Ajker Patrika

শিক্ষার্থীরা স্বপ্ন বোনে অন্য গ্রামে গিয়ে

ঝুলন দত্ত, কাপ্তাই (রাঙামাটি)
শিক্ষার্থীরা স্বপ্ন বোনে অন্য গ্রামে গিয়ে

কলাবুনিয়াপাড়ার মেয়ে উম্রাচিং মারমা। এ বছর কাপ্তাই কর্ণফুলী সরকারি কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। এর আগে চিৎমরম হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং চিৎমরম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়েছেন প্রাথমিকের পাঠ। রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার পাহাড়ি কলাবুনিয়া গ্রামে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় তাঁকে দূরের এসব গ্রামে গিয়ে পড়াশোনা করতে হয়েছে।

একই পাড়ার মেয়ে চিংসাংমা মারমা। তিনিও কাপ্তাই প্রজেক্ট এলাকার চৌধুরীছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাপ্তাই শহীদ শামসুদ্দিন বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এবং কাপ্তাই কর্ণফুলী সরকারি কলেজে পড়াশোনা করেছেন। তাঁদের হাতের কাছে ছিল শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের টেকসই সামাজিকসেবা প্রদান প্রকল্পের আওতায় নির্মিত একটি পাড়াকেন্দ্র। সেখানে দেওয়া হয় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা। তাই তাঁদের যেতে হয় দূরের গ্রামের বিদ্যালয় বা কলেজে। অবশ্য সামর্থ্যবান পরিবারের শিক্ষার্থীরা জেলা শহরে গিয়ে পড়াশোনা করেন।
 
উম্রাচিং এবং চিংসাংমার মতো যেসব শিক্ষার্থী দূরের গ্রামে গিয়ে পড়াশোনা করেছেন তাঁদের কাউকে কাউকে আবার এসব স্কুলে যেতে হলে কর্ণফুলী নদী পার হয়ে কিংবা ঘণ্টার পর ঘণ্টা হেঁটে। শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি না থাকলে স্কুলে যাওয়াই বন্ধ হয়ে যায়।
 
গত মঙ্গলবার এই প্রতিবেদক যান কলাবুনিয়াপাড়ায়। কর্ণফুলী নদীর কোল ঘেঁষে অবস্থিত অনিন্দ্য সুন্দর এই গ্রাম। প্রায় ৩৫টি মারমা পরিবারের বসবাস এ পাড়ায়। এ সময় পাড়াকেন্দ্রের পাশে কথা হয় উম্রাচিং মারমা, চিংসাংমা মারমা, মিলিপ্রু মারমাসহ অনেকের সঙ্গে।

তাঁরা জানান, কর্ণফুলী নদী পার হতে ভয় লাগে। তাঁদের মা-বাবারা জুমে কাজ করায় তাঁদের স্কুলে নিতে পারেন না। তাই একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হওয়া দরকার এই গ্রামে। তাতে গ্রামের শিশুদের দুঃখ সামান্য হলেও লাঘব হবে।

এলাকার কারবারি অংহ্লাচিং মারমা বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েরা কী পরিমাণ কষ্ট করে অন্যত্র পড়াশোনা করতে যায়, তা না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। ছোট ছোট শিশু ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে কাপ্তাই প্রজেক্ট এলাকায় পড়তে যায়। নদীতে পানি বেড়ে গেলে কিংবা পাহাড়ি ঢলে নদীর স্রোত বেড়ে গেলে ঝুঁকি নিয়ে তাদের স্কুলে যেতে হয়। আমরা সরকারের কাছে এই গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের আহ্বান জানাই।’

চিৎমরম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওয়েশ্লিমং চৌধুরী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এই গ্রামটি অনেক দূরে। এই গ্রামের শিশুরা শুধু পাড়াকেন্দ্রে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে থাকে। এই এলাকায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন হওয়া জরুরি।

উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ কুমার আচার্য্য বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও এক হাজার বিদ্যালয় স্থাপনের কাজ শুরু করেছে সরকার। কিন্তু অন্যতম শর্ত হলো, ন্যূনতম ৩৩ শতাংশ জমি সরকারের অনুকূলে থাকতে হবে। যদি এই এলাকায় প্রয়োজনীয় জমি পাওয়া যায় তাহলে সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত