Ajker Patrika

কুমারখালীতে আ. লীগ নেতার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা

প্রতিনিধি
কুমারখালীতে আ. লীগ নেতার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা

কুমারখালী (কুষ্টিয়া): কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে এক আওয়ামী লীগ নেতার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২২ মে) রাতে উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পিতম্বরবশী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও ওই গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে শিপন (৩৫)। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী ছিলেন।

নিহতের স্বজনরা দাবি করেন এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে তাকে। এদিকে খবর পেয়ে কুমারখালী থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিপনের মরদেহ উদ্ধার করেন এবং রোববার (২৩ মে) সকালে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠান।

নিহতের বাবা আলতাফ হোসেন জানায়, আধিপত্য বিস্তারে পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমনের নেতৃত্বে মৃত আকবরের ছেলে কবির, কালাইয়ের ছেলে মিজান, বাবলু মাস্টার, ময়েনসহ অনেকে শনিবার রাত আনুমানিক ১১টায় শিপনকে গোদের বাজার এলাকা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে কবিরের বাড়ির সামনে রাস্তায় পাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকের ওপর কোপ মারে। এতেই শিপন মারা যায়।

আলতাফ হোসেন আরও বলেন, রাতেই মোবাইলে খবর পাই শিপনকে কুপিয়ে কবিরের বাসার সামনে ফেলে রাখা হয়েছে। পরে শিপনকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালের দিকে রওনা দেই। পথেই শিপনের দেহ নিথর হলে বাড়ি ফিরে আসি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কবিরে স্ত্রী রহিমা খাতুন জানায়, দীর্ঘদিন ধরে মসজিদের জমি নিয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে শনিবার রাত ১২টার দিকে জাফর গ্রুপের এনামুল, এরাশাদসহ অনেকে মানুষ ছুরি (চাকু) ইট, লাঠি নিয়ে আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় চাকুর আঘাতে শিপনের মৃত্যু হয়।

এলাকাবাসী জানায়, আধিপত্য বিস্তারে দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর গ্রুপের সঙ্গে পান্টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমন গ্রুপের এলাকায় বিরোধ চলে আসছে। বিরোধের জেরেই শনিবার রাতে জাফর গ্রুপের শিপন খুন হন।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর বলেন, প্রতিপক্ষের নেতা শনিবার বিকেলে গোদের বাজারে তার নেতা কর্মীদের নিয়ে মিটিং করেন। আর রাতে আমার সমর্থিত শিপনকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এ বিষয়ে জানতে পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

পরে সুমনের বড় ভাই মামুন মোবাইল ফোনে বলেন, আমার ছোট ভাই একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেয়। সে কারণে যে কোনো ঘটনায় সুমনের দোষ হয়। তবে এ ঘটনায় সুমনের কোনো হাত নেই। তিনি আরও বলেন, যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক ন্যক্কারজনক ঘটনা। আমি দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র এলাকায় জাফর ও সুমন গ্রুপের বিরোধ চলছিল। বিরোধের জেরে শনিবার রাতেও দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শিপনের মৃত্যু হয়। তিনি আরও বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত