Ajker Patrika

জলবায়ু পরিবর্তন: শত প্রতিশ্রুতির পরও উজাড় হচ্ছে বন

আপডেট : ২৭ জুন ২০২৩, ১৮: ২২
জলবায়ু পরিবর্তন: শত প্রতিশ্রুতির পরও উজাড় হচ্ছে বন

সুইজারল্যান্ডের আয়তনের সমান গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অরণ্য হারিয়েছি আমরা গত বছর, উঠে এসেছে নতুন গবেষণায়। অর্থাৎ জলবায়ু সম্মেলন কপ ২৬-এ বিশ্ব নেতাদের বন উজাড় বন্ধে করা অঙ্গীকারের বাস্তবায়ন ঘটছে না।

২০২২ সালে প্রতি মিনিটে ১১টি ফুটবল মাঠের সমান অরণ্য উজাড় হয়েছে, আর এতে সবার থেকে এগিয়ে ছিল দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। একই সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ায় বন ধ্বংসের গতি অনেকটাই কমে আসা বলছে এর ব্যতিক্রমও ঘটানো সম্ভব। এসব তথ্য জানা যায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে।

২০২১ সালে কপ ২৬ জলবায়ুসংক্রান্ত মিটিংয়ে ১০০-এর বেশি বিশ্বনেতা গ্লাসগো ডিক্লারেশনে স্বাক্ষর করেন। সেখানে বন ধ্বংস বন্ধে একমত হন। এ জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয় ২০৩০ সাল পর্যন্ত। বৃক্ষ ধ্বংস বন্ধে এর আগের অর্থাৎ ২০১৪ সালের সমাঝোতাটা কাজে না আসায় নতুন এই সিদ্ধান্ত হয়।

তথ্য-উপাত্ত বলছে ২০২১-এর তুলনায় বন উজাড় বেড়েছে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে বন ধ্বংস বন্ধের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের উল্টো চিত্র।

গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচের নতুন এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গ্লাসগোতে করা নতুন অঙ্গীকার রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

ব্রাজিল, কঙ্গো ও ইন্দোনেশিয়ার রেইন ফরেস্ট বিপুল পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস শোষণ করে। এ ধরনের পুরোনো জঙ্গল সাফ করা বা পোড়া মানে সঞ্চিত কার্বনের বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়া, যা পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।

অরণ্যগুলো বহু মানুষের জীবনধারণ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়েছেন নতুন গাছ লাগিয়ে বৃক্ষ উজাড়ের ক্ষতি মোকাবিলা সম্ভব নয়। কারণ বহু বছরে এই জঙ্গলের সৃষ্টি হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের সংগ্রহ করা তথ্যে দেখা যায়, উষ্ণমণ্ডলীয় বনগুলো ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ আদিম অরণ্য হারিয়েছে।

‘প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি ২০৩০ সালের মধ্যে বন ধ্বংস থামিয়ে দেওয়ার সঠিক পথে আছি? সংক্ষিপ্ত উত্তর হলো ‘না’, বলেন গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচের পরিচালনাকারী ওয়ার্ল্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রড টেইলর।

২০২২ সালে আদিম গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অরণ্য ধ্বংসে সবার ওপরে ছিল ব্রাজিল, আগের বছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি।

ব্রাজিলের অরণ্যের অর্ধেকের বেশি আছে অ্যামাজোনাস স্টেটে। সেখানে গত তিন বছরে বন ধ্বংসের হার প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। মোটের ওপর চিত্রটা সুখকর না হলেও এমন দু-একটি উন্নতি আছে যেটা বলে দিচ্ছে বন ধ্বংসের লাগাম টেনে ধরাটা একেবারে অসম্ভব নয়। ইন্দোনেশিয়া গত বছরগুলোতে বন উজাড় কমানোয় সবার ওপরে। এটা সম্ভব হয়েছে দাবানল বন্ধে গুরুত্ব দেওয়ায় ও নতুন পাম বাগান করা বন্ধ করে দিয়ে। তাদের পথেই হাঁটছে প্রতিবেশী মালয়েশিয়া। 

এদিকে বলিভিয়া যারা গ্লাসগোর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি, সেখানে ২০২২ সালে বন ধ্বংস বেড়েছে আগের বছরের তুলনায় ৩৩ শতাংশের মতো। গবেষকদের মতে এর মূল কারণ কৃষি জমির সম্প্রসারণ।

তবে বন ধ্বংসের এই হার দ্রুতই কমানো না গেলে আমরা যে বিপদে পড়ব সন্দেহ নেই। যেমন ওয়ার্ল্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রড টেইলর বলেন, আপনি যখন বন হারাবেন, এটা পুনরুদ্ধার করা খুব কঠিন। অনেকটা পুনরুদ্ধার করা যায় না এমন সম্পদের মতো এটা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা–ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে আরেকটি প্রক্সি ওয়ারে জড়াতে চায়: ফরহাদ মজহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত