আসিফ করিম চৌধুরী
ঢাকা: আলী তাবরিজি, এক ব্রিটিশ তরুণ। ছোটবেলা থেকেই সমুদ্র আর সামুদ্রিক প্রাণের প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসা। মায়ের সঙ্গে যেতেন মেরিন পার্কে। দেখতেন ডলফিন আর তিমির খেলা। বড় হয়ে জানলেন সাগরে মানবসৃষ্ট দূষণের কথা। শুনলেন প্লাস্টিকে ছেয়ে যাচ্ছে সাগর। আর সেসব প্লাস্টিক ঢুকছে মাছসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণির পেটে।
ফলে আলী নিজেই প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করে দিলেন। সৈকতে গিয়ে কুড়ানো শুরু করলেন মানুষের ফেলে দেওয়া বোতল, ব্যাগসহ সব রকমের প্লাস্টিক। সাগর নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা দিতে থাকলেন। কিন্তু এভাবে কি সম্ভব?
একদিন খবরে দেখলেন, জাপান সরকার আবার তিমি শিকার শুরু করেছে। ইন্টারনেট ঘেঁটে জানলেন, জাপানের ‘তাইজি’ নামক জায়গায় নিয়মিত চলছে ডলফিন নিধন। এরপর আর বসে থাকতে পারলেন না আলী। সঙ্গী লুসিকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন তাইজির উদ্দেশ্যে। লক্ষ্য- প্লাস্টিকের পাশাপাশি এসব প্রাণি হত্যা সাগরের কতটুকু ক্ষতি করছে তার সঠিক চিত্র তুলে আনা।
বলা যায়, এটিই নেটফ্লিক্সের তুমুল আলোচিত-সমালোচিত প্রামাণ্যচিত্র ‘সিসপাইরেসি’র (২০২১) প্রেক্ষাপট। এ বছরের ২৪ মার্চ মুক্তি পেয়েছে প্রামাণ্যচিত্রটি। মুক্তির পর প্রায় ৫০টি দেশে নেটফ্লিক্স টপচার্টে জায়গা করে নিয়েছে ছবিটি।
কেউ কেউ ছবিটি দেখে আর মাছ খাবেন না বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, এটা স্রেফ ভেগান বা নিরামিষাশীদের প্রোপাগান্ডা।
ছবির পরিচালক তাবরিজি শুধু প্লাস্টিক দূষণে থেমে থাকেননি। শ্বাসরুদ্ধকর গল্পের সূত্র ধরে তুলে এনেছেন সাগর ধ্বংসের নেপথ্যে থাকা প্রধান সব অনুঘটককে। আবিষ্কার করেছেন, বাণিজ্যিকভাবে মাছ শিকারই মূলত দায়ী সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য হ্রাসের পেছনে।
বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের মৎস্যশিল্প অত্যাধুনিক সব জাহাজ দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত হারে ধরছে টুনা, স্যামনসহ বিভিন্ন উচ্চচাহিদার মাছ। আর এসব ধরতে গিয়ে বাইক্যাচ হিসেবে জালে আটকে বেঘোরে মারা পড়ছে ডলফিন, হাঙ্গর, তিমির মতো জীব।
মাত্রাতিরিক্ত মাছ শিকার আর অনাকাঙ্ক্ষিত বাইক্যাচের ফলে এসব প্রাণির সংখ্যা দ্রুত কমছে। হাঁটছে বিলুপ্তির পথে। স্বাভাবিকভাবেই সাগরের বাস্তুসংস্থানে, খাদ্য শৃঙ্খলে ঘটছে ঋণাত্মক পরিবর্তন। সামুদ্রিক জীবের কারণে বেঁচে থাকা প্রবালও কমছে বিপজ্জনকহারে। পিলে চমকানো পরিসংখ্যান দিয়ে ক্রমাগত এসবের প্রভাব বোঝানোর চেষ্টা করেছেন পরিচালক আলী তাবরিজি।
বাণিজ্যিক মৎস্যশিল্পের বহুমুখী প্রভাব দেখিয়েছেন পরিচালক। শুধু মাছের বিলুপ্তি ঘটছে তা নয়, বাড়ছে সাগরে প্লাস্টিকের পরিমাণ। সাগরে পরিত্যক্ত মাছ ধরার জালের পরিমাণ অন্য যে কোনো প্লাস্টিক পণ্যের চেয়ে বেশি। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সমুদ্রতীরবর্তী জনপদ। যারা মূলত সামুদ্রিক মাছের ওপরেই বেঁচে থাকে।
দেখুন ‘সিসপাইরেসি’ ডকুমেন্টারির ট্রেলার:
‘সিসপাইরেসি’ তথ্যচিত্রে পরিচালক সমস্যা দেখিয়েই ক্ষান্ত হননি। সমাধানের বিদ্যমান পদ্ধতিগুলোকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। সাসটেইনেবল ফিশারি, ডলফিন সেফ লেভেল, ফিশ ফার্মিংয়ের মতো ধারণাগুলোর ত্রুটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন।
তাহলে সাগর বাঁচানোর উপায় কী? সমাধানের কয়েকটি উপায় বললেও পরিচালক জোর দিয়েছেন মাছ খাওয়া বাদ দেওয়ার ওপর। কিন্তু প্রশ্ন আসে, এ দাবি কতটা যৌক্তিক? কতটা বাস্তব? যারা মাছের উপর নির্ভরশীল অথবা যাদের খাদ্যাভাসে মাছ অন্যতম উপাদান, তাদের ক্ষেত্রে এমন দাবি অবান্তর।
এ কারণে যেমন বিতর্কিত হয়েছেন, তেমনি অনেক পরিসংখ্যানগত তথ্যের ভুলভ্রান্তি আছে বলে দাবি করছেন অনেকে। তবে এসব তর্ক-বিতর্ক একপাশে সরিয়ে রেখে ‘সিসপাইরেসি’ তথ্যচিত্রটি দেখে ফেলাই উত্তম কাজ হবে।
সূত্র: সিসপাইরেসি, দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি, ভক্স।
ঢাকা: আলী তাবরিজি, এক ব্রিটিশ তরুণ। ছোটবেলা থেকেই সমুদ্র আর সামুদ্রিক প্রাণের প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসা। মায়ের সঙ্গে যেতেন মেরিন পার্কে। দেখতেন ডলফিন আর তিমির খেলা। বড় হয়ে জানলেন সাগরে মানবসৃষ্ট দূষণের কথা। শুনলেন প্লাস্টিকে ছেয়ে যাচ্ছে সাগর। আর সেসব প্লাস্টিক ঢুকছে মাছসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণির পেটে।
ফলে আলী নিজেই প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করে দিলেন। সৈকতে গিয়ে কুড়ানো শুরু করলেন মানুষের ফেলে দেওয়া বোতল, ব্যাগসহ সব রকমের প্লাস্টিক। সাগর নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা দিতে থাকলেন। কিন্তু এভাবে কি সম্ভব?
একদিন খবরে দেখলেন, জাপান সরকার আবার তিমি শিকার শুরু করেছে। ইন্টারনেট ঘেঁটে জানলেন, জাপানের ‘তাইজি’ নামক জায়গায় নিয়মিত চলছে ডলফিন নিধন। এরপর আর বসে থাকতে পারলেন না আলী। সঙ্গী লুসিকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন তাইজির উদ্দেশ্যে। লক্ষ্য- প্লাস্টিকের পাশাপাশি এসব প্রাণি হত্যা সাগরের কতটুকু ক্ষতি করছে তার সঠিক চিত্র তুলে আনা।
বলা যায়, এটিই নেটফ্লিক্সের তুমুল আলোচিত-সমালোচিত প্রামাণ্যচিত্র ‘সিসপাইরেসি’র (২০২১) প্রেক্ষাপট। এ বছরের ২৪ মার্চ মুক্তি পেয়েছে প্রামাণ্যচিত্রটি। মুক্তির পর প্রায় ৫০টি দেশে নেটফ্লিক্স টপচার্টে জায়গা করে নিয়েছে ছবিটি।
কেউ কেউ ছবিটি দেখে আর মাছ খাবেন না বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, এটা স্রেফ ভেগান বা নিরামিষাশীদের প্রোপাগান্ডা।
ছবির পরিচালক তাবরিজি শুধু প্লাস্টিক দূষণে থেমে থাকেননি। শ্বাসরুদ্ধকর গল্পের সূত্র ধরে তুলে এনেছেন সাগর ধ্বংসের নেপথ্যে থাকা প্রধান সব অনুঘটককে। আবিষ্কার করেছেন, বাণিজ্যিকভাবে মাছ শিকারই মূলত দায়ী সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য হ্রাসের পেছনে।
বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের মৎস্যশিল্প অত্যাধুনিক সব জাহাজ দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত হারে ধরছে টুনা, স্যামনসহ বিভিন্ন উচ্চচাহিদার মাছ। আর এসব ধরতে গিয়ে বাইক্যাচ হিসেবে জালে আটকে বেঘোরে মারা পড়ছে ডলফিন, হাঙ্গর, তিমির মতো জীব।
মাত্রাতিরিক্ত মাছ শিকার আর অনাকাঙ্ক্ষিত বাইক্যাচের ফলে এসব প্রাণির সংখ্যা দ্রুত কমছে। হাঁটছে বিলুপ্তির পথে। স্বাভাবিকভাবেই সাগরের বাস্তুসংস্থানে, খাদ্য শৃঙ্খলে ঘটছে ঋণাত্মক পরিবর্তন। সামুদ্রিক জীবের কারণে বেঁচে থাকা প্রবালও কমছে বিপজ্জনকহারে। পিলে চমকানো পরিসংখ্যান দিয়ে ক্রমাগত এসবের প্রভাব বোঝানোর চেষ্টা করেছেন পরিচালক আলী তাবরিজি।
বাণিজ্যিক মৎস্যশিল্পের বহুমুখী প্রভাব দেখিয়েছেন পরিচালক। শুধু মাছের বিলুপ্তি ঘটছে তা নয়, বাড়ছে সাগরে প্লাস্টিকের পরিমাণ। সাগরে পরিত্যক্ত মাছ ধরার জালের পরিমাণ অন্য যে কোনো প্লাস্টিক পণ্যের চেয়ে বেশি। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সমুদ্রতীরবর্তী জনপদ। যারা মূলত সামুদ্রিক মাছের ওপরেই বেঁচে থাকে।
দেখুন ‘সিসপাইরেসি’ ডকুমেন্টারির ট্রেলার:
‘সিসপাইরেসি’ তথ্যচিত্রে পরিচালক সমস্যা দেখিয়েই ক্ষান্ত হননি। সমাধানের বিদ্যমান পদ্ধতিগুলোকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। সাসটেইনেবল ফিশারি, ডলফিন সেফ লেভেল, ফিশ ফার্মিংয়ের মতো ধারণাগুলোর ত্রুটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন।
তাহলে সাগর বাঁচানোর উপায় কী? সমাধানের কয়েকটি উপায় বললেও পরিচালক জোর দিয়েছেন মাছ খাওয়া বাদ দেওয়ার ওপর। কিন্তু প্রশ্ন আসে, এ দাবি কতটা যৌক্তিক? কতটা বাস্তব? যারা মাছের উপর নির্ভরশীল অথবা যাদের খাদ্যাভাসে মাছ অন্যতম উপাদান, তাদের ক্ষেত্রে এমন দাবি অবান্তর।
এ কারণে যেমন বিতর্কিত হয়েছেন, তেমনি অনেক পরিসংখ্যানগত তথ্যের ভুলভ্রান্তি আছে বলে দাবি করছেন অনেকে। তবে এসব তর্ক-বিতর্ক একপাশে সরিয়ে রেখে ‘সিসপাইরেসি’ তথ্যচিত্রটি দেখে ফেলাই উত্তম কাজ হবে।
সূত্র: সিসপাইরেসি, দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি, ভক্স।
২০২০ সালে ‘তকদীর’ ওয়েব সিরিজ দিয়ে আলোচনায় আসেন নির্মাতা সৈয়দ আহমেদ শাওকী। এরপর ওয়েব সিরিজ ‘কারাগার’ নির্মাতা হিসেবে তাঁকে আরও পরিচিতি এনে দেয়। প্রায় তিন বছর পর মুক্তি পাচ্ছে শাওকী পরিচালিত নতুন ওয়েব সিরিজ ‘গুলমোহর’। এ সিরিজের মাধ্যমে প্রথমবার বাংলাদেশের কোনো কনটেন্টে দেখা যাবে পশ্চিমবঙ্গের অভিনেতা
১০ ঘণ্টা আগেঅনেকের কাছে শৈশবের স্মৃতি মানেই বাবার জামা ধরে সাইকেলের পেছনে বসে থাকা। সেই সাইকেলটা যেন শুধু একটা বাহন নয়, জীবনের প্রতীক। শৈশবের সেই স্মৃতি আজও অনেককে স্মৃতিকাতর করে। সেই স্মৃতিকাতরতা নিয়ে গায়ক নাহিদ হাসান তাঁর বাবার প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ ঘটালেন গানে গানে। ‘বাবার সাইকেল’ শিরোনামে নতুন গান বাঁধলেন
১০ ঘণ্টা আগেআগামী ১২ থেকে ২০ জুন বুলগেরিয়ার ভার্নায় অনুষ্ঠিত হবে ২১তম ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভ্যাল অব রেডক্রস অ্যান্ড হেলথ ফিল্মস। এ উৎসবে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে অফিশিয়াল সিলেকশন পেয়েছে বাংলাদেশের ‘খবরের কাগজ’। আসাদুজ্জামান সবুজের গল্পে স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমাটি পরিচালনা ও সম্পাদনা করেছেন সোহেল আরিয়ান।
১০ ঘণ্টা আগেমেট গালা মানেই ফ্যাশন প্যারেড। নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্টের কস্টিউম ইনস্টিটিউটে প্রতি বছরের মে মাসের প্রথম সোমবার অনুষ্ঠিত হয় এ ফ্যাশন শো। ফ্যাশন দুনিয়ার সবচেয়ে বড় এই আসরে উপস্থিত হন জনপ্রিয় তারকারা। এতে অংশ নেওয়ার জন্য তারকাদের থাকে দীর্ঘ প্রস্তুতি। সবাই চান ভিন্নধর্মী পোশাক পরে তাক
১০ ঘণ্টা আগে