Ajker Patrika

বাদীর সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কে এএসআই প্রত্যাহারের পর শ খানেক গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
বাদীর সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কে এএসআই প্রত্যাহারের পর শ খানেক গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে এক মামলার বাদীর সঙ্গে ‘অন্তরঙ্গ’ অবস্থায় গ্রামবাসীর ধরা পড়ার পর পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু এরপরই শ খানেক গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় বাদী হয়েছে পুলিশও। 

জানা গেছে, লাঞ্ছিত করা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে অর্ধশতাধিক গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। সেই মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এরপর বাদী হয়ে মামলা করেছেন সেই প্রবাসীর স্ত্রী, যার সঙ্গে সেই এএসআইয়ের বিশেষ সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে। ওই নারী সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০ / ৩৫ জনকে আসামি করেছেন। তিনি উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের এক দুবাই প্রবাসীর স্ত্রী। 

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওই নারীর মামলা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আবদুল্লাহিল জামান। 
 
প্রবাসীর স্ত্রীর এজাহারে জানা যায়, তাঁর স্বামী বিদেশে থাকেন। জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে গেলে বাধা দেয় প্রতিপক্ষ। এ ঘটনায় গত ২৪ অক্টোবর কঞ্চিবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ দেন তিনি। বিষয়টি মীমাংসা করেন এএসআই তোফাজ্জল হোসেন। ২৯ অক্টোবর প্রতিপক্ষ তাঁর বাড়ির গাছ কাটার চেষ্টা করলে তিনি এএসআই তোফাজ্জলকে ফোন করে বিষয়টি জানান এবং তাঁর বাড়িতে আসতে বলেন। 

পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে এএসআই তোফাজ্জল হোসেন বাদীর বাড়িতে যান। কথা শেষে বাড়ি থেকে বের হন। এ সময় প্রতিপক্ষরা দলবদ্ধ হয়ে এএসআইকে অপবাদ দিতে অন্যায়ভাবে মারপিট করেন। পরে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়। এতে তিনি বাধা দিলে তাঁকেও মারপিটসহ পরনের কাপড় টানা হিঁচড়া করে শ্লীলতাহানি করে। গলার স্বর্ণের চেইন খুলে নেয় প্রতিপক্ষরা। 

তবে গ্রামবাসীর অভিযোগ, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ছড়ারপাতা গ্রামের এক প্রবাসীর বাড়িতে যান তোফাজ্জল। কিছু সময় পর ওই প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে গোয়ালঘরে ‘অন্তরঙ্গ’ অবস্থায় তাঁকে দেখে ফেলেন এক প্রতিবেশী। খবর পেয়ে তোফাজ্জলকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে পুলিশে খবর দেয় গ্রামবাসী। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী বলেন, কিছুদিন আগে ওই নারীর ভাশুরের সঙ্গে তাঁর স্বামীর জমি নিয়ে বিরোধ হয়। স্বামী প্রবাসে থাকায় এই ঘটনায় ভাশুরের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই নারী। সেই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান এএসআই তোফাজ্জল। তদন্তের খাতিরে ওই গৃহবধূর বাড়িতে আসা-যাওয়া ছিল তাঁর। সেই থেকে তাঁদের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। 

পুলিশের করা মামলার বাদী কঞ্চিবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান বলেন, গুজব ছড়িয়ে পুলিশ সদস্যকে আটকের পর গাছে বেঁধে নির্যাতন, অর্থ-সরঞ্জাম লুট, বাকি সদস্যদের ওপর হামলার প্রস্তুতিসহ সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

পুলিশের করা মামলায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের আবদুল খালেক, আমজাদ আলী, সুমন মিয়া, বকুল মিয়া, মুকুল মিয়া, জহুরুল ইসলাম, শাহজাহান আলী, আবদুর রাজ্জাক, হামিদুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, নাজমুল হক ও রাজু মিয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত