Ajker Patrika

ভ্যানে সবজিতে কর্মসংস্থান সময় বাঁচছে ক্রেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৩৪
ভ্যানে সবজিতে কর্মসংস্থান  সময় বাঁচছে ক্রেতার

ময়মনসিংহে ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে ভ্যানে সবজি কেনাবেচা। কর্মব্যস্ত জীবনে নগরীর বাসিন্দারা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে এখন বাজারে যান কম। এর বিকল্প হিসেবে এসব ভ্যান থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য ঘরে বসেই কিনছেন তাঁরা। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে বিপুলসংখ্যক মানুষের। বর্তমানে নগরীর বিভিন্ন অলিগলিতে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন ভ্যানে সবজি বিক্রি করছেন বলে জানা গেছে।

মো. ইউসুফ আলী (৬০) সদর উপজেলার নেহালিয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। ৩৫ বছর ধরে নগরীর আকুয়া এলাকায় ভ্যানে সবজি বিক্রি করছেন। প্রতিদিন তিনি আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার সবজি কেনেন। মো. ইউসুফ আলী বলেন, ‘সবজি বিক্রি করে পাঁচজনের সংসার ভালোই চলে। আকুয়া এলাকার সবাই আমাকে চেনে। ফজরের নামাজ পড়ে মেছুয়া বাজার থেকে সবজি কিনে এলাকায় চলে যাই।’

চরঈশ্বর দিয়া গ্রামের কাজল মিয়ার ছেলে মারুফ হোসেন (১৪) সবজি বিক্রি করে সংসারের হাল ধরেছে। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে অভাবের সংসারে আর এগোতে পারেনি। মারুফ হোসেন বলে, ‘প্রতিদিন ভোরে ভ্যানে করে এলাকা থেকে সবজি কিনে মেছুয়া বাজারে নিয়ে আসি। পরে পাইকারি দরে বিক্রি করি। বিভিন্ন ভ্যানের চালকেরা মুহূর্তেই সবজি কিনে নিয়ে যান।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. সজীব বলেন, ‘প্রতিদিন গাঙ্গিনারপাড় বারী প্লাজা থেকে পালিকার সামনে পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে ৩০০ থেকে ৩৫০টি ভ্যান নিয়ে লোকজন সবজি কিনে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেন। প্রতিদিন আমি ৩০টি ভ্যানের পণ্য দেখে রাখি। প্রতি ভ্যান থেকে পাই ২০ টাকা। সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করি। এতে আমার কিছু আয়ের পাশাপাশি ওদের পণ্যও ঠিক থাকে।’

আকুয়া এলাকার বাসিন্দা নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল থেকে পুরুষেরা বিভিন্ন কাজে বাইরে চলে যায়। তাঁদের বাজার করার সময় থাকে না। তাই আমরা ভ্যান থেকে সবজি কিনে নিই।’

একই এলাকার নাদিরা সুলতানা বলেন, ‘সকাল হলেই বিক্রেতারা ভ্যানে সবজি নিয়ে এলাকায় ঢোকে। তাঁদের কাছ থেকে দেখেশুনে সাশ্রয়ী মূল্যে সবজি কিনতে পারি। এ জন্য বাজারে তেমন যাওয়ার প্রয়োজন হয় না।’

ঈশ্বরগঞ্জ এলাকার মোফাজ্জল হোসেন (৪০) বলেন, পাঁচ বছর ধরে নওমহল এলাকায় ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করছি। প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকার সবজি বিক্রি করলে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় হয়। ১৩ হাজার টাকায় ভ্যান বানিয়ে তিন হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ভালোই চলছে।

সবজি বিক্রেতা চাঁন মিয়া জানান, প্রতিদিন সকালে এসে পণ্য কিনতে ঘণ্টাখানেক সময় লাগে। ভ্যান ও পণ্য দেখার জন্য একজনকে ২০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। এ ছাড়া সবজি কেনাবেচা করতে কোনো সমস্যা হয় না।

গৌরীপুরের ভাংনামারী চরের কৃষক আব্দুল মোতালেব জানান, কৃষকের কাছ থেকে প্রতিদিন কয়েক মণ আলু কিনে ময়মনসিংহে ভ্যানে বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন তিনি। এক দিনে ছয় মণ আলু বিক্রি করে ৭০০ টাকা লাভ করেছেন। এর মধ্য থেকে ইজারা ও জায়গার ভাড়া বাবদ তাঁর ১৩০ টাকা খরচ হয়েছে বলে তিনি জানান।

মেছুয়া বাজারের যাদব লাহেড়ি রোডের ইজারাদার মো. সোহেল ইসলাম বলেন, যাঁরা ভ্যানে তাঁর সীমানায় সবজি বিক্রি করেন, তাঁদের কাছ থেকে ভ্যানপ্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সাধারণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে রাস্তায় বসে পণ্য বিক্রি করলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকা ইজারা নেওয়া হয়। বাজারে যাতে নির্বিঘ্নে পণ্যসামগ্রী বিক্রি করতে পারে, সে জন্য নিরাপত্তার পাশাপাশি আবর্জনাও পরিষ্কার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

দনবাস চান পুতিন—ন্যাটো তো নয়ই, পশ্চিমা সেনাও থাকবে না ইউক্রেনে

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

তথ্য যাচাইয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করবেন—ইউটিউব চ্যানেলে সিইসির বার্তা

ফরিদপুরে চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে সেবা বন্ধের ঘোষণা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত