Ajker Patrika

গেয়োর্গি লুকাচ

সম্পাদকীয়
গেয়োর্গি লুকাচ

পশ্চিমা ঘরানার মার্ক্সবাদের অন্যতম স্থপতি ছিলেন গেয়োর্গি লুকাস। তিনি একাধারে ছিলেন মার্ক্সবাদী দার্শনিক, নন্দনতাত্ত্বিক, ইতিহাসবিদ ও সাহিত্য সমালোচক। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও রুশ বিপ্লবের আলোকে তিনি মার্ক্সবাদী চিন্তাকে পরিমার্জন করেন।

লুকাচ ১৮৮৫ সালের ১৩ এপ্রিল হাঙ্গেরিতে জন্মগ্রহণ করেন। বুদাপেস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন তিনি সমাজতন্ত্রী বুদ্ধিজীবী চক্রের একজন সক্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। ১৯০৬ থেকে ১৯১০ সাল পর্যন্ত বার্লিনে পড়েন। ১৯১৫ সালে আবার বুদাপেস্টে ফিরে আসেন। এখানকার ‘সানডে সার্কেল’ নামের একটি বুদ্ধিবৃত্তিক আড্ডায় নেতৃত্ব দেন। ১৯১৮ সালে ‘সানডে সার্কেল’ বিভক্ত হলে তিনিসহ অনেকে হাঙ্গেরিয়ান কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। এরপর অল্প সময়ের জন্য হাঙ্গেরিয়ান সোভিয়েত রিপাবলিকের শিক্ষামন্ত্রী হন। এ ছাড়া তিনি হাঙ্গেরিয়ান রেড আর্মির একজন কমিশনার ছিলেন।

হাঙ্গেরিয়ান সোভিয়েত রিপাবলিকের ভাঙনের পর তিনি ভিয়েনায় পালিয়ে যান। সেখানে গ্রেপ্তার হলেও কয়েকজন লেখকের সহযোগিতায় মুক্তি পান। এখানেই আন্তোনিও গ্রামসিসহ অনেক বুদ্ধিজীবীর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়।

কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনালে তাঁর লিখিত দলিল নিয়ে বিতর্কে অভিযুক্ত হলে তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেন। এরপরও তিনি আজীবন চালিয়ে যান তাত্ত্বিক কাজ। এ সময় তিনি দার্শনিক আলোচনার ক্ষেত্র হিসেবে লেনিনের মতবাদ নিয়ে কাজ শুরু করেন। তখন তিনি রচনা করেন তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘হিস্ট্রি অ্যান্ড ক্লাস কনশাসনেস’। এই গ্রন্থে তিনি লেনিনের অতিবাম ধারার বিশ্লেষণ করেন।

১৯৩০ সালে তিনি ভিয়েনা পুলিশের স্বাক্ষরিত নির্বাসন দণ্ডের চিঠি পান। একই বছর সোভিয়েত সরকারের আমন্ত্রণে মস্কোয় গিয়ে মার্ক্স-অ্যাঙ্গেলস ইনস্টিটিউটে কাজ শুরু করেন। স্টালিনের সময় তাঁকে তাসখন্দে নির্বাসনে পাঠানো হয়।

মস্কো থেকে ফিরে এসে ১৯৪৫ সালে হাঙ্গেরিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সের সদস্য হন তিনি। ১৯৪৫-৪৬ সালে অ-কমিউনিস্ট দার্শনিক ও লেখকদের কঠোর সমালোচনা করে অনেক বই লেখেন। ১৯৫৬ সালে তিনি ইমরে নাগির কমিউনিস্ট সরকারের মন্ত্রী হন।

১৯৭১ সালের ৪ জুন বুদাপেস্টে মারা যান গেয়োর্গি লুকাচ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত