Ajker Patrika

‘আপাদমস্তক ভদ্রলোক যাকে বলা যায়’

মীর রাকিব হাসান
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২১, ১৩: ৫৭
‘আপাদমস্তক ভদ্রলোক যাকে বলা যায়’

বুলবুল আহমেদের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা ছিল বেশ ঘনিষ্ঠ। সেই সম্পর্কের শুরু হয় ‘দীপু নাম্বার টু’ সিনেমার কাজ করতে গিয়ে। ১৯৯৫ সালে শুটিং করেছিলাম ‘দিপু নাম্বার টু’ ছবির। মুক্তি পেয়েছিল পরের বছর। আমার ছবির মূল চরিত্র তো শিশুরা। ভাবছিলাম তিনি অভিনয় করতে রাজি হবেন কি না। উনি কিন্তু রাজি হয়ে গেলেন। সেই থেকে তাঁর সঙ্গে আমার কাজের অভিজ্ঞতা শুরু। যতটা দেখেছি, তাঁর অভিনয়ের আকাঙ্ক্ষা ছিল প্রবল। চরিত্রের জোর থাকলে তিনি সংক্ষিপ্ত চরিত্রেও অভিনয় করতে রাজি হতেন সানন্দে। উনি আসলে অভিনয় করতে চাইতেন। ছোট পর্দা–বড় পর্দা ওনার কাছে ম্যাটার করত না।

খুব মেপে অভিনয় করতেন তিনি। মানুষ হিসেবেও অসাধারণ ছিলেন। আমাদের প্রথম কাজ ‘দীপু নাম্বার টু’ ছবির প্রথম লটের শুটিং হয় ঢাকায়। কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই পুরো লটের শুটিং শেষ হয়। কিন্তু চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম ঢাকার বাইরের শুটিংয়ের সময়। আমরা শুটিংয়ে যাব রাঙামাটি আর বান্দরবানে। বুলবুল আহমেদ অসুস্থ হয়ে পড়লেন। চিন্তায় পড়ে গেলাম, উনি যেতে পারবেন কি না। ওনাকে জানালাম শুটিংয়ের কথা। তিনি সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে গেলেন। বললেন, ‘আমার জন্য কাজ তো বন্ধ করা যাবে না। এই যে বাচ্চারা আছে, ওদের সঙ্গে গল্প করতে করতে আমি সুস্থ হয়ে যাব।’

মোরশেদুল ইসলামআমি তো বাচ্চাদের নিয়েই বেশি কাজ করি। বাচ্চাদের নিয়ে শুটিং করতে গেলে যেটা হয়, ওদের চোখে চোখে রাখতে হয় অভিভাবকের মতো। ‘দীপু নাম্বার টু’ ছবির শুটিংয়ে বুলবুল আহমেদই ছিলেন বাচ্চাদের অভিভাবক। সবাইকে চোখে রাখতেন, সবার সঙ্গে এমনভাবে গল্প করতেন, যেন কত দিনের বন্ধুত্ব।

‘দীপু নাম্বার টু’ ছবির পরে তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। আমাদের বোঝাপড়াটাও এত সুন্দর হয়ে ওঠে যে পরবর্তী সময়ে তাঁকে নিয়ে একটি ধারাবাহিক নাটক করি। নাম ‘ভুবনের বাবা’। শিশুতোষ একটি ধারাবাহিক। এটা করেছিলাম একুশে টেলিভিশন যখন প্রথম আসে তখন। সেখানেও তাঁর অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করেছে। এরপর টেলিভিশনে আমার আরও কিছু নাটকে তিনি অভিনয় করেছিলেন। তবে তাঁকে নিয়ে আর নতুন কোনো সিনেমা করা হয়ে ওঠেনি।

‘দীপু নাম্বার টু’ ছবিতে দীপু চরিত্রের অরুণ সাহার সঙ্গে বুলবুল আহমেদআমার দেখা বুলবুল আহমেদ চমৎকার একজন মানুষ। সুন্দর মার্জিতভাবে কথা বলতেন। আপাদমস্তক ভদ্রলোক যাঁকে বলা যায়। সিনেমায় যে লাউড অ্যাক্টিংয়ের একটা ধারা ছিল, উনি সেই পথে হাঁটতেন না। এই প্রজন্মের নির্মাতা ও অভিনেতাদের তাঁর কাজগুলো দেখা উচিত। তিনি যেভাবে কথা বলতেন, সংলাপ বলতেন, যেভাবে অভিনয় করতেন সেগুলো শেখা উচিত।

অনুলিখন: মীর রাকিব হাসান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত