Ajker Patrika

প্রকৌশলীর বাধায় বন্ধ বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ

মো. মিজানুর রহমান রিয়াদ, নোয়াখালী
প্রকৌশলীর বাধায় বন্ধ বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ

দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। নানা তদবির ও সুপারিশের পর নোয়াখালীর মাইজদী শহরের হরিনারায়ণপুর বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। কিন্তু কিছুদিন পরই বন্ধ হয়ে যায় নির্মাণকাজ।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার কয়েক দিনের মাথায় গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বাধার মুখে তা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ পুরোনো ভবনে পাঠদান করতে হচ্ছে।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, দীর্ঘদিন কর্তৃপক্ষের দুয়ারে দুয়ারে ধরনা দিয়ে অবশেষে এলজিইডি থেকে নতুন ভবন নির্মাণের আশ্বাস মেলে। ভবনের নির্মাণকাজও শুরু করে এলজিইডি। কিন্তু সেখানে বাধা দেয় সরকারের আরেক প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত বিভাগ। দুই মাস আগে এ ভবনের জমি গণপূর্ত বিভাগের দাবি করে কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ দেন নির্বাহী প্রকৌশলী। এমন অবস্থায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে বারবার গিয়েও কোনো সুরাহা পাওয়া যায়নি। জমি নিয়ে সংকট তৈরি না করে ৭০ বছরের পুরোনো বিদ্যালয়টি পুনর্নির্মাণের দাবি জানায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় বিদ্যালয়টি একটি পরিত্যক্ত ভবন। ভেতরটা আঁতকে ওঠার মতো। পলেস্তারা খসে পড়ে কিছু ইট আর রডে ভর করে আছে পুরো ভবন।

সর্বশেষ দোতলার একটি কক্ষে ছাদের বড় একটি অংশসহ ধসে পড়েছে একটি বিমের অংশ। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকেরা আতঙ্কিত।

বালিকা বিদ্যালয় হলেও এখানে মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও পড়ছে। সব মিলে বিদ্যালয়টিতে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। গত ১০ বছর এমন জীর্ণদশার মধ্যেই পাঠদান চলছে। যেকোনো সময় ভবনটি ধসে পড়ে প্রাণহানির শঙ্কায় আছেন শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। ভয়ে ইতিমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী বিদ্যালয় ছেড়েছে বলেও জানা গেছে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, কয়েক দিন আগে তাদের ক্লাস চলাকালে পাশের কক্ষে বিকট শব্দ হয়। পরে শিক্ষকদের মাধ্যমে তারা জানতে পারে, ভবনের ছাদের বড় একটি অংশ ভেঙে পড়েছে। বিষয়টি জানার পর তারা ক্লাস থেকে তাড়াহুড়া করে দ্রুত বের হয়ে যায়। অভিভাবকদের বিষয়টি জানালে তাদের অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করাবেন বলে জানিয়েছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলেকা বেগম বলেন, ‘এ ভবনে আমরা তো নিজেরাই প্রাণ হারানোর ঝুঁকিতে সব সময় থাকি, আমাদের সঙ্গে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুরাও সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকে। প্রতিদিন বিদ্যালয়ে আসার সময় বাসা থেকে বিদায় নিয়ে আসতে হয়, কখন যে বিদ্যালয়ের ভবন ধসে পড়ে আমাদের মৃত্যু হয়।’ তিনি আরও বলেন, এত তদবিরের পর বিদ্যালয় ভবনের কাজ শুরু হয়েছিল, এত দিনে একতলার কাজ প্রায় শেষ হয়ে যেত। কিন্তু দুই মাস ধরে গণপূর্ত বিভাগের হস্তক্ষেপের কারণে ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে আছে। ভবন নির্মাণের কাজ দ্রুত চালু করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে ভিন্ন কথা বলেন গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ মোহাম্মদ আন্দালিব। তাঁর দাবি, সরকারি আবাসিক এলাকায় বর্তমানে একাধিক ভবন নির্মাণ হওয়ায় বিদ্যালয়টি সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই নতুন স্থান নির্ধারণের জন্য তিনি সাময়িক কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছেন মাত্র। কোনো একটি উন্মুক্ত স্থানে বা সড়কের পাশে ভবনটি স্থানান্তর করা যায় কি না, তা নিয়ে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধানদের সঙ্গে তাঁরা আলোচনা করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে না নেওয়ার প্রস্তাব র‍্যাব ডিজির

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত