারে না। আলতাফ মাহমুদ পাকিস্তানিদের হাতে ধরা পড়লেন ৩০ আগস্ট। 

আর খুঁজে পাওয়া যায়নি তাঁকে। 

সূত্র: সৈয়দ আব্দুল হাদী, জীবনের গান, পৃষ্ঠা ১০৪-১০৫

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: বাকের মজুমদার

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

চাকরিতে কোটা: সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য আসছে সমান সুযোগ

রাজপথের চাপে কোনো বিচার করা সম্ভব নয়: চিফ প্রসিকিউটর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত