Ajker Patrika

ক্ষুদ্রঋণ পান নারী ব্যয় করেন পুরুষ

রুবায়েত হোসেন, খুবি 
আপডেট : ১২ জুন ২০২২, ১২: ৩৪
ক্ষুদ্রঋণ পান নারী  ব্যয় করেন পুরুষ

আর্থিক সচ্ছলতা, গতিশীলতা ও পারিবারিক সিদ্ধান্তে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া হয়। মাইক্রো-ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে ৯০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া হয় নারীদের। এই সংখ্যা প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। এর মাধ্যমে অনেক নারী সফল উদ্যোক্তা হয়েছেন। ঋণ পরিশোধের হারেও পুরুষের চেয়ে অনেক এগিয়ে নারীরা।

তবে সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা ঋণ পেলেও মূলত তা খরচ করেন পুরুষেরা। অনেক ক্ষেত্রে ঋণের টাকা কোথায় ব্যবহার করা হবে, তা নির্ধারণ করে দেন বাড়ির পুরুষেরা। এর পেছনে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কাঠামো, প্রথা ও রীতিনীতির প্রভাব রয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো কমবেশি জানলেও তা সমাধানে তারা আগ্রহী নয়।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানভীর আহমেদ সোহেল এবং অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গবেষক ড. সারা নাইনার ও ড. সামান্থি জে. গুনাওয়ার্দানা যৌথভাবে গবেষণাটি করেছেন। এতে মূলত খুলনার ডুমুরিয়া এলাকার নারীরা ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে নিজে ব্যবহার করতে পারছেন কিনা তা খুঁজে দেখা হয়।

গবেষণায় নারীদের ক্ষুদ্রঋণ দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য পূরণ না হওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। গবেষকেরা বলছেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কাঠামোয় যদি নারীদের কাজের প্রাপ্য স্বীকৃতি না দেওয়া হয় এবং ঐতিহ্যগতভাবে নারীদের একক দায়িত্বের পরিবর্তন না ঘটে, তবে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। কারণ, এ বিষয়গুলো নারীদের আর্থিক ও অন্যান্য ক্ষমতায়নকে সরাসরি বাধাগ্রস্ত করে। তাই নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিতে সাংস্কৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এসব মনোভাবকে পরিবর্তন করা প্রয়োজন।

গবেষকদের দাবি, ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিষয়টি সমাধান না করে বরং নারীর ক্ষমতায়নের প্রমাণ হিসাবে হাই লোন রিকভারি (উচ্চ ঋণ পুনরুদ্ধার) হারের ওপর জোর দিচ্ছে। এটি নিশ্চিত করার জন্য শ্রমের লিঙ্গভিত্তিক বিভাজন, চলাফেরার সীমাবদ্ধতা এবং লজ্জার ধারণাগুলোর মধ্যে নারীদের কাঠামোগত দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়েছে। তারা নারীর ক্ষমতায়নের মিথ্যা আখ্যা দিয়ে তাদের মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

এ বিষয়ে খুবির সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানভীর আহমেদ সোহেল বলেন, ‘আমি মনে করি ক্ষুদ্রঋণের প্রয়োজন আছে। কিন্তু এর উদ্দেশ্য তখনই সফল হবে, যখন ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কাঠামোকে অনুধাবন করে নারীদের অবস্থান ও দুর্বলতাগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্পগুলো পরিচালনা করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত