Ajker Patrika

ঋণমুক্তি ও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্ত্রী-সন্তান হত্যা

নরসিংদী প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ মে ২০২২, ১১: ০৬
ঋণমুক্তি ও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে  স্ত্রী-সন্তান হত্যা

নরসিংদীর বেলাবতে স্ত্রীর নামে এনজিও থেকে এবং স্বজনদের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের চাপ থেকে মুক্তি, জুয়া খেলার টাকা না থাকা ও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন গিয়াস উদ্দিন শেখ।

গত সোমবার বিকেলে নরসিংদীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রকিবুল হকের আদালতে মামলার একমাত্র আসামি হিসেবে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) নরসিংদীর পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান।

আদালতে জবানবন্দীতে আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নরসিংদী পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দেন পিবিআইয়ের এসপি এনায়েত হোসেন মান্নান। এ সময় তিনি জানান, ভাবলা গ্রামের গিয়াস উদ্দিন শেখ একজন পেশায় রংমিস্ত্রি। তিনি জুয়া খেলতেন। জুয়া খেলার টাকার অভাব হলেই তাঁর মাথা ঠিক থাকত না। বিভিন্ন এনজিও, শ্যালকসহ আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে স্ত্রী রহিমার নামে ১২ লাখ টাকার ঋণ করেন তিনি। এসব ঋণের বিপরীতে মাসে ২২ হাজার টাকার কিস্তি পরিশোধ করতে হতো তাঁকে। ঋণগ্রহীতা মারা গেলে ঋণের টাকা মওকুফ হয়ে যায়, এমন বিশ্বাস থেকে তিনি স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শনিবার গভীর রাতে ছুরিকাঘাত ও ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে ঘুমন্ত স্ত্রী রহিমা বেগমকে হত্যা করেন তিনি। রাতে বাড়িতে থাকার কথা সন্তানেরা বলে দেবে, এমন আশঙ্কয় ঘুমন্ত সন্তানদেরও ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে নির্মমভাবে হত্যা শেষে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। পরদিন সকালে স্বজনদের ফোনে স্ত্রী-সন্তানের লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে বাড়ি ফেরেন এবং রাতে বাড়িতে ছিলেন না বলে জানান তিনি। এ সময় প্রতিপক্ষ চাচাতো ভাই রেনু শেখের ওপর হত্যার দায় চাপানোর চেষ্টা করেন। রেনু শেখের সঙ্গে বাড়ির রাস্তার সীমানা নিয়ে বিরোধ চলছিল তাঁর।

পেশাগত কাজে বাড়ির বাইরে অবস্থান করাসহ তাঁর দেওয়া তথ্য সন্দেহজনক হওয়ায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পিবিআই। পরে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেন তিনি। হত্যা শেষে নাটক সাজাতে বাড়ি ছেড়ে যান বলে জানান তিনি। আটকের পর তাঁর দেখানোমতে ওই গ্রামের গঙ্গাজলি বিল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও জঙ্গল থেকে রক্তমাখা ক্রিকেট ব্যাট উদ্ধার করে পিবিআই। পরে তাঁকে আদালতে পাঠানো হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।

এদিকে রোববার রাতে রহিমা বেগমের ভাই মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে বেলাব থানায় হত্যা মামলা করেন। হত্যার দায় স্বীকারের পর ওই মামলায় গিয়াস উদ্দিন শেখকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

পিবিআই নরসিংদীর পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান বলেন, এক নারীর সঙ্গে ফোনে গিয়াস উদ্দিন শেখের নিয়মিত কথা বলার তথ্যও পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ঋণের তথ্য যাচাইসহ বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে আরও কেউ এই নির্মম হত্যায় জড়িত কী না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিন্দুর ঘিরে আলোচিত কে এই কর্নেল সোফিয়া কুরেশি

পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে ‘প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের’ নির্দেশ

কাশ্মীরে বিধ্বস্ত বিমানের অংশবিশেষ ফরাসি কোম্পানির তৈরি, হতে পারে রাফাল

সীমান্তে সাদা পতাকা উড়িয়ে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত দিয়েছে ভারত: পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী

পাকিস্তানে হামলায় ‘লোইটারিং মিউনিশনস’ ব্যবহারের দাবি ভারতের, এটি কীভাবে কাজ করে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত