Ajker Patrika

জাবিতে নির্বাচন ঘিরে এক কাতারে আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী শিক্ষক নেতারা 

জাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ৫১
জাবিতে নির্বাচন ঘিরে এক কাতারে আওয়ামী ও বিএনপিপন্থী শিক্ষক নেতারা 

জাবিতে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শিক্ষক ঐক্য ফোরাম’ নামে শিক্ষকদের নতুন প্যানেল আত্মপ্রকাশ করেছে। যেখানে উপাচার্য বিরোধী আওয়ামীপন্থী ও বিএনপিপন্থী শিক্ষক নেতারা এক কাতারে দাঁড়িয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ-২০২২ এর নির্বাচন শুরু হয়। দুপুর ২টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। 

নতুন প্যানেলে আওয়ামীপন্থী উপাচার্য বিরোধী শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ, বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নেতৃবৃন্দ রয়েছেন। এই প্যানেল থেকে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন রসায়ন বিভাগের বিএনপিপন্থী অধ্যাপক মাহবুব কবির এবং সাধারণ সম্পাদক পদে আওয়ামীপন্থী অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আমজাদ হোসেন। তবে বামপন্থী শিক্ষকেরা তাঁদের প্রার্থী না দিলেও এই প্যানেলকে সমর্থন দিয়েছেন। 

মূলত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই প্যানেল গঠিত হলেও এর নেপথ্যে কাজ করেছে বেশ কিছু ইস্যু। বিশেষত, ‘অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে’ উপাচার্য ফারজানা ইসলামের ওপর দুর্নীতির অভিযোগ এনে উপাচার্য বিরোধী শিক্ষকেরা আন্দোলন করেও উপাচার্যকে কোণঠাসা করতে পারেননি। বর্তমানে সেই অভিযোগের তদন্তের কোনো অগ্রগতি নেই। 

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশাসনিক পর্ষদ সিনেট, ডিন, সিন্ডিকেট এর নির্বাচন হয় না দীর্ঘদিন। তাই শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে যেকোনো মূল্যে জিততে চায় উপাচার্য বিরোধী প্যানেল। এভাবেই তারা অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে বোঝাতে চায় শিক্ষকেরা উপাচার্য হিসেবে তাঁকে দেখতে চাচ্ছেন না। 

তাই বিএনপিপন্থীদের জোটে আনতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকেরা সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়ার মানসিকতা দেখিয়েছেন। তারই অংশ হিসেবে শিক্ষক সমিতির ১৫টি পদের মধ্যে সভাপতি ও সহসভাপতিসহ সাতজন বিএনপি সমর্থিত এবং আট প্রার্থী আওয়ামী লীগের নিয়ে এই প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। 

এদিকে উপাচার্যপন্থী বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম (এনটিএফ) খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিতে না দেওয়ার প্রতিবাদে নির্বাচনে কোনো প্রার্থী দেয়নি। তবে এটিকে উপাচার্য একটি কৌশল হিসেবে দেখছে উপাচার্য বিরোধীরা। অন্যদিকে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সভাপতি পদে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবু দায়েন ও সম্পাদক পদে অধ্যাপক এ কে এম মহিউদ্দিন দাঁড়িয়েছেন। 

উপাচার্য বিরোধী প্যানেলে বিএনপি থেকে সহসভাপতি পদপ্রার্থী অধ্যাপক আবেদা সুলতানা বলেন, ‘প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত ও শিক্ষক স্বার্থরক্ষার জন্য শিক্ষক ঐক্য ফোরামে আওয়ামী-বিএনপি এক জোট হয়েছি।’ 

এ বিষয়ে ‘শিক্ষক ঐক্য ফোরাম’ থেকে কোষাধ্যক্ষ প্রার্থী আওয়ামীপন্থী অধ্যাপক শফি মোহাম্মদ তারেক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশাসনিক কাজকে স্বচ্ছ করার স্বার্থে দল-মত নির্বিশেষে শিক্ষকেরা এক জোট হয়েছি।’ 

অন্যদিকে, ‘শিক্ষকেরা আপনাদের ভোট কেন দেবেন? এবং নির্বাচিত হলে শিক্ষকদের জন্য কী কী কাজ করবেন এমন প্রশ্ন করা হলে ভিসিপন্থী ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদর’ থেকে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী অধ্যাপক লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ বলেন, ‘আমি প্রার্থী, আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। আমার দলের নীতিনির্ধারকেরা এই বিষয়ে কথা বলবেন।’ 

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘এখন তো শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে ছড়ানো হচ্ছে, আমি চলে যাচ্ছি। নৌকা ডুবে যাবে। তাহলে কেন তারা ডোবা নৌকায় ভোট দেবে? আর প্রশ্ন হলো, আমি চলে গেলেই কি নৌকা ডুবে যাবে? নৌকা যাতে না ডোবে সে জন্যই ভালো একটা শিক্ষক সমিতি উপহার দিয়ে যাচ্ছি।’ 

উপাচার্য বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ থেকে এত সুন্দর একটা প্যানেল আমরা মনোনয়ন দিয়েছি। কি মেধা একেকজনের! তাঁদের প্রোফাইল দেখলেই বোঝা যায়। প্রত্যেকেই ক্লিন ইমেজের। আমরা কি তাদেরকে দিয়ে খারাপ কিছু উপহার দিয়েছি? ভালো একটা শিক্ষক সমিতি উপহার দিতে চাই। যাতে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।’ 

ফারজানা ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা চাই প্রত্যেকে তার জায়গা থেকে কাজ করুক। তবে মাঝে মাঝেই বিশ্ববিদ্যালয় থামিয়ে দেওয়া, মুখ থুবড়ে ফেলা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি হতে পারে না। সবাইকে সাথে থেকে গঠনমূলক কাজ করতে হবে। আমাদের অনেক বিরোধী শিক্ষক রয়েছেন। তাদেরকেও বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’ 

এদিকে গত ২৬ ডিসেম্বর জাবি কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়ন নির্বাচনে ভিসিপন্থীদের ভরাডুবি ও বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নতুন কমিটিতে ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করায় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অনেকে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

মা-মেয়ের ত্রিভুজ প্রেম, বিয়ে ও একটি খুন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

পাকিস্তানের পরমাণু প্রকল্প ধ্বংসে ভারত-ইসরায়েলের যৌথ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় যেভাবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত