Ajker Patrika

শীতে না কাঁপিয়েই বিদায় নিচ্ছে মাঘ

অর্চি হক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২: ৪৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

‘মাঘের শীতে বাঘ কাঁপে’—বহুল প্রচলিত এই প্রবাদ এবার খাটেনি। মাঘ তীব্র শীতের মাস হলেও উত্তরাঞ্চল ছাড়া দেশের বেশির ভাগ এলাকায় শীত তেমন অনুভূত হয়নি। রাজধানী ঢাকায় তো গরম ভাব কাটাতে ফ্যান-এসি চালিয়েছেন কেউ কেউ। এই ব্যতিক্রমী মাঘ মাস বিদায় নিচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, জেট উইন্ড বা ঊর্ধ্ব আকাশের হিমেল হাওয়া এবার নিচে নামতে না পারায় এবং আর্দ্রতা বেশি থাকায় এবার মাঘের শীত ‘হুল’ ফোটাতে পারেনি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেছেন, ২০০২ সালের পর এবারই শীতের তীব্রতা ছিল সবচেয়ে কম। মাঘেও শীতের দাপট নেই। এবার ছিল উষ্ণ শীতকাল। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, শীতকালের সঙ্গে জেট উইন্ড বা ঊর্ধ্ব আকাশের হিমেল হাওয়া জড়িত। জেট উইন্ড ভূপৃষ্ঠের ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার ফুট ওপরে থাকে। শীতে তা নিচে নেমে আসে।

এ বছর এই জেট উইন্ড নিচে নামতে পারেনি। পশ্চিমা লঘুচাপও এই অঞ্চলে আসতে পারেনি। পুরো অঞ্চলে আর্দ্রতা বেশি থাকায় তাপমাত্রা কমেনি।

বজলুর রশীদ বলেন, পশ্চিমা লঘুচাপ এলে বৃষ্টি হয়ে আর্দ্রতা কেটে যেত। সে ক্ষেত্রে হিমেল হাওয়া নিচের দিকে নামতে পারত। পুরো জানুয়ারিতে এক বা দুই মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এমন অবস্থা সর্বশেষ ২০০২ সালে ছিল।

জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে মাঘ শুরু হয়। শেষ হয় মধ্য ফেব্রুয়ারিতে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে স্বাভাবিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছরের জানুয়ারির গড় তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস; যা স্বাভাবিকের চেয়ে খানিকটা বেশি। গত বছরের জানুয়ারিতে গড় তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘আমাদের দেশের হিসাবে এবার মাঘ উষ্ণ মাস। কারণ, এ বছর মাঘে কোনো তীব্র বা অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হয়নি। সেই বিবেচনায় ১৯৪৮ সালের পর থেকে এ বছর মাঘ উষ্ণতম।’

টানা তিন দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪ দশমিক ১ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে থাকলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ এবং তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে তাকে অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ ও ২০২২ সালে মাঘে তিনটি করে, ২০২৩ সালে একটি এবং ২০২৪ সালে চারটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হয়েছিল। কিন্তু এ বছর এখনো একটিও তীব্র শৈত্যপ্রবাহ আসেনি। এতে মাঘে শীতের প্রকোপ অনুভূত হয়নি। এ ছাড়া দিনের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর কম হলে শীত বেড়ে যায়। কিন্তু এই মাঘে তেমন হয়েছে খুব কম।

আবহাওয়াবিদেরা জানান, মাঘে শীত কমে যাওয়া জলবায়ু পরিবর্তনের ইঙ্গিত। এর ফলে কৃষি, জনস্বাস্থ্যসহ নানা দিকে সংকটের শঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ নাইমা বাতেন বলেন, সারা পৃথিবীতেই তাপমাত্রা বাড়ছে। সে কারণে শীতের তীব্রতা কম অনুভূত হচ্ছে। তবে এ বছর কম শীত অনুভূত হয়েছে বলে আগামী বছর আরও কমবে, এটা বলা যাবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত